‘চিরন্তন পীঠ’ সোমনাথ

দেশের প্রাচীনতম হিন্দু মন্দিরগুলির মধ্যে অন্যতম সোমনাথ মন্দিরভারতের গুজরাট রাজ্যে অবস্থিত। এই মন্দিরে পূজিত হন শিব। মহাদেবের দ্বাদশ লিঙ্গের মধ্যে এটি পবিত্রতম। হিন্দু বিশ্বাস, হিমালয়রাজ দক্ষ প্রজাপতির অভিশাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য চন্দ্র প্রভাস তীর্থে শিবের পূজা করেছিলেন। মহাদেব তার ভক্তি দেখে খুশি হয় তাকে এই অভিশাপ থেকে অংশত মুক্তি দিয়েছিলেন।

 

Somnath1

 

সোমনাথ শব্দটির অর্থ “চন্দ্র দেবতার রক্ষাকর্তা”। চন্দ্র শিবের উপাসনা করার জন্য সোনা দিয়ে সোমনাথ মন্দির তৈরি করিয়ে ছিলেন। তবে পরে রূপো ও কৃষ্ণ চন্দন কাঠ দিয়ে মন্দিরটি পূর্ণ নির্মাণ করেছিলেন রাবণ। যদিও কিছু ঐতিহাসিকের ধারণা সোমনাথ মন্দির প্রথমে তৈরি হয়েছিল খ্রিস্টের জন্মের আগে। এই মন্দিরে মহাদেব সোমেশ্বর নামে পরিচিত। পুরাণেও উল্লেখ রয়েছে এই মন্দিরের নাম। এছাড়া কবি কালীদাসের লেখাতেও এই মন্দিরের উল্লেখ রয়েছে। সোমনাথ মন্দিরটি ‘চিরন্তন পীঠ’ নামে পরিচিত।

পুরাণের লেখা অনুযায়ী, নানা যুগে নানা নামে পরিচিত ছিল সোমেশ্বর। সত্যযুগে এই ভৈরবেশ্বর, ত্রেতাযুগে শ্রাবণিকেশ্বরদ্বাপর যুগে শ্রীগলেশ্বর নামে পরিচিত ছিলেন। তবে প্রাচীন এই মন্দিরটিতে ১৭ বার ধ্বংস করা হয়েছিল। ৭২৫ খ্রিস্টাব্দে সিন্ধুপ্রদেশের আরব শাসকরা ধ্বংস করেছিলেন এই মন্দিরটি। তারপর ৮১৫ খ্রিস্টাব্দে আবার মন্দিরটি নির্মাণ করেছিলেন দ্বিতীয় নাগভট্ট।

 

Somnath2

 

তিনি বেলে পাথর দিয়ে নির্মাণ করিয়ে ছিলেন এই মন্দিরটি। ১০২৪ খ্রিস্টাব্দে মাহমুদ গজনি আবার সোমনাথ মন্দিরটি ধ্বংস করেছিল। এভাবেই বারবার ধ্বংস হওয়ার পর আবার পূর্ণ নির্মাণ করা হয়েছে এই মন্দিরটিকে। তবে স্বাধীনতার পর ভারতের উপ-প্রধানমন্ত্রী সর্দার বল্লভভাই পটেলের নির্দেশে আবার মন্দিরটি নির্মাণ করা হয়। ১৯৫১ সালের মে মাসে ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রাজেন্দ্র প্রসাদ সোমনাথ মন্দিরটির শিল্যানাস করেছিলেন।

গুজরাটের সৌরাষ্ট্র জেলায় অবস্থিত সোমনাথ মন্দিরটি আমেদাবাদ থেকে দূরত্ব ৪০০ কিলোমিটার। এছাড়াও জুনাগড় থেকে এর দূরত্ব প্রায় ৫১ কিলোমিটার। যদি কেউ রেল পথে সোমনাথ মন্দির যেতে চান তাহলে ভিরাভেল রেল স্টেশনে যেতে হবে। সেখান থেকে এই মন্দিরের দূরত্ব মাত্র ৭ কিলোমিটার। প্রত্যেক বছর বহু শিব ভক্ত এই মন্দিরটি দর্শন করতে আসেন।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...