মহাবিশ্ব জুড়ে মুহূর্তে মুহূর্তে ঘটে চলেছে কত কী বিমূর্ত ঘটনা, টিভি-ইন্টারনেট-রেডিও ইত্যাদি সংযোগ মাধ্যমের দৌলতে পৃথিবীটা ক্রমশ ছোট হয়ে আসছে মনে হলেও, তার সিকি ভাগও বোধহয় আমাদের নজরে আসেনা। সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে সেরকমই এক বেনজির ঘটনার কথা।
সবুজের ছায়া ঘেরা পেরুর ছোট্ট একটা পাহাড়ি গ্রাম- ‘প্যারান’। এই গ্রামে সর্বসাকুল্যে সাড়ে তিনশো জন মানুষের বসবাস। অদ্ভুত এক কারনে পেরুর এই গ্রাম এখন সংবাদ নজরে।
এই গ্রামটি সম্পর্কে যে অবাক করা তথ্যটি পাওয়া গিয়েছে তা হল, প্যারানের প্রায় ৭৫ শতাংশ মানুষই অন্ধত্বের শিকার। আরও অনেকেই ক্রমশ হারাচ্ছেন তাঁদের দৃষ্টিশক্তি। যে কারণে এই গ্রামটি ‘অন্ধদের গ্রাম’ বা ‘দৃষ্টিহীনদের গ্রাম’ নামেই অতিপরিচিত।
প্রায় ৩ হাজার ফুট উঁচুতে অবস্থিত এই গ্রামের বেশির ভাগ মানুষই চোখের জিনগত একটি রোগে আক্রান্ত। রোগটির নাম ‘রেটিনাইটিস পিগমেনটোসা’। 'রাতকানা' রোগটির সঙ্গে প্রত্যেকে পরিচিত থাকলেও, এই রোগটির নাম কিন্তু অনেকের কাছেই অচেনা। চক্ষু বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘রাতকানা’ রোগের জন্য প্রধানত দায়ি এই ‘রেটিনাইটিস পিগমেনটোসা’। এর প্রকোপে চোখের ‘টানেল ভিশন’ নষ্ট হয়ে যায়। চোখের ভিতরে রেটিনা নামের যে গুরুত্বপূর্ণ পাতলা মেমব্রেন থাকে, তার প্রধান দুটি অংশ হল রড ও কোণ। এই রড আর কোণ ‘ফটো রিসেপ্টর’র কাজ করে। এই রোগের মাধ্যমে রেটিনার 'রড' ধীরে ধীরে তার কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। রোগটি বিরল না হলেও, ‘রেটিনাইটিস পিগমেনটোসা’র প্রভাবে বিরলতম স্থান হয়ে উঠেছে প্যারান।