অন্যান্য দূষণগুলির মধ্যে সমুদ্রদূষণ বিশ্বের অন্যতম প্রধান সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সমুদ্রে বহুল পরিমাণে প্লাস্টিক মিশে যাওয়ার ফলে সামুদ্রিক প্রাণীদের প্রাণও এই মূহুর্তে বিপন্ন। একটি সাম্প্রতিক রিসার্চ বলছে, ২০৫০ এর মধ্যে আমরা সমুদ্রে মাছেদের থেকে প্লাস্টিকের সংখ্যা বেশি খুঁজে পাবো। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে বিশ্বের গবেষণা মহলগুলি পূর্ণমাত্রায় বিষয়টির মোকাবিলা করতে যাবতীয় গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
সম্প্রতি জিনি ইয়াও এবং মিরান্দা ওয়াং নামের দুই যুবতী নিজেদের প্রচেষ্টায় তৈরী করে ফেলেছেন এমন এক ব্যাকটেরিয়া, যা সমুদ্র থেকে খেয়ে ফেলে তাকে পুনরায় জলে রূপান্তরিত করতে সক্ষম। আর আশ্চর্যের বিষয় দুজনেরই বয়স বিশের কোঠায়। স্কুলজীবনে শুরু হয়েছিল এই প্রকল্পের অঙ্কুরোদ্গম, অবশেষে তার ফল পাওয়া গেল এবার। প্রকল্পটিকে বাস্তবায়িত করতে অভিভাবকদের থেকে প্রায় ৪০০০ ডলার সংগ্রহ করেছিলেন এই দুই ছাত্রী।
মূলত এই প্রযুক্তিটিকে দু'টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রথমে প্লাস্টিকটি দ্রবীভূত হয় এবং উতসেচকগুলি অনুঘটকে রূপান্তরিত হওয়ার ফলে প্লাস্টিকটির ক্ষয় হতে শুরু করে এবং এক সময় তা জলে পরিণত হয়। উপাদানগুলি একটি বায়োডেজেস্টার স্টেশনে স্থানান্তরিত করা থাকে। প্লাস্টিককে জলে রূপান্তরিত করতে প্রযুক্তিটির সময় লাগে মাত্র ২৪ ঘন্টা। অর্থাৎ এক দিনের মধ্যেই প্রকল্পটি সম্পন্ন করা যেতে পারে।
“যখন প্লাস্টিক ব্যবহার থেকে মানুষকে বিরত রাখা প্রায় অসম্ভব, তখন আমাদের এমন প্রযুক্তি প্রয়োজন যা প্লাস্টিক ধ্বংস করতে ও তাকে বায়োডেগ্রেডেবল করতে পরিপূর্ণভাবে সক্ষম,” বলছেন ২০ বছরের মিরান্দা ওয়াং।
প্রকল্পটির জন্য এখনও অবধি ৫টি পুরষ্কার অর্জন করেছেন তাঁরা। বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ গবেষক হিসেবে পার্লম্যান সায়েন্স সন্মান জিতে নিয়ে ইতিমধ্যেই সুখ্যাতি অর্জন করা এই দুই নারী, সন্মানিত হয়ে সবার প্রথমে ক্ষুদ্র ব্যাকটেরিয়াগুলিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন, যারা প্লাস্টিককে কার্বন ডাই অক্সাইড ও জলে পরিণত করতে সক্ষম। প্রসঙ্গত, সৈকত পরিষ্কার রাখতে ও বস্ত্র তৈরীর জন্য কাঁচামাল তৈরী করতে প্রযুক্তিটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে।