সরকারি অফিস বা কার্যালয়ে যাতায়াতে সুবিধা দিতে বিশেষ ভাবে সক্ষম মানুষদের জন্য রাজ্য সরকারের নতুন উদ্যোগ 'সুগম্য অভিযান'। সাধারণ মানুষের সাথে তাল মিলিয়ে বিশেষ ভাবে সক্ষমদের অন্তত সরকারি ভবনে প্রবেশ পথে যেন কোন অসুবিধা না হয় এই জন্যেই রাজ্য পূর্ত দপ্তর সুগম্য অভিযান প্রকল্পের উদ্যোগ নেন। এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে রাজ্যের নানা সরকারি অফিসের খোলনলচে পাল্টে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যার বদলে বসতে চলেছে যাতায়াতের সুবিধা দেবে এমন পথ ব্যবস্থা।
সরকারি অফিসে যাতায়াতের জন্য সংযোজন করা হবে রেম্প প্লেট, নতুন লিফট, গাড়ি পার্কিং এবং ওয়াশ রুম ব্যবস্থা। এর প্ৰত্যেকটি তৈরী করা হবে বিশেষ ভাবে সক্ষমদের ব্যবহারের উপযোগী করে। দুর্যোগপূর্ণ মুহূর্ত যেমন অগ্নি কান্ড, ভূমিকম্প প্রভৃতির সময় যেন বিশেষ ভাবে সক্ষমদের বের হওয়ার সময় কোন অসুবিধা না হয় তার জন্য কার্য্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে চিহ্নিত থাকবে বের হওয়ার পথের চিহ্ন। সাথে এলার্ম সিস্টেম-এর ব্যবস্থা থাকবে। রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগের নাম সুগম্য অভিযান।নতুন নির্মিত বা নির্মিয়মান সরকারি অফিসগুলোর প্রত্যেকটিতেই থাকবে বিশেষ ভাবে সক্ষমদের জন্য প্রয়োজনীয় চলাচল ব্যবস্থা।
সুগম্য অভিযানের আওতায় রাজ্যের চলতি সরকারি অফিসগুলোকে ক্রমে বিশেষ সক্ষমদের যাতায়াতের উপযোগী করে নেওয়া হবে। দক্ষিণ কলকাতার মুদিয়ালিতে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের অফিস, বিধাননগর মহকুমাশাসকের সদর কার্য্যালয়, এসপি মুখার্জি রোডের টালিগঞ্জ পুলিশ হাউসিং, সুদক্ষিনা পুলিশ হাউসিং এস্টেট, রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অফ প্রিন্টিং এবং পুলিশ ওয়ারলেস হেড কোয়ার্টার্স ভবনগুলি পাইলট প্রজেক্টের অংশ হিসেবে এই সরকারি ভবন আবাসনের উন্নয়নের জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে পূর্ত দপ্তর থেকে। আগামীতে রাজ্যের বিভিন্ন বিদ্যালয়, থানা, বাজার প্রভৃতি স্থানেও বিশেষ সক্ষমদের যাতায়াতের উপযোগী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানা যায়। বিশেষ সক্ষমদের সাধারণ মানুষের পাশে মূল স্রোতে ফিরিয়ে নিয়ে আসতে ২০১৬ থেকেই চলছে সুগম্য অভিযানের কার্যক্রম বলে জানিয়েছেন পূর্ত দপ্তরের একজন কর্মকর্তা।
সরকারি অফিসের ভিতরে খোলনলচে যে শুধু মাত্র পরিবর্তন ও সংযোজন হতে চলেছে তা নয়, বরং অফিসের বাইরে থেকেও যেন বিশেষ ভাবে সক্ষমেরা সহজে পরিবহন থেকে নামতে পারে, গাড়ি করে এলে সেই গাড়িটি যেন সহজে সরকারি অফিসে প্রবেশ করতে পারে সেই জন্য তৈরী হবে ফুটপাথ। যাতায়াতের প্রয়োজনীয় তথ্য পেতে সরকারি অফিসেই তাদের জন্য ব্যবস্থা করা হবে রোজকার প্রয়োজনীয় তথ্য পাবার উপায়। সরকারি ভবনগুলোতে বসানো হবে ট্রেন টাইম টেবিল, হাসপাতাল-নার্সিং হোমের ঠিকানা ও ফোন নাম্বার। ২০১৯ এর জুলাই মাসের ভিতর ১০টি বড় শহরের ৫০ শতাংশ সরকারি অফিসগুলোকে বিশেষ ভাবে সক্ষমদের উপযোগীকরে তোলা হবে বলে পরিকল্পনা রয়েছে কেন্দ্রের। রাজ্যের এই ভার নিয়েছে রাজ্য পূর্ত দপ্তর।