শিলিগুড়ির ‘বেঙ্গল সাফারি পার্কে’ দুই নতুন অতিথি

পুজোর মরশুমে শিলিগুড়ি পেতে চলেছে নতুন উপহার। শিলিগুড়ির 'বেঙ্গল সাফারি পার্কে' দুই নতুন অতিথি আসতে চলেছে। দেড় বছরের 'রিকা' এবং 'কিকা'-কে দর্শকদের সামনে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বন দফতর। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বছর খানেক আগে শিলিগুড়ির এই বেঙ্গল সাফারি পার্কেই এখানকার রয়াল বেঙ্গল টাইগার 'শীলা' তিনটি শাবকের জন্ম দিয়েছিল। তাদের মধ্যে দু'জন এখন বেশ স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছে। তাই বন দফতর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাদেরকে এবারে জনসমক্ষে নিয়ে আসা যেতে পারে।

                  নতুন তিন শাবকের জন্মের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাদের নাম দিয়েছিলেন রিকা, কিকা এবং ইকা। কিন্তু তিন মাসের মাথায় ইকা পায়ে চোট পেয়েছিল। সেই চোট থেকে সংক্রমণ বেড়ে গিয়ে মৃত্যু হয় ওই শাবকটির। তার পর থেকে বাকি দুই শাবকের প্রতি পার্ক কর্তৃপক্ষের নজরদারি বেড়ে যায়। শাবকদের নজর রাখতে তাদের ডেরার সামনে সিসি টিভি ক্যামেরাও লাগানো হয়েছিল। জানা গিয়েছে, তারা এখন দিব্যি সুস্থ রয়েছে। নিয়মমতো আকার -আয়তনেও বেড়েছে। তারা পার্কের নির্দিষ্ট এলাকায় আপনমনে খাওয়া দাওয়া আর খেলা করতেই মশগুল থাকে। তাই তাদের দেখাশুনো করতে কালঘাম ছুটে যায় বায়োলজিস্ট থেকে শুরু করে চিকিৎসকদের। সকলেই এক বাক্যে স্বীকার করছেন, এই দুই নতুন ছানা যথেষ্ট দুরন্ত হয়েছে।

                  তবে এই দুই রয়াল বেঙ্গল শাবক খাঁচায় বন্দি থাকায় শিকার করে খাওয়ার অভ্যেস করতে পারেনি। এই বিষয়ে তাদের কোনও প্রশিক্ষণও দেওয়া হবেনা। তবে জু-অথরিটির যেমন নিয়ম রয়েছে, তেমন নিয়ম অনুসারে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের এখন দু'বেলা নির্দিষ্ট পরিমাণে মাংস খেতে দেওয়া হচ্ছে। বেঙ্গল সাফারির ডিএফও 'ধর্মদেও রাই' জানান, রয়াল বেঙ্গলের শাবক কিকা এবং রিকা যথেষ্ট সুস্থ রয়েছে। তিনি আশা করছেন, ওই দুই খুদে, পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে। 'আলিপুর চিড়িয়াখানা' ও দার্জিলিং-এর 'পদ্মজা নাইডু জু' -এর পর বাঘ প্রজননের তৃতীয় কেন্দ্র হিসেবে 'বেঙ্গল সাফারি পার্ক' সফল হওয়ার উচ্ছসিত রাজ্যের বনকর্তারা। এ বিষয়ে বলতে গিয়ে ডিএফও জানিয়েছেন, পরবর্তীতে 'এশিয়ান লেপার্ড ক্যাট' আনা হবে। তার প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গেছে। তৈরী করা হচ্ছে বিশেষ খাঁচা।

                  ওই দুই খুদের মধ্যে আরও একটি বিশেষত্ব রয়েছে। দুটির মধ্যে একটি শাবক অর্থাৎ কিকা, রয়াল বেঙ্গল টাইগারের স্বাভাবিক রং  হলুদ-কালোর বদলে সাদা-কালো ডোরা সম্পন্ন বাঘ। কোনও প্রাণী সচরাচর যে রঙের থাকে, তার চেয়ে ভিন্ন রঙের হলে প্রাণিবিজ্ঞানের ভাষায় তা পরিচিত হয় 'এলবিনো' নামে। এক্ষেত্রেও কিকা এলবিনো প্রজাতির বাঘ। তাই তাকে নিয়ে কর্তৃপক্ষের মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই একটু বেশি উৎসাহ রয়েছে। আগামী পয়লা অক্টোবর থেকেই পর্যটকরা দর্শন পাবেন এই দুই রয়াল বেঙ্গল শাবকের। ওই দিন শিলিগুড়ি সাফারি পার্কে উপস্থিত থাকবেন বনমন্ত্রী ব্রাত্য বসুও

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...