সময়টা ১৯২১। এ-দেশে দাঁতের চিকিৎসার উপযুক্ত কোনো কেন্দ্র নেই তা পর্যবেক্ষণ করে এক ব্যক্তি নিজেই উদ্যোগী হলেন একটি হাসপাতাল তৈরিতে। কলকাতায় শুরু করলেন প্র্যাকটিস। কোনো সরকারি সাহায্য ছাড়াই, নিউইয়র্ক সোডা ফাউন্ডেশনের সহায়তায় কলকাতার বুকে তৈরি হল ডেন্টাল কলেজ ও হাসপাতাল। যদিও আগের বছরই সবেমাত্র আমেরিকার আইওয়া কলেজ থেকে ডেন্টাল ডিগ্রি নিয়ে ফিরেছেন তিনি। আর যিনি এই বিশাল কর্মকান্ডের উদ্যোক্তা তিনি ডঃ রফিউদ্দিন আহমেদ। পরবর্তীকালে তাঁরই নামে নামকরণ হয় হাসপাতালটির। সম্প্রতি, রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এই হাসপাতালের উন্নতিকল্পে এবং রোগীদের স্বাচ্ছন্দ্যের কথা মাথায় রেখেই এক অভিনব উদ্যোগ গৃহীত হয়েছে - এই হাসপাতালেরই নতুন ও পুরনো বিল্ডিং-এর মধ্যে সংযোগসূত্র হিসেবে তৈরি হচ্ছে একটি ফুটব্রিজ।
একথা বললে অত্যুক্তি হবে না যে কলকাতার ঐতিহ্যে আরো একটি বৈশিষ্ট্য হলো ‘ডঃ আর আহমেদ ডেন্টাল কলেজ ও হাসপাতাল’- যা সমগ্র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ারই প্রথম ডেন্টাল কলেজ। এই কলেজের দুটি বিল্ডিং-এর মধ্যে রয়েছে যান চলাচলগামী ভীষণ ব্যস্ত রাস্তা- আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু রোড। ফলে, এক বিল্ডিং থেকে অন্য বিল্ডিং-এ যাতায়াতের জন্য অসুবিধা হয় রোগী ও তাঁর পরিজনদের। এই সমস্যার সমাধানকল্পেই দীর্ঘদিনধরেই কলেজ কতৃপক্ষ রাজ্য সরকারের কাছে একটি সংযোগকারী ফুটব্রিজ তৈরির আবেদন করেছিলেন। পরিশেষে সেই সমস্যার সমাধানে রাজ্য সরকার উদ্যোগী হয়ে ৫১ মিটার দীর্ঘ ফুটব্রিজটির কাজ শুরু করেছেন।
৫১ মিটার দীর্ঘ এই ফুটব্রিজটি কলকাতার দীর্ঘতম ফুটব্রিজ হতে চলেছে। ইতিমধ্যেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়াররা এর নকশা তৈরি করেছেন। পূর্ত দপ্তরের অধীনস্ত এই দীর্ঘতম ফুটব্রিজ নির্মাণে খরচ হবে আনুমানিক ৭ কোটি টাকা, তবে আশাব্যঞ্জক যে ৬ মাস থেকে এক বছরের মধ্যেই চালু করা যাবে ব্রিজটি। তবে এই উদ্যোগ কিছুটা আগে গৃহীত হলে পরের বছর এই কলেজের শতবর্ষ উপলক্ষে ফুটব্রিজ সূচনা হলে তার বিশেষত্ব খানিক বেড়ে যেত। তবে দেরিতে হলেও এর কার্যকারিতা ফলপ্রসূ হবে তেমন আশা করা যায়।