ভারতীয় সঙ্গীতে সুরের মালিকা

গওহর জান। জানকী বাঈ। জোহরা বাঈ। মালেকা জান। মানদাসুন্দরী দাসী। সুন্দরা বাঈ। মেহবুব জান।

নামগুলো আজ ইতিহাসে আধচেনা। অনেকে আবার অচেনাও। কিন্তু ভারতীয় গানের শ্রোতারা ঋণ এড়াতে পারেন না এঁদের কাছে। আজ গান জগতের তারকদের কুসুমপথ তাঁরা তৈরী করে দিয়েছিলেন কাঁটাপথে হেঁটে। রক্তাক্ত হতে হয়েছে, কিন্তু সুরের পথ ছাড়েননি।

উনিশ শতকে গ্রামোফোন কোম্পানি পথ চলা শুরু করলে আর্টিস্ট হিসেবে প্তহম গান রেকর্ড করেন যিনি তিনি এক ডিভা। নাম গওহর জান। সঙ্গীতপ্রেমী মানুষ মাতাল হয়েছিল তাঁর গানের যাদুতে। কিন্তু সাধারণের চর্চা থেকে অনেক দূরে ছিল গান। জনসমক্ষে মেয়েরা গান করছে এ অতি দূর্লভ দৃশ্য। ধাপে ধাপে বদল আসে সেই সংস্কৃতি। সহস্র শীত-বর্ষা পেরিয়ে গানের জগতে শেষ পর্যন্ত বসন্ত আসে। এদেশের মানুষ শেখে নতুন শব্দ ‘প্লেব্যাক’। চলচ্চিত্রের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে ওঠে গান। এক কোকিল কণ্ঠী মন জিতে নেয় সকলের।

বাবার কাছে গান শেখার শুরু। তাঁর অবর্তমানে সংসার-নৌকার হাল ধরার জন্য গান দুনিয়ায় প্রবেশ এই ভারত কন্যার। খুব বেশি সময় লাগেনি বিশ্ব জয় করতে। লতা মঙ্গেশকর। এক অনুপ্রেরণার নাম।

বোন আশাও পা রাখেন দিদির সঙ্গে গানের দুনিয়ায়। দিদির মতো না তিনি ভারতীয় সঙ্গীতে অন্য ধারার শিল্পী। গান শুধু গান নয়, গান তাঁর কাছে ‘পারফরম্যান্স’।

লতা আর আশা। এই দুই নাম বহু সঙ্গীতশিক্ষার্থীর কাছে অনুপ্রেরণার নামান্তর। প্রজন্মের পর প্রজন্ম এভাবেই বয়ে গিয়েছে সুরের স্রোতে। ভারতীয় সঙ্গীতের ভুবনে জন্ম হয়েছে নতুন নতুন মহিলা কণ্ঠের। অলকা ইয়াগনিক, কবিতা কৃষ্ণমূর্তি, থেকে শুরু করে শ্রেয়া, সুনিধি।

 ইতিহাস বদলেছে। সময় বদলেছে। সুর বয়ে চলেছে আপন ধারায়।

সমাজের বাধা, শিকলগুলো ক্ষয়ে গিয়েছে সেই শক্তির বেগেই...    

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...