পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষিত বেকারদের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে। পড়াশুনো শিখেও চাকরি পাচ্ছেনা সকলে। তবে এটাও ঠিক, সঠিক পথে এগোতে পারলে এবং পড়াশুনোয় নজর থাকলে চাকরি নেই বলাটা ভুল। তার প্রমাণ দেখিয়ে দিল যোগেশচন্দ্র চৌধুরী কলেজ। ২০১৫ সালে প্লেসমেন্ট সেল তৈরী করে তারা দেখিয়ে দিয়েছে সাধারণ বিষয়ে পড়াশুনো করেও চাকরি পাওয়া যায়। তাই কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রেও এসেছে পরিবর্তন। আগে যেখানে তৃতীয় তালিকা পর্যন্ত অপেক্ষা হত কলেজে ভর্তির ব্যাপারে, তা এবছর একেবারে পাল্টে গেছে। প্রথম তালিকা থেকেই কলেজের ৬০ শতাংশ আসন ভরে গিয়েছে বলে জানিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
শ্রী শিক্ষায়তন, স্কটিশ চার্চ, সেন্ট জেভিয়ার্স, আশুতোষের মত কলেজ নিয়েই আগে মাতামাতি হত, সেখানে যোগেশ চন্দ্র সেই তালিকায় নিজেদের উন্নীত করতে পেরেছে। কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি বেসরকারি ব্যাংক, অনলাইন বিপণনী, তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে নামি একটি সংস্থা, সহ একাধিক কোম্পানি এসে যোগ্য প্রার্থীদের বেছে চাকরি দিয়েছে। ২০১৫ সালে গঠিত প্লেসমেন্ট সেলের তরফ থেকে ৮ জন ক্যাম্পাসিংয়ের মাধ্যমে চাকরি পান। পরের বছরগুলিতে ধীরে ধীরে সেই সংখ্যা বেড়েছে। ২০১৯ সালে মোট ৫৪ জন পড়ুয়া চাকরি পেয়েছেন বিভিন্ন কোম্পানিতে। চাকরি পাওয়ার এই রেকর্ডই কলেজে ভর্তির চিত্রটি পাল্টে দিয়েছে বলে মনে করেন কলেজের অধ্যক্ষ পঙ্কজ রায়। সাধারণ ডিগ্রী কলেজে এরকম প্লেসমেন্ট সেল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কলেজ যদি পড়ুয়াদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে তাদের চাকরির ব্যবস্থা করার জন্য উদ্যোগ দেখায়, তাহলে ছাত্র-ছাত্রীরাও সেই কলেজে ভর্তি হতে চাইবেন তা বলাই বাহুল্য। এমন কি পড়াশুনোয় মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীরাও সেই কলেজে আসছে পড়ার জন্য।
কলেজ কর্তৃপক্ষ আরও জানালেন, তাঁরা যে কোনো কোম্পানিকে তাদের প্লেসমেন্ট সেলে জায়গা দিচ্ছেন না। সুপ্রতিষ্ঠিত কোম্পানী ছাড়া যোগেশচন্দ্র কলেজ তাদের প্লেসমেন্ট লিস্টে কোম্পানি রাখছেনা। শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গেছে, এমন অনেক কলেজই আছে, যাদের প্লেসমেন্ট সেল রয়েছে কিন্তু তেমনভাবে কার্যকরী ভূমিকা নেয় না পড়ুয়াদের চাকরি পাইয়ে দেবার ক্ষেত্রে। কিছু কিছু কলেজে তো আবার সেইগুলো নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে রয়েছে। ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলোতে এই ধরণের সেল অনেকদিন আগে থেকেই ছিল কিন্তু সাধারণ ডিগ্রী কলেজগুলোতে এখন যেমনভাবে প্লেসমেন্ট সেলের মাধ্যমে পড়ুয়াদের চাকরি দেবার সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে, তাতে আশা করে যায় আগামী দিনে পড়ুয়ারা আর সাধারণ বিষয় নিয়ে পড়তে ভয় পাবেনা। যোগেশচন্দ্র চৌধুরী কলেজের ৫৪ জন চাকরি পেয়ে অন্যান্য কলেজের ক্ষেত্রেও দৃষ্টান্ত স্থাপন করল তা অনস্বীকার্য।