চুরি করলে তার শাস্তি পেতেই হয়। তা সে যাই চুরি হোক না কেন। সম্প্রতি মুম্বাইয়ের একটি খবর উঠে এসেছে শিরোনামে। সেখানে ১১ বছর ধরে জল চুরির অপরাধে পুলিশ গ্রেফতার করেছে ৬ জন ব্যক্তিকে। ভূগর্ভস্থ জলের স্তর প্রাকৃতিক কারণেই ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে যা যথেষ্ট ভাবাচ্ছে বিজ্ঞানীদের। তার মধ্যে এইভাবে ভূগর্ভস্থ জল চুরির ঘটনা আরও বেশি করে নাড়া দিয়ে গেছে দিয়ে গেছে প্রশাসনকে।
সম্প্রতি জানা গেছে, মুম্বাইয়ের আজাদ ময়দান পুলিশ ফোর্স ৬ জন ব্যক্তির নামে একটি এফআইআর লঞ্চ করেছে। তাদের বিরুদ্ধে গত ১১ বছর ধরে প্রায় ৭৩.১৮ কোটি টাকার ভূগর্ভস্থ জল চুরির অভিযোগ রয়েছে। পুলিশের কাছে প্রথম অভিযোগ দায়ের করেন পান্ডিয়া ম্যানসনের একজন বাসিন্দা সুরেশ কুমার ধোকা। তার অভিযোগের ভিত্তিতেই গ্রেফতার করা হয় ওই ৬ জন অভিযুক্তকে। অভিযোগপত্রের লেখা অনুযায়ী, ওই এলাকা ২টি অবৈধ কুঁয়ো খোঁড়া হয়েছে যার থেকে জল তুলে বিক্রি করছে ওই ৬ জন ব্যক্তি। সুরেশবাবু জানান, ওই ম্যানসনের মালিক ত্রিপুরাপ্রসাদ পান্ডিয়াই অবৈধভাবে কুঁয়ো থেকে জল তুলে বাইরে বিক্রি করছে। এর জন্য সে এক্সট্রা ইলেকট্রিক মিটারও বসিয়েছে। সুরেশবাবুর অভিযোগের ভিত্তিতেই এই ৬ অভিযুক্তকে রাইট টু ইনফরমেশন আইনের আওতায় আনা হয়েছে।
বড় বড় মেট্রো শহগুলিকে ভূগর্ভস্থ জলের উপরেই ভরসা করতে হয় তার মধ্যে দিনে দিনে বেড়ে চলেছে নানা কলোনিয়াল এলাকা। তারই মধ্যে এহেন চোরেরা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠাতে দুশ্চিন্তার মেঘ ঘনীভূত হয়েছে প্রশাসনের কপালে। ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ হিউম্যান সেটেলমেন্ট এর বক্তব্য অনুযায়ী, যেখানে ভারতের একটি সাধারণ শহরে একজন মানুষের জলের প্রয়োজনীয়তা ১৩৫ লিটার সেখানে দাঁড়িয়ে মাত্র ৬৯ লিটার জল পাওয়া যাচ্ছে। সেন্ট্রাল গ্রাউন্ড ওয়াটার বোর্ডের সমীক্ষা থেকে জানা গেছে, ১৯৫১ সালে ভূগর্ভস্থ জলের পরিমান যেখানে ছিল ১৪,১৮০ লিটার সেখানে হিসেবে করে দেখা গেছে সুদূর ভবিষ্যতে অর্থাৎ ২০২৫ সালের মধ্যে এই লেভেল নেমে আসতে চলেছে ৩,৬৭০ লিটারে।
এইধরণের খবর প্রকাশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সোশ্যাল মিডিয়ায় শোরগোল পরে যায়। একে তো জল চুরির অপরাধে অপরাধীর গ্রেফতার হওয়া তার উপর জলসংকটের সময়ে জল চুরির ঘটনা। এই দুই মিলিয়ে এখন সোশ্যাল মিডিয়া সরগরম। সব জায়গাতেই এখমন এখন একটাই স্লোগান। সংকটের দিনে দাঁড়িয়ে জল বাঁচানোর প্রতিশ্রুতিই এখন সকলের মুখে।