বর্ধমানের জেলা শহর কাটোয়া। সেখান থেকে চোদ্দ কিলোমিটার দূরে সিঙ্গিগ্রাম। কাশীরাম দাসের ভিটে।
সংস্কৃতে রচিত বেদব্যাসের মহাভারতকে বাংলা ভাষায় অনুবাদ করেছিলেন কাশীরাম দাস।
যদিও ঠিক কোথায় কাশিরামের জন্ম হয়েছিলে সে বিষয়ে নানা রকম মত শোনা যায়। কিন্তু মহাভারতের রচনাকার পরিচয়ে ‘সিঙ্গিগ্রামের’ উল্লেখ আছে।
ইন্দ্রাণী নামেতে দেশ পূর্বাপর স্থিতি। / দ্বাদশ তীর্থেতে যথা বৈসে ভাগীরথী।। / কায়স্থ কুলেতে জন্ম বাস সিঙ্গি গ্রাম।’
কাশীরাম দাসের জন্মস্থান নিয়ে প্রচুর বিতর্ক আছে। পরস্পরবিরোধী তথ্যও বহু। তবে যেটুকু সঠিক ভাবে জানা যায় তা এইরকম-
কাশীরাম দাসের বাবা রামকান্ত দাস সিঙ্গিগ্রাম ছেড়ে উড়িষ্যা চলে গিয়েছিলেন। ধারনা করা হয় সেখানেই কাশীরাম দাসের জন্ম হয়েছিল।
কাশীরামের পরিবার আবার বাংলায় ফিরে আসে। কিন্তু বর্ধমান নয়। তাঁরা বসত স্থাপন করেন মেদিনীপুরে।
মেদিনীপুরেই তাঁর শিক্ষাজীবন শুরু হয়। অভিরাম মুখোটির পাঠশালায় ভর্তি হন। পরবর্তী সময়ে অভিরাম মুখোটির অনুপ্রেরণায় মহাভারতের অনুবাদ কাজ শুরু করেন। কিন্তু তিনি শুধুমাত্র আদি-বন-বিরাট পর্ব পর্যন্ত করেছিলেন। বাকিটা তাঁর পুত্র ও ভ্রাতুষ্পুত্ররা করেন।
সিঙ্গিগ্রামের প্রধান আকর্ষণ কাশীরামের পৈতৃক ভিটে। কাশীরাম দাসের স্মৃতি রক্ষা কমিটি রক্ষণাবেক্ষণ করে। পৌষ মাসে কবির জন্মদিনে মেলাও হয়।
কিন্তু বাংলা ভাষার শ্রেষ্ঠ অনুবাদকের ভিটের অবস্থা বেশ মলিন। পুরনো বাড়ি ঘিরে বিভিন্ন গল্প শোনা যায়।
সিঙ্গিগ্রাম বেশ প্রাচীন গ্রাম। কথিত আছে প্রায় তেরশো বছর আগে সিঙ্গি গ্রামের পত্তন হয়।