আলু চাষিদের থেকে সরাসারি আলু কিনবে রাজ্য সরকার। রাজ্যের আলুর অধিক ফলনে চাষিদের সম্ভাব্য ক্ষতি রুখতে পাশে দাঁড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১০ লক্ষ টন আলু কেনার কথা প্রাথমিক ভাবে জানিয়েছেন মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী। শুক্রবার ২২.২.১৯ তারিখ বিকেলে তারকেশ্বরের সরকারি অনুষ্ঠানে সেখানকার আলু চাষিদের আস্বস্ত করে এই সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন মমতা।
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন এ বার রাজ্যে আলুর ফলন বাড়-বাড়ন্ত। ফলে চাষিদের যেন বিক্রির ক্ষেত্রে ক্ষতির সম্মুখীন না হতে হয় সে কথা মাথায় রেখে রাজ্য সরকার চাষিদের থেকেই সরাসরি ১০ লক্ষ টন আলু কিনে নেবে। সরকারের এই খাতে খরচ হবে প্রায় ৬৫০ কোটি টাকা। ১০০ কোটি টাকা খরচ হবে পরিবহন খাতে এবং ৫৫০ কোটি টাকা ব্যয় হবে আলুর মূল্য মিটিয়ে দিতে। সভায় মমতা চাষিদের উদ্দেশ্যে আরো জানিয়েছেন যেন চাষিরা আগামী দিনগুলোতে আলুর পাশাপাশি অন্যান্য কিছুও চাষ করেন, তার ফলে ভবিষ্যতে এমন সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে না। তিনি আরো বলেন রাজ্য সরকার যে আলু কিনে নেবে তার একটা অংশ স্কুলের মিড ডে মিল ও আই সি ডি এস এর জন্য দেওয়া হবে। পাশাপাশি রাজ্যবাসীকে আলু খেতে উদ্বুদ্ধ করেন মমতা। তিনি বেশ খোশ মেজাজেই বলেন, আলু সিদ্ধ দিয়ে ভাত খেতে তো ভালোই লাগে। সবাই আলু বেশি খেলে চাষিদের উপকার হবে। মুখ্যমন্ত্রীর এমন ঘোষণায় আপ্লুত হয়ে করতালি দিয়ে স্বাগত জানিয়েছেন উপস্থিত দর্শকেরা।
আলু চাষের জন্য জনপ্রিয় এলাকা হুগলি জেলা ও এর অন্তর্গত তারকেশ্বরের শহরের আগে বালিগড়ে গতকালকের সভাস্থলের চারপাশে বিপুল জায়গা জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে আলুর ক্ষেত। তারকেশ্বরে হেলিকপ্টারে পৌঁছানোর সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লক্ষ্য করেছিলেন আলুর ব্যপক ফলনের দৃশ্য। বিশেষজ্ঞদের কাছেও তিনি আগে থেকেই জানতে পেরেছিলেন আলুর চাষ অতিরিক্ত হওয়ায় ক্ষতির সম্ভাবনার রয়েছে কৃষকদের।
তারকেশ্বরের অধিবেশনে কৃষকদের নিয়ে আরো কিছু পদক্ষেপের কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, কৃষকদের ওপর আর্থিক চাপ লাঘব করতে কৃষি জমির খাজনা মকুব করা করে দেওয়া হয়েছে। উত্তরাধিকার থেকে প্রাপ্ত জমির মিউটেশন ফি তুলে দেওয়া হয়েছে। চালু করা হয়েছে ফসল বীমা। এর সাথে কৃষকদের বছরে ৫০০ টাকা করে সাহায্য প্রদান করা হচ্ছে , দু লক্ষ টাকার বিমা করে দেওয়া হয়েছে চাষিদের জন্য। প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে শস্যবিমা ও কৃষক বিমা করা হয়েছে। কৃষকদের জন্য এমন বিপুল পরিমান অৰ্থ ব্যয় করা একেবারে যথাযথ বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।