কলকাতায় যা গরম পড়েছে, সকলেরই মনে হচ্ছে, কোথাও একটু ঘুরতে যেতে পারলে ভালো হত। যদিও এখানকার গরম সর্বজনবিদিত, তবু প্রতি বছরই আমরা ভাবি, উফ কি গরম, কি গরম- তাই না? এবারে ঘুরতে কোথায় যাবো বলুন তো? পাহাড় না সমুদ্র? ভাবতে ভাবতেই দেখা গেল হয়তো বর্ষা উপস্থিত। কারণ, প্রতি গরমে এবং শীতে কোথাও না কোথাও ঘুরতে তো যাওয়াই হয়, তাই মোটামুটি চেনাশোনা সব জায়গায় ঘোরা হয়ে গেছে। তাহলে কি করা? ভাবতে বসলেন তো? ভাবতে ভাবতে কি মনে হচ্ছে, একটু দেশের বাইরে ঢুঁ মারলে হয়। তাহলে সেই ভাবনাতে ‘তা’ দিতেই পারেন। কারন আপনাদের জন্য বিশেষ সুযোগ নিয়ে আসছে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স। সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স শুরু করছে তাদের নতুন বিমান পরিষেবা। পর্যটকদের সুবিধার্থে তারা নতুন এয়ারবাস এ-৩৫০ চালু করছে।
বেঙ্গালুরু এবং কলকাতা থেকে এই বিমান পরিষেবা শুরু হচ্ছে।সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের দাবি, তারাই প্রথম এই পরিষেবা চালু করছে। প্রঙ্গত উলেখ্য, চাঙ্গি এয়ারপোর্টে এমনিতেই পর্যটকেরা যথেষ্ট আনন্দ করেন।
বিভিন্ন রকম বিপণি বা বলা ভাল শপিং সেন্টার এবং মন ভরানো খাবারের দোকানে মজে যান ভারতের পর্যটকেরা। তার ওপর এখানে এবারে নতুন আকর্ষণ হিসেবে চালু হল ‘জুয়েল চাঙ্গি’। যার মূল আকর্ষণ অভ্যন্তরীণ কৃত্রিম জলপ্রপাত।
এপ্রিলেই খুলে দেওয়া হয়েছে ওই দেশের অন্যতম আশ্চর্য ওই জলপ্রপাত। কৃত্রিম জলপ্রপাতটি ঘিরে তৈরী হয়েছে একটি কৃত্রিম জঙ্গল। 'শীশেদা ফরেস্ট ভ্যালি'।
সব মিলিয়ে প্রায় ১২০ প্রজাতির গাছ লাগানো হয়েছে। সাত তলা সমান বা ৪০ মিটার লম্বা এই জলপ্রপাত পৃথিবীর বৃত্তম অভ্যন্তরীণ জলপ্রপাত-এর মর্যাদা পেয়েছে। বর্ষার জমানো জল থেকেই এই জলপ্রপাতের জলের উৎস নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। মিনিটে ৩৮ হাজার লিটার জল ওপর থেকে নিচে পড়ছে। এই ব্যাপারটিকে আরো আকর্ষণীয় করে তুলতে লাইট এন্ড সাউন্ড-এর ব্যবস্থাও রয়েছে। যা সন্ধ্যে সাড়ে ৭টা থেকে রাত সাড়ে ১২ অব্দি চালু রাখা হচ্ছে। চাঙ্গি এয়ারপোর্টের একটা অংশেই এই জুয়েল ফাউন্টেন তৈরী করা হয়েছে, যা তৈরী করতে লেগেছে প্রায় পাঁচ বছর। চার তলা এই জুয়েলের মধ্যে দিয়েই চলাফেরা করছে স্কাই ট্রেন। তাই এখানকার দৃশ্য একেবারে কাছ থেকে উপভোগ করার সুযোগ রয়েছে।
উপরি পাওনা হল, এই জুয়েল ঘুরতে এক পয়সাও এক্সট্রা খরচ করতে হবেনা পর্যটকদের। আগামী মাস থেকে 'ক্যানোপি ওয়াক' নামে একটি হাঁটার জায়গাও খুলতে চলেছে কর্তৃপক্ষ এই জলপ্রপাতের ওপর দিয়ে।
মূলতঃ কলকাতা থেকে সিঙ্গাপুর যেতে সময় লাগে প্রায় চার ঘন্টা। এই সময়টা যাতে পর্যটকরা ভালোভাবে কাটাতে পারেন, সেই কারনে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স তাদের নতুন এয়ারবাস চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই গরমে তাহলে হয়েই যাক টুক করে বিদেশ ভ্রমণ। নতুন এ-৩৫০ এয়ারবাসের মূল বৈশিষ্ট্য হল, এটি বেশ চওড়া। আগের এ-৩৩০ মডেলের চেয়ে নতুন মডেলের এয়ারবাসটির জানলার মাপও কিছুটা বড়। পা রাখার স্পেস কিছুটা বাড়ানো হয়েছে।
বিমান সংস্থার দাবি, জেটল্যাগ কাটাতে এইসব নতুন বৈশিষ্ট যাত্রীদের সাহায্য করবে। কলকাতা থেকে এই বিমান পরিষেবা ৩ জুন থেকে চালু হচ্ছে। এই উপলক্ষ্যে টিকিটের বিশেষ অফার এনেছে ওই সংস্থা। ৩১ মে-র মধ্যে ইকনমি ক্লাসের টিকিট কাটলে যাওয়া-আসা নিয়ে টিকিটের দাম রাখা হয়েছে ১৬,০০০ টাকা। বিজনেস ক্লাসের জন্য যাতায়াত ভাড়া রাখা হয়েছে ৬৬,৪১০ টাকা। যাত্রীরা এই টিকিট এপ্রিল ২০২০'র মধ্যে ব্যবহার করতে পারবেন। বিজনেস ক্লাসে আসন বন্টন করা হয়েছে ১-২-১ ছকে।
জেনে নিলেন তো, কেমন আকর্ষণীয় অফার পাচ্ছেন সিঙ্গাপুর ভ্রমণ উপলক্ষে? তাহলে আর দেরি না করে বেরিয়েই পড়ুন সেখানকার উদ্দেশ্যে।