উত্তর কলকাতার সাবেকিয়ানার মধ্যেও কেমন যেন মিশে গেছে আধুনিকতার ছোঁয়া। আসলে যুগ যে গতিতে পাল্টাচ্ছে, তাতে ঐতিহ্য নিয়ে থাকা যেন বড়ই ঝুঁকির। কিন্তু কেউ কেউ নিজেদের ঐতিহ্যকে নিয়েই চলতে পছন্দ করে, ঐতিহ্যকে সঙ্গে নিয়ে চলতে চায়, এগিয়ে যেতে চায়। নতুনকে স্বাগত জানিয়েও কিভাবে পুরাতনকে রাখা যায় তা প্রমাণ করতে চলেছে শ্যামপুকুর আদি সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি।‘জিয়ো বাংলা শারদ সম্মান ২০১৯’-এর পুজোর আড্ডায় জিয়ো বাংলার স্টুডিওতে হাজির শ্যামপুকুর আদি সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি। সঞ্চালক শ্রেষ্ঠার সাথে নিজেদের পুজো নিয়ে কথা বললেন পুজো কমিটির তিন মহিলা সদস্য। এই পুজো আয়োজনে বড় ভূমিকা রয়েছে নারীশক্তি কমিটির, যা পুরোপুরি মহিলাদের নিয়ে তৈরি। আর সেই কমিটিরই সদস্য এই তিনজন। উপস্থিত ছিলেন কমিটির সাংস্কৃতিক সম্পাদক নন্দিনী সেনগুপ্ত, কোষাধ্যক্ষ টুম্পা দাস ও সম্পাদক তুহিনা সাহা।
শতবর্ষ পেরিয়ে গেছে এরকম পুজোর সংখ্যা বেশ কম। শতবর্ষ পেরোনো পুজোর মধ্যে অন্যতম প্রধান এই শ্যামপুকুর আদি সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির দুর্গাপুজো। এই বছর তারা ১০৯ বছরে পড়বে। এত পুরোনো পুজো হয়েও তারা সাবেকি ও থিমের মিশ্রণ করে থাকে। এই বছর তাদের থিমের নাম ‘সবুজায়ন’। পৃথিবীতে যেভাবে সবুজের পরিমাণ কমছে, তাতে পরবর্তী প্রজন্মের জীবনের সংশয় তো থেকেই যায়। আর তাই তুলে ধরতে চেয়েছেন থিমের মধ্যে দিয়ে। তবে প্রতিমা একেবারে সাবেকি ও একচালার হতে চলেছে। প্রতিমা শিল্পী শৈলেন পালের হাত ধরে রুপ পেতে চলেছে মাতৃমূর্তি।এই পুজোর বিশেষত্ব হল এটির সাথে যুক্ত ছিলেন স্বয়ং বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র। ফলে ঐতিহ্যের বড়সড় প্রভাব রয়েছে এখানে। নবমীর দিন পাড়া ও সাধারণ দর্শনার্থীদের সকলকেই ভোগ বিতরণ করা হয় এবং পুজোর চারদিন মাকে ভোগ দেওয়া হয়ে থাকে। আর গত ১২ বছরের রীতি মেনে দ্বাদশীর দিন মাকে বিদায় জানানো হবে।তাহলে ঐতিহ্য ও আধুনিকতার মেলবন্ধন দেখতে আসতেই হবে শ্যামপুকুর আদি সার্বজনীন দুর্গোতসব কমিটির পুজোয়। দমদম কিংবা কবি সুভাষগামী কোনও মেট্রোয় উঠে নামতে হবে শ্যামবাজার মেট্রো স্টেশনে। সেখান থেকে কিছুটা হাটলেই পৌছে যাবেন তাদের পুজোমন্ডপে।