টিফিনের পয়সা বাঁচিয়ে বৃক্ষরোপণ করে মানবতা ও প্রকৃতিপ্রেমের দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে ক্ষুদে পড়ুয়ারা। ঘটনাটি ঘটেছে বাংলাদেশের রাজশাহী জেলায়। প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার্থে রাজশাহীর বাঘায় ১৪৬টি প্রাথমিক, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা নিজেদের টিফিনের পয়সা জমিয়ে প্রায় ৫০,০০০ বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে এই বিরল কার্যে শামিল হয়েছে।
সোমবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহিন রেজা বাঘা মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে আনুষ্ঠানিকভাবে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। এছাড়া অন্যান্যদের মধ্যে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাঘা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লায়েব উদ্দীন লাভলু, অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হক, উপজেলা আওয়ামী লিগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আরিফুল ইসলাম, উপজেলা শিক্ষা অফিসার এবিএম সানোয়ার হোসেন, উপজেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি আনজুল ইসলাম প্রমুখ।
গত মাসের মাঝামাঝি সময়ে উপজেলা প্রশাসনের সাথে বৈঠকে টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে গাছ কেনার বিষয়টিতে শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকেরা শ্রেণীকক্ষে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বৃক্ষরোপণের প্রয়োজনীয়তা সম্বন্ধে আলোচনা করলে তাতে প্রবলভাবে উদ্বুদ্ধ হয় শিক্ষার্থীরাও।
অন্যদিকে, টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে এমন অভিনব উদ্যোগে নিজেদের সন্তানকে শামিল করতে পেরে খুশি অভিভাবকেরা। বাঘা মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র রাকিবুল ইসলাম বলছে, শিক্ষকরা আমাদের বুঝিয়েছেন গাছ কেটে ফেলার ফলে সারা পৃথিবী জুড়ে পরিবেশের উপর বিপর্যয় নেমে আসছে। আবহাওয়া গরম হয়ে আসছে। তাই প্রত্যেকের গাছ লাগানো উচিৎ। এইজন্য আমরা গাছ লাগাচ্ছি। গাছের গোড়ায় নিয়মিত জল দিয়ে আমি তাদের বড় করে তুলবো।
সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে ছাত্ররা ক্লাস মনিটরের কাছে টাকা জমা দেয়। স্কুলের প্রধান শিক্ষক মারফত সেই টাকা পৌঁছে যায় শিক্ষক সমিতি উপজেলা প্রশাসনের কাছে। সংগৃহীত টাকা দিয়ে ৫০,০০০-এরও অধিক ফলদ, বনজ ঔষধি ও কাঠের গাছের চারা কেনা হয়। সোমবার সেগুলি শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। নিজেদের বাড়ির প্রাঙ্গণে ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ২ দিনের মধ্যে চারা রোপণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাদের। প্রাথমিকভাবে পড়ুয়ারাই এর দেখভাল করবে।