রেশন দোকানে স্মার্ট কার্ড চালু করতে চলেছে রাজ্য

এবার রাজ্যের রেশন দোকানগুলি থেকে খাদ্যদ্রব্য বিক্রির জন্য স্মার্ট কার্ড চালু করতে চলেছে রাজ্য সরকার। গণ বন্টন ব্যবস্থাকে নতুন করে সাজাতে এই উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় সরকারি গণবণ্টন ব্যবস্থা নিয়ে নানা অভিযোগ ওঠে। এই সমস্যা নিরসনে সম্প্রতি ব্লক, মিউনিসিপালিটি, পুরসভা স্তরে শুরু হয়েছে স্মার্ট কার্ড প্রদানের জন্য আবেদন পত্র পূরণ করার কাজ। যাঁরা রেশন কার্ড গ্রাহক নন,  নতুন এই স্মার্ট কার্ডে তাঁদের জন্যও থাকছে বেশ কিছু সুবিধা। রাজ্যের  রেশন ব্যবস্থাকে নতুন ভাবে সাজাতে এই পদ্ধতি গ্রহণ করেছে রাজ্য সরকার। এই স্মার্ট কার্ড খুবই কার্যকর হবে বলেই আশা প্রকাশ করেছেন খাদ্য দপ্তরের এক আধিকারিক। তিনি বলেন,  এর ফলে সরকার ও গ্রাহক – সবারই ভালো হবে ।

এই স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে শুধু গণবন্টনে দেওয়া হয় এমন জিনিসই যে কেনা যাবে তা নয়। নিজের পরিচয়পত্র হিসেবেও এই স্মার্ট কার্ডটি ব্যবহার করা যাবে। একটি রেশন কার্ড করার জন্য সাধারণত মানুষের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। সে কথা মাথায় রেখেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্মার্ট কার্ড চালুর কথা বলে ছিলেন। খাদ্য ও সরবরাহ দপ্তরের উপর দায়িত্ব পড়েছে,  নতুনভাবে স্মার্ট কার্ড বিলির মাধ্যমে পুরো রেশন ব্যবস্থাকে সহজ ও সরলীকৃত করার। তাঁর নির্দেশ মেনেই সোমবার থেকে রাজ্যের বিভিন্ন ব্লক ও পুরসভা, মিউনিসিপাল কর্পোরেশনে ফর্ম দেওয়া শুরু হয়েছে। রাজ্যের ৩৪৮ টি ব্লক, ১২৭ টি পুরসভা ও ২২টি মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনে ১৫দিনেরও বেশি সময় ধরে শিবিরের মাধ্যমে এই কাজ চলবে। ছুটির দিন কাজ বন্ধ থাকবে। এই শিবিরে রেশন কার্ড নিয়ে যাবতীয় সমস্যার সমাধান ও স্মার্ট কার্ড পেতে হলে দশ নম্বর ফর্ম পূরণ করলেই হবে

স্মার্ট কার্ডে নট ফর ফুড গ্রেন্স, ওনলি ফর নন পিডিএস’ লেখা থাকবে। তার ফলে এই কার্ডটি হাতে থাকলে রেশন দোকান থেকে সাবান, টুথপেস্ট, ফিনাইল, মধু, ঘি-সহ গেরস্থালির যাবতীয় প্রয়োজনী জিনিস কেনা যাবে। সূত্রের খবর,  ফিউচার গ্রুপের সঙ্গে রাজ্য সরকারের একটি চুক্তি হয়েছে। এই চুক্তি অনুযায়ী,  নিত্যপ্রয়োজনীয় এসব সামগ্রী রেশন দোকানগুলিতে সরবরাহ করবে এই গ্রুপ। রেশন দোকান থেকে তা কিনলে ১০ থেকে ২৬ শতাংশ ছাড়ও পাওয়া যাবে

খাদ্য ও সরবরাহ দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন রেশন কার্ড প্রদানের পাশাপাশি কার্ডে কোনও পরিবর্তন, সংশোধনের কাজও হবে এই ১৫দিনে। প্রতিটি ক্ষেত্রে আলাদা ফর্ম ফিল আপ করতে হবে। তিন নম্বর ফর্মে পরিবারকে ভরতুকি যুক্ত খাদ্য প্রাপকের তালিকায় অন্তর্ভুক্তি,  চার নম্বরে পরিবারে নতুন সদস্য সংযোজন,  পাঁচে নাম বা ঠিকানা ভুল সংশোধন, ছ’নম্বরে ডিলার পরিবর্তন, সাতে কার্ড বাতিল, আট নম্বরে রাষ্ট্রীয় খাদ্য সুরক্ষা যোজনা–টু থেকে ওয়ানে পরিবর্তনে করা ও ন’নম্বর ফর্মে কার্ড হারিয়ে গেলে বা নষ্ট হয়ে গেলে তা আবার পাওয়ার জন্য পূরণ করতে হবে। যদিও রাজ্যের সমস্ত জায়গায় এখনও এই ফর্ম পৌঁছায়নি। ফলে কাজে খানিকটা বিলম্ব হচ্ছে।

এছাড়া থাকছে দশ নম্বর ফর্ম। এর মাধ্যমে আগে রেশনের গ্রাহক ছিলেন, কিন্তু বর্তমানে আর রেশন পরিষেবা নিতে চান না,  তেমন ব্যক্তিরাই স্মার্ট কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন। আর এই কার্ড হাতে পেলে ফিউচার গ্রুপের বিভিন্ন খাদ্যপণ্য নির্দিষ্ট ছাড়ে রেশন দোকান থেকে কেনার সুবিধাও পাবেন গ্রাহকরা। এই সুবিধা প্রদানের ফলে একদিকে যেমন রাজ্যের সমস্ত মানুষকে সহজে সরকারি পরিষেবার আওতায় আনা যাবে, তেমনই পরিচয় পত্র হিসেবেও সকলের হাত থাকবে একটি নথি।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...