১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারি মাস। ঢাকায় পাকিস্তানি সৈন্যদের হাতে মৃত্যু হল ৪ বাংলাদেশী বীর সন্তানের। মৃত্যু হল ৪ জন বাংলা ভাষীর। পাক সৈন্যদের এই ঘৃণ্য কাজের জন্য চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ল বিশ্বজুড়ে। একদিকে এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে আর অন্যদিকে বাংলা মায়ের সেই বীর সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করে সেই দিনটিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃ ভাষা দিবস’ হিসাবে ঘোষণা করল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তার ঠিক ৩৯ বছর পর ঘটে গেল এক ঐতিহাসিক ঘটনা। দক্ষিন আফ্রিকা মহাদেশের এক উপকুলবর্তী এলাকা সিয়েরা লিয়ন। বিশ্বের বৃহত্তম টাইটেনিয়াম ও বক্সাইট উপাদানকারী দেশের মধ্যে একটি। এমন কি স্বর্ণ ও হীরা উৎপাদনেও এগিয়ে সিয়েরা লিয়ন। ১৯৬১ সালে ইউরোপীয় সাম্রাজ্যের হাত থেকে মুক্তি পায় এই দেশ। স্বাধীনতার ঠিক ৩০ বছর পর ১৯৯১ সালে রাষ্ট্রীয় দুর্নীতি ও দেশের সম্পদ নয়ছয়ের জেরে গৃহযুদ্ধে লাগে সিয়েরা লিওনে। আর সেই চাঞ্চল্য আচমকাই তীব্র রূপ ধারণ করলে দেশে অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে। তাই দেশে শান্তি ফিরিয়ে আনতে অভিযান চালায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আর সেই অভিযানের প্রতিনিধি হিসেবে মার্কিনি সৈন্যদের পাশাপাশি সেখানে প্রায় ৬ হাজার বাংলাদেশি সৈন্য পাঠায় রাষ্ট্রসংঘ। টানা ১২ বছর ধরে চলে এই অভিযান। অবশেষে ২০০২ সালে সফল হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই শান্তি রক্ষার অভিযান। বিদ্রোহীদের দেশছাড়া করতে সক্ষম হয় বাংলাদেশি সৈন্যরা। তাই বাংলাদেশী সৈন্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে তৎকালিন রাষ্টপতি আহমেদ তেজান কাবাহ বাংলা ভাষাকে দেশের রাষ্ট্রীয় ভাষার মর্যাদা দেন। তার মানে এই নয় যে সেখানকার আপামর মানুষ স্বাছন্দে বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারে। তবে কোনও সময় যদি আপনি সেই দেশে যান আর তারা যদি জানতে পারে যে আপনি বাঙালি তাহলে আপনার খাতির যত্নের কোনও ত্রুটি রাখবে না সেখানকার মানুষ। তার কারণ বাংলাদেশের বীর সন্তানেদের সেই অবদানের প্রতি আজও কৃতজ্ঞ তারা।