ক্লান্তি, অবসাদ প্রভৃতির সমস্যায় জেরবার আজকের মানুষজন। প্রধানত এই সমস্যাগুলিকে মস্তিষ্কের সাথে যুক্ত সমস্যা বলে ধরা হলেও এই সব সমস্যা শুধু মস্তিষ্কেই আটকে নেই আর। এইসব মানসিক সমস্যা জন্ম দিচ্ছে পাচনতন্ত্রের নানা অসুখের। যেমন ফ্যাটি লিভারের সমস্যা। লিভারের চারপাশে অতিরিক্ত ফ্যাট জমার ফলে তৈরী হয় এই সমস্যা।
আমাদের শরীরে দ্বিতীয় বৃহত্তম অঙ্গ হল এই লিভার বা যকৃৎ। সারাদিন ধরে যা খাওয়া হয় তার প্রসেসিংয়ে মুখ্য ভূমিকা গ্রহণ করে এই অঙ্গ। তার সাথে রক্ত থেকে দূষিত পদার্থ নিষ্কাশনের কাজটিও করে এই অঙ্গ। সেই অঙ্গের চারপাশে অল্পস্বল্প ফ্যাট থাকা স্বাভাবিক। কিন্তু স্বাভাবিকের তুলনায় ফ্যাটের পরিমান বেশি হয়ে গেলেই দীর্ঘস্থায়ী যকৃতের সমস্যা হতে পারে। ফ্যাটি লিভারের প্রধান চিহ্ন হলো ক্লান্তি। যথাযথ পরিশ্রম না করেও যদি ক্লান্তি অনুভব করেন তাহলে বুঝতে হবে লিভারের সমস্যা হয়েছে। মোট ৫% এর বেশি পরিমান ফ্যাট জমলে তবেই তা পরীক্ষার সময় ধরা পরে। আলট্রাসাউন্ড, এমআরআই, স্ক্যান প্রভৃতির মাধ্যমে রোগের অবস্থার বিশ্লেষণ করা হয়।
যকৃৎ সাধারণত নিজেই তার শরীরের ক্ষতিগ্রস্থ কোষের পরিবর্তে নতুন কোষ তৈরী করে নেয়। কিন্তু একই সাথে বারবার কোষের মৃত্যু ঘটলে সেই স্থানটিতে আর নতুন কোষ জন্ম নিতে পারেনা ফলে সেখানে একটি বিপজ্জনক ক্ষত তৈরী হয়ে যায় যাকে সিরোসিস বলা হয়ে থাকে। ফ্যাটি লিভারের থেকে ধীরে ধীরে যকৃতে ক্ষত ও সেই ক্ষত থেকে লিভার ক্যান্সার, লিভার সিরোসিস ও নানা যকৃতের রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এই রোগের প্রাথমিক লক্ষণগুলি হলো, ক্লান্তি ও পেটে অস্বস্তি। এছাড়াও পেটে ফোলাভাব, খিদে না পাওয়া, পেটে ব্যাথা, ওজন কমে যাওয়া, রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমান বৃদ্ধি প্রভৃতিও এই রোগের ফলে হতে পারে। অতিরিক্ত পরিমান অ্যালকোহোল পান করা ছাড়াও স্থুলত্ব, রক্তে অতিরিক্ত ফ্যাট, বংশগত প্রভৃতি কারণেও এই রোগ শরীরে বাসা বাঁধতে পারে।