কলকাতার স্কাই ওয়াচার্স এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে গগনেন্দ্র শিল্প প্রদর্শশালায় শুক্রবার ৪ঠা জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে বিজ্ঞানসম্মতভাবে চাঁদকে চেনাবার পাঠ।এই সংগঠনের সদস্যরা চাঁদ এবং মহাকাশ সম্পর্কিত যাবতীয় কুসংস্কারকে সরিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিজ্ঞান চেতনার প্রসারে নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
চাঁদ নিয়ে আমাদের মধ্যে বহু পুরোনো আমল থেকেই বিভিন্ন রকম লোকগাথা প্রচলিত রয়েছে। রয়েছে দৈব আরোপের প্রবণতা। এই প্রতিষ্ঠান জ্যোতিষশাস্ত্র এবং জ্যোতির্বিজ্ঞান যে এক নয়, তার কথা বলতে চেয়েছে। প্রদর্শনীতে চাঁদ থেকে সংগ্রহ করে আনা পাথরের ছবি, তার বিবরণ যেমন রয়েছে, তেমনি স্যাটার্ন ফাইভ রকেটের একটি রেপ্লিকাও রাখা রয়েছে। নাসার চন্দ্রাভিযান সফল করতে যার ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। জ্যোতিষশাস্ত্রে বিশ্বাসী অনেকেই এই ধরণের প্রদর্শনীর ওপর চ্যালেঞ্জ করেন। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নিজেদের ধরে রাখা একটা বড় ব্যাপার। সংগঠনের সক্রিয় সদস্য দীপঙ্কর দে জানান, প্রদর্শনীতে অনেকেই হয়ত তাদের বক্তব্যের সঙ্গে সম্মত হন, কিন্তু বাইরে গেলেই আবার ভুলে যান। তাই এই প্রদর্শনী নিরন্তর চালিয়ে যাওয়াই তাদের লক্ষ্য। এই সংস্থা পৃথিবী থেকে নক্ষত্রমন্ডলীর অবস্থান দেখে সেগুলির একটি রূপ দিয়েছে, যেগুলি জ্যোতিষশাস্ত্রে রাশি হিসেবে পরিচিত। কিন্তু নক্ষত্রগুলো সমান দূরত্বে নেই। পৃথিবী থেকে তাদের যে অবস্থান, তা দেখে সেগুলিকে একেকটি রাশির নাম দেওয়া হয়, কিন্তু তার আদৌ কোনো ভিত্তি নেই। মানুষের ভাগ্যেরও কোনও সম্পর্ক নেই এগুলোর সঙ্গে। প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য, চাঁদ থেকে ফিরে আসা নীল আর্মস্ট্রং সহ অভিযাত্রী ত্রয়ীর কাস্টমস ডিক্লারেশন রয়েছে। তাঁরা চাঁদ থেকে সঙ্গে কি কি এনেছেন, তার লিস্ট জানাতে হয়েছিল হনলুলু এয়ারপোর্টে-সেটার একটা বিশাল প্রিন্টও রাখা হয়েছে প্রদর্শনীতে। এছাড়া এডুইন অলড্রিনের মহাকাশ যাত্রার ট্র্যাভেল এক্সপেন্স ভাউচারের একটি কপিও দেখা যাবে প্রদর্শনীতে। দর্শকদের টেলিস্কোপের কার্যপ্রণালীও রেখেছেন সংগঠনের কর্তারা। এভাবে বলাই যায়, তাঁরা সমাজের বৈজ্ঞানিক চেতনা বিকাশের লক্ষ্যে নিজেদের নিয়োজিত করেছেন।