ছাতিফাটা গরমে জলের সঙ্গে খান এক টুকরো তাল পাটালি, টের পাবেন ম্যাজিক!

প্রচন্ড গরমে কাহিল অবস্থা। এসি তো সঙ্গে সঙ্গে ঘোরে না, কিন্তু রোদটা যে সঙ্গে সঙ্গে যায়। গা পোড়ে। হিট স্ট্রোকের ভয় হয়। গরমের অসুস্থতায় কাহিল। ওপর ওপর ঠাণ্ডা জল প্রথম প্রথম ‘আইস আইস কুল কুল’ অনুভূতি দিলেও সর্দিগর্মির চাপ প্রবল। তবে আম বাঙালির হেঁশেলেই আছে গরম জয়ের সঙ্গী। লস্যি, সরবতের যুগে তার চল আর চাহিদা খানিক কমলেও যারা তার প্রয়োগ জানে তাদের কাছে নিত্য দিনের সঙ্গী। নাম তাল পাটালি

 সাদা ধবধবে নিটোল চেহারা। গায়ে গুড়োঁ চিনির মতো গুড়ের গুঁড়ো লেগে। বৈশাখী গরম চড়তে শুরু করলে বাজারে দেখা মেলে তাল পাটালির। শীতে খেজুর গুড়ের পাটালির মতো এত বহুলভাবে মেলে না যদিও। তবু অনেকের কাছে গরম কাল অপেক্ষার শুধু তাল পাটালির জন্যই। বলা হয় তালপাটালি যত সাদা আর নরম হবে তত তার স্বাদ। পাটালি সাদা করার জন্য শিউলিরা অনেকসময় ফটকিরি মিশিয়ে দেন। তাতে গুড় কড়ার গায়ে ঘষতে হয় কম। পরিশ্রম কম হয়। কিন্তু ফটকিরি দিলে গুড় শক্ত হয়ে যায়।

গরমের তেজ থেকে বাড়ি ফিরে ঠাণ্ডা জলের সঙ্গে এক টুকরো তাল পাটালি আর সঙ্গে সঙ্গে টের পাবেন ম্যাজিক। যতই লু’র তাতে চোখে মাথায় ধাঁধা লাগুল শীতল স্পর্শে সব ভুলিয়ে দেয় তাল পাটালি।

গরমে শরীর ঠান্ডা করার জন্য অনেকেই জলে মুড়ি ভিজিয়ে তার সঙ্গে তাল পাটালির টুকরো দিয়ে দেন। গরমভোর গাঁদেশে এই হল এক খুব চেনা ‘ব্রেকফাস্ট’। ফলারে অনুসঙ্গ হয় তালপাটালি।

দক্ষিণবঙ্গের গ্রামাঞ্চলে চৈত্র-বৈশালখ মাসে তাল গাছ কেটে তালের রস সংগ্রহ করা হয়। বীরভূম, মুর্শিদাবাদের নবগ্রাম সংলগ্ন অঞ্চল তাল পাটালির জন্য বিখ্যাত। দক্ষিণ ২৪ পরগণাতেও তালপাটালির বহুল চল আছে।

তাল পাটালি তৈরী করা বেশ শ্রম সাধ্য কাজ। রাতের বেলা তালের যে রস পাওয়া যায় তা দিয়ে ভোরে গুড বানানো যায় না। বিএকেলের রসে ভাল পাটালি হয়।

তাল পাটালি দিয়ে পরোটা আর গরম রুটি দুই খেতে বেজায় ভাল। কিন্তু এই চমৎকার বস্তু সবচেয়ে বেশি স্বস্তি দেয় হিমশীতল জলের সঙ্গে। সে জল যদি গৃহস্থের কুঁজো থেকে আসে তাহলে কথাই নেই!

   

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...