কিছুদিন আগেই মেডিক্যাল কলেজগুলিতে আসন সংখ্যা বাড়ানোর প্রস্তাব এসেছিল কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে। রাজ্য যত সংখ্যক অতিরিক্ত আসন দাবি করেছিল, কেন্দ্র তার চাইতে বেশি আসন মঞ্জুর করে দেয়। এই নিয়ে কিছুটা সংশয় দেখা দিলেও তা মিলিয়ে যেতে না যেতেই আবার নতুন খবর শোনা গেল।
রাজ্যের পাঁচটি জেলায় হাসপাতাল লাগোয়া নতুন মেডিক্যাল কলেজ তৈরী করবে কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডঃ হর্ষ বর্ধন জানিয়েছেন, প্রতি তিন লোকসভা কেন্দ্র পিছু একটি করে মেডিক্যাল কলেজ খোলার জন্য সরকারের যে প্রকল্প রয়েছে, তারই অধীনে রাজ্যে এই নতুন পাঁচটি মেডিক্যাল কলেজ তৈরী হবে। ১২৫০ কোটি টাকা খরচ করে ২০২১-২২ অর্থবর্ষের মধ্যেই গোটা কাজ সম্পূর্ণ করতে চায় কেন্দ্র। এই প্রকল্পের জন্য রাজ্য সরকারের তরফ থেকেও অর্থ দেওয়া হবে, অর্থাৎ কেন্দ্র-রাজ্য যৌথ উদ্যোগে তৈরী হচ্ছে নতুন মেডিক্যাল কলেজ। যেখানে মেডিক্যাল কলেজগুলি গঠন করা হবে, তার জমিও বেছে দিয়েছে রাজ্য সরকার। পাশাপাশি লাগোয়া হাসপাতালগুলিরও উন্নয়ন করা হবে। যেখানে যেখানে নতুন মেডিক্যাল কলেজগুলি গঠন করা হবে, সেগুলি হল- উত্তর ২৪ পরগনার বারাসাত, হাওড়ার উলুবেড়িয়া, পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক, হুগলির আরামবাগ এবং ঝাড়গ্রাম। হাসপাতাল লাগোয়া প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজের জন্য ২৫০ কোটি টাকা খরচ করা হবে। এর মধ্যে ১৫০ কোটি দেবে কেন্দ্র এবং বাকি ১০০ কোটি রাজ্যকে দিতে হবে। এই চুক্তিতে রাজ্য সরকার সম্মতিও দিয়েছে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুযায়ী সরকারি হাসপাতালে একজন ডাক্তারের ১ হাজার রোগী দেখা উচিত। কিন্তু বর্তমানে তার অনুপাত ডাক্তার পিছু ১,৪৫৬ জন রোগী। গোটা দেশে মোট ১১ লক্ষ ৫৯ হাজার ৩০৯ জন রেজিস্টার অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসক রয়েছেন। যার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে আছেন ৭২ হাজার ১৬ জন। সেই কারণেই চিকিৎসকের এই অভাব মেটানোর উদ্দেশ্যেই নতুন মেডিক্যাল কলেজ গঠনের ভাবনা।
শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গেই নয়, গোটা দেশেই এভাবে হাসপাতাল লাগোয়া মোট ৮২টি নতুন মেডিক্যাল কলেজ গঠন করা হবে। যেসব জেলায় কমপক্ষে ২০০ শয্যার হাসপাতাল আছে, সেগুলিরও উন্নয়ন করা হবে। হাসপাতালগুলির পরিষেবা যাতে আরও ভালো হয়, তার ব্যবস্থা করা হবে। পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমের রামপুরহাট, কোচবিহার, ডায়মন্ডহারবার, পুরুলিয়া এবং উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ-এর হাসপাতাল উন্নয়নের আওতায় পড়েছে। এভাবে যদি নতুন মেডিক্যাল কলেজ সহ হাসপাতালগুলির উন্নতিসাধন তথা পরিষেবার উন্নয়ন ঘটানো হয়, তাহলে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবারও যে উন্নতি হবে, তা বলাই বাহুল্য।