'স্টর্ম এরিয়া ৫১- দে কান্ট স্টপ অল অফ আস'

সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় করা একটি পোস্ট, আমেরিকার গোপন তথা সংরক্ষিত এলাকার গোপনীয়তা রক্ষার বিষয় নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। তবে পরবর্তীতে অবশ্য আমেরিকান সরকারের কাছে স্বীকার করা হয়েছে, সেটি সম্পূর্ণই মজা করার উদ্দেশ্যে প্রচার করা হয়েছে।

একটি সোশ্যাল মিডিয়া গ্রূপ তৈরী করে সেখানে বলা হয়েছে, আগামী ২০-২২ সেপ্টেম্বর, প্রায় ২ লক্ষ মানুষ এরিয়া-৫১-এর উদ্দেশ্যে নেভাদা যাবেন। সেখানে প্রচুর বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান করা হবে সেইদিন। এছাড়াও সেই সংরক্ষিত এলাকায় কি হয়, তা পর্যবেক্ষণ করাই তাদের উদ্দেশ্য বলে বর্ণনা করা হয় ওই পোস্টে। 'স্টর্ম এরিয়া ৫১- দে কান্ট স্টপ অল অফ আস(Storm Area 51- They Can't Stop All of Us)’- নামে পেজের ইভেন্টটি জনপ্রিয় হয়।

                 প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, 'এক্সট্রা টেরেস্ট্রিয়াল হাইওয়ে' নামে একটি লম্বা হাইওয়ে রয়েছে এই সংরক্ষিত এলাকার পাশ দিয়ে। দুর্গম স্থানে ভ্রমণে ইচ্ছুক ব্যক্তিরা এখানে যান, কিন্তু এরিয়া ৫১-এর সীমানা লঙ্ঘন করার অধিকার কারো নেই।

এরিয়া ৫১ এমন এক ঘাঁটি, যেখানকার কর্মীরা সরাসরি প্রেসিডেন্টের কাছে দায়বদ্ধ। এরিয়া ৫১-এর মূল গেট ঘাঁটি থেকে প্রায় ২৫ মাইল দূরে অবস্থিত। বুম গেট বা চেন লিংকের বেড়ার মতো দুর্ভেদ্য বেষ্টনী ঘেরা এলাকার প্রবেশপথে লেখা আছে, 'সংরক্ষিত এলাকায় প্রবেশ করার চেষ্টা করলেই গুলি করা হবে'। জায়গাটি 'ফটোগ্রাফি নিষিদ্ধ' এলাকা। আমরা সকলেই জানি, ২০১৩ সালের ১৮ আগস্ট সি আইএ রিপোর্টে এরিয়া ৫১ সম্পর্কে নথি প্রকাশের আগে পর্যন্ত আমেরিকান সরকার এই এলাকাটি সম্পর্কে কোনো নথি প্রকাশ করেনি। লোকমুখে বিভিন্ন কল্পকথা প্রচলিত ছিল।

ছিল রহস্য, এই এলাকাটি নিয়ে। বিভিন্ন রকম সিনেমা, টিভি সিরিয়াল তৈরী হয়েছে এই এলাকাটিকে ঘিরেএলিয়েনদের জায়গা হিসেবেই এলাকাটির জনপ্রিয়তা বেশি। তবে ধারণা করা হয়, বিভিন্ন এয়ারক্রাফ্ট ও ওয়েপন সিস্টেম নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হয় এই জায়গাটিতে। প্রায় তিন দশক ধরে এরিয়া ৫১ নিয়ে গবেষণা করা এরোস্পেস ইতিহাসবিদ ও লেখক পিটার মার্লিন বলেছিলেন, এরিয়া ৫১-এ উন্নততর স্টেলথ টেকনোলজি, অ্যাডভান্সড ওয়েপন, ইলেক্ট্রনিক ওয়ারফেয়ার এবং আনম্যান্ড এরিয়াল ভেহিকল নিয়ে কাজ হচ্ছে। আবার ইউ-২ বিষয়ক ইতিহাসবিদ ক্রিস পোককের মতে এখন সেখানে বিশেষ ধরনের এয়ারক্রাফট, রেডিও কমিউনিকেশনের অত্যাধুনিক কোনও প্রযুক্তি, ডিরেক্টেড এনার্জি ওয়েপন এবং লেজার নিয়ে গবেষণা চলছে।

             তবে, সেই দুর্ভেদ্য এলাকায় কি হচ্ছে, তা জানবার তেমন আগ্রহ না থাকলেও আপনি এটা জানতেই পারেন, সেখানে যাওয়ার জন্য এখন প্রচুর পর্যটক আগ্রহী হয়।

যদিও এরিয়া ৫১-র সীমানার ভেতর আপনি পৌঁছতে পারবেন না, কিন্তু তার পাশ দিয়ে যে বিশাল রাজপথ চলে গেছে, সেখানে তো যেতে পারবেন। এইভাবেই সেই অঞ্চলটি নিজে চোখে পর্যবেক্ষন করতে এখন অনেকেই সেখানে যান।

তার জন্য সেখানে বেশ আকর্ষণীয় কিছু বন্দোবস্তও করা আছে। সেখানে পর্যটকদের বিনোদনের জন্যও বেশ কিছু কাজকর্ম করা হয়েছে। যার আকর্ষণেই মানুষ যান সেখানে। তবে প্রথমে যে ইভেন্ট দিয়ে শুরু করেছিলাম, সেটাই দেখার, আগামী ২০ -২২ সেপ্টেম্বর কী হতে চলেছে, বা কী করতে চলেছেন ওই সোশ্যাল মিডিয়ার পেজ-এর আহ্বায়করা।

 

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...