ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে যে কয়েকজন নেতার কারনে সমগ্র জাতি আন্দোলনের মূল মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিল, নেতাজি তার মধ্যে অবশ্যই প্রথম সারিতে থাকবেন। সুভাষ যখন নেতাজি হয়ে উঠেছিলেন, তখন তিনি একটি জাতির অগ্রদূত হিসেবে নিজেকে মেলে ধরেছিলেন। তিন অক্ষরের 'নেতাজি' শব্দটার মধ্যেই তার মানে লুকিয়ে রয়েছে। এক্ষেত্রে শ্রদ্ধা ভক্তিই হল শেষ কথা। কোন ধরণের কলঙ্ক তাঁকে স্পর্শ করতে পারেনা। তাঁর জীবনবোধ এবং স্বাধীনতা সংগ্রামের অনন্য ধারণা, তৎকালীন বাঙালি জাতিকে, অগ্নিময় করে তুলতে পেরেছিল, তারই বড় প্রমান হল আজাদহিন্দ মুক্তি আন্দোলন। দেশকে স্বাধীন করার অদম্য ইচ্ছা তাঁকে বাধ্য করেছিল চরমপন্থী মনোভাবে সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে যেতে।।কলকাতার সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করলেও সুখের মায়ার বাঁধনে নিজেকে আটকে রাখেননি তিনি। জীবনে কঠিন সংগ্রাম করে লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন স্বাধীন ভারত গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে। যুদ্ধ বন্দি ও রাজবন্দীদের মধ্যে বিদ্রোহী চেতনাকে জাগ্রত করার পেছনে ছিলেন নেতাজি। নেতাজির ভারত সাধনায় কোন কৃত্রিম চিন্তা স্থান পায়নি। যার কারনে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সকল জাতি একত্র হয়ে মুক্তি যুদ্ধে নেমে পড়েছিলেন। বাংলার মানুষের মন থেকে তিনি কখনো মুছে যাবেননা। চিরকালই একই ভাবে বিরাজ করবেন। সুভাষের কথায়, ভারতবর্ষ বড় আদরের দেশ। তাই ভারতমাতার উপর যুগ যুগ ধরে হওয়া অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে তিনি রুখে দাঁড়াবেন বলে অবতীর্ণ হন। তবে তাঁর জীবনের রহস্য সাগরের মত গভীর। যার শুরু খুঁজে পাওয়া গেলেও শেষ পাওয়া কঠিন। তাঁর উত্তাল মহাজীবনের কর্মকান্ড লিখে শেষ করা অসাধ্য। এমন বিশাল নক্ষত্রের সান্নিধ্য পাওয়া যে কোন জাতির পক্ষে দুর্লভ। অগাধ দেশপ্রেম, সততা, ত্যাগ, বীরত্ব, সেবাব্রত ও আগুনের প্রজ্বলিত প্ৰদীপ একজনই সে আমাদের চিরকালের নেতা, নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বোস।