‘শ্রী’ মানে শুধুই ‘শ্রীদেবী’

শ্রী আম্মা ইয়াঙ্গের আয়াপ্পন।  তিনি প্রথম ভারতীয় মহিলা সুপারস্টার।

তাঁর পরিচয় হিসেবে এই যদি কাউকে বলা হয়, সহজে চিনতে পারবে না। কিন্তু কোনও সিনেমাপ্রেমীর কাছে যদি শুধু উচ্চারণ করা হয় ‘শ্রী’ শব্দটি, তাহলে আর কিচ্ছুটি বলতে লাগবে না। কারণ ভারতীয় ছবিতে ‘শ্রী’ মানে শুধুই ‘শ্রীদেবী’। শ্রী আম্মা ইয়াঙ্গের আয়াপ্পন তাঁর আসল নাম। কিন্তু শ্রী-এর আড়ালে কবেই যেন হারিয়ে গিয়েছে সেই নাম।

তিনি স্বতন্ত্র। নিজেই নিজের ব্র্যান্ড। পুরুষ প্রধান ছবির দুনিয়ায় গড়েছেন নিজস্ব সাম্রাজ্য। রক্ত-ঘাম আর প্রতিভায়।গ্রহণ এবং প্রত্যাখ্যানে জীবন ছুটিয়েছেন। তাঁর নাচের মতো দুর্নিবার ছন্দে। কখনও জিতেছেন। কখনও হেরেছেন। তবুও সেরা সুপার স্টারের তাজ চিরকাল তাঁরই।     

১৯৯৩তে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন স্টিফেন স্পিলবার্গের ছবির প্রস্তাব। ‘জুরাসিক পার্ক’ ছবির এক চরিত্রে অভিনয়ের জন্য প্রস্তাব এসেছিল তাঁর কাছে। রোল ছোট। এদিকে বলিউডে তখন শ্রীদেবী যুগ চলছে। ফিরিয়ে দিয়েছিলেন স্পিলবার্গের প্রস্তাব। বহু হিন্দি ছবিও এভাবেই ফিরিয়ে দিয়েছেন অবলীলায়। পরে সেই ছবিই বক্সঅফিসে তুমুল সাফল্য পেয়েছে, এমন ঘটনাও  ঘটেছে।

যেমন শাহরুখ খান অভিনীত ‘ডর’। এক সাক্ষাৎকারে শ্রী জানিয়েছিলেন, “চাঁদনি, লমহে’তে অভিনয়ের পর আমার মনে হয়েছিল ‘ডর’-এর চরিত্রটি আমার জন্য সাধারণ...যদি আমাকে শাহরুখ খানের চরিত্র অফার করা হত, তাহলে ভালবেসে করতাম...”

শ্রীদেবীর বাতিল করা চরিত্রটিতে শেষপর্যন্ত দেখা গিয়েছিল জুহি চাওলাকে। জুহি তখন নতুন, দর্শকরাও সাদরে গ্রহণ করেছিল জুহিকে। আসলে নায়কপ্রধান চিত্রনাট্যে এক ধরনের নায়িকা চরিত্রে অভিনয় করে ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। তাই চরিত্রে কোনও নতুনত্ব খুঁজে পাননি তিনি।

এভাবেই আরও বহু ছবির প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। তার মধ্যে ৯ টি ছবি ব্লকবাস্টার ।

অনিল কাপুর আর মাধুরী দীক্ষিত অভিনীত ‘বেটা’ ছবিতেও নায়িকা চরিত্রের জন্য প্রথম পছন্দ ছিলেন শ্রী। ‘ধক ধক করনে লাগা’ গানটি লেখা হয় তাঁকে ভেবেই। অনিল কাপুরের সঙ্গে তখন একের পর এক ছবিতে দেখা যাচ্ছে তাঁকে। তাই এই ছবিতে ‘না’ করেন তিনি। অফার যায় মাধুরীর কাছে। বাকিটা ইতিহাস! বছরের সেরা ছবির সম্মান পায় ‘বেটা’। মাধুরী বর্ষসেরা অভিনেত্রী। এই ছবি থেকে তাঁর নামই হয়ে যায় ‘ধক ধক গার্ল’!

‘মোহরা’, ‘বাজিগর’, ‘আজুবা’, ‘দিল তো পাগল হ্যায়’, এমন লিস্ট সহজে ফুরবার নয়। কেরিয়ার দুই ইনিংসেই তাঁর বাতিলের তালিকায় যোগ হয়েছে ব্লকবাস্টার  ছবির নাম।

যশরাজ ব্যানারের ‘মহব্বঁতে’ ছবিতে তাঁকে ভেবে চরিত্র পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু শ্রী বাতিল করেন চিত্রনাট্য। পরে তাঁর চরিত্রটিই বাদ দেওয়া হয় গোটা ছবি থেকেই।

২০০০ সালের কাছাকাছি সময়ে তখন তিনি বিগ স্ক্রিনে কামব্যাকের ভাবনা ভাবছেন। তাঁর কাছে অফার গিয়েছিল ‘বাগবান’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য। রবি চোপড়ার ছবি। ফিরিয়ে দিয়েছিলেন।

তাঁর শেষতম বাতিল ‘বাহুবলি ২’। শিবাঙ্গীর চরিত্রের জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। দক্ষিণী প্রজেক্টে কাজ করতে নারাজ ছিলেন। শোনা যায় শ্রীদেবীর স্বামী বনি কাপুর ছবির আর্থিক লাভ থেকে বিপুল পরিমান অর্থের দাবী রেখেছিলেন, শর্ত হিসেবে। রাজা মৌলি তখনই শিবাঙ্গীর চরিত্রের জন্য রাম্যা কৃষ্ণাকে নির্বাচন করেন।   

 

 

    

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...