১৮৭৩ সালের ১৬ ই আগস্ট বেঙ্গল থিয়েটার প্রতিষ্ঠিত হয়। বেঙ্গল থিয়েটারের অভিনেত্রীদের মধ্যে সব থেকে প্রতিভাবান অভিনেত্রী ছিলেন গোলাপসুন্দরী। তার সৌভাগ্য হয়েছিল অর্ধেন্দু শেখর মুস্তাফির কাছ থেকে অভিনয় শেখার। ১৯৭৫ সালে উপেন্দ্র দাসের শরত সরোজিনী নাটকে সুকুমারী চরিত্রে তিনি অভিনয় করেন। তাঁর সুকুমারীর চরিত্রে অভিনয় সকলকে প্রভাবিত করে। তার এই চরিত্রে অভিনয় এতটাই খ্যাতি লাভ করে যে পরবর্তী কালে তাঁকে সকলে সুকুমারী নামেই চিনতেন। উপেন্দ্র দাস সেই সময়ে একটি খুবই সাহসী সিদ্ধান্ত নিলেন। তিনি তরুণ অভিনেতা গোষ্ঠবিহারী দত্তের সঙ্গে সুকুমারীর বিবাহ দেন। কিন্তু তখনকার রক্ষণশীল সমাজ এই বিবাহ কে মেনে নেন না। এই না মেনে নেওয়ার প্রভাবের রেশ ছিল সমাজে বেশ বহু দিন। গোলাপসুন্দরীর সব থেকে বড়ো সহায়ক উপেন্দ্র দাস দেশ ছাড়লেন। সুকুমারীর স্বামীও তাকে রেখে জাহাজে খালাসীর কাজে নিযুক্ত হন। সমাজের চাপে তার বিবাহিত জীবন ও সুখের হল না। সুকুমারীর এক কন্যা ছাড়া অবলম্বন বলতে তখন শুধুমাত্র থিয়েটার। এই কন্যা ও থিয়েটার কে নিয়ে তিনি আঁকড়ে থাকলেন। নিজের জীবন নিয়ে লিখলেন একটি নাটক। নাম দিলেন অপূর্বসতী। ১৮৮৩ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করলেন হিন্দু ফিমেল থিয়েটার। সেখানেই প্রযোজনা করলেন এই নাটকটি। দেখিয়ে দিলেন অন্তঃপুরের মহিলা নয়। একজন নারী হয়ে পুরুষতান্ত্রিক সমাজকে দেখিয়ে দিলেন নারীশক্তির জোর।