শুধুমাত্র বৈশাখী কবিপক্ষ নয়, তিনি যে জুড়ে আছেন আমাদের সর্বক্ষণে।
সম্প্রতি রবীন্দ্র সদন প্রেক্ষাগৃহে অনুষ্ঠিত হল রবীন্দ্র নৃত্যনাট্য ‘শ্যামা’। আয়োজন করেছিল লন্ডনের দক্ষিণায়ন সংস্থা। কলকাতাস্থিত দক্ষিণীর ইউ.কে শাখা।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই সুদেব গুহঠাকুরতা, পণ্ডিত বিপ্লব মন্ডলকে সম্মান জ্ঞাপন করা হয়।
রবীন্দ্রনাথ ‘শ্যামা’ লিখেছিলেন ১৯৩৯ সালে। কিন্তু তারও আগে ‘পরিশোধ’ কবিতায় লিখেছিলেন ‘শ্যামা’র কাহিনী ।
দক্ষিণায়ন পরিবেশিত ‘শ্যামা’ নৃত্যনাট্যটির পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন ড. আনন্দ গুপ্ত। নৃত্য পরিচালনা করেন দীপ্তাংশু পাল। সঙ্গীত পরিচালনায় পণ্ডিত বিপ্লব মন্ডল। গানে ড. আনন্দ গুপ্ত, রোহিনী রায়চৌধুরী প্রমুখ।
চেনা ছকের বাইরে এসে ‘শ্যামা’ নৃত্যনাট্যটিকে একটু ভিন্নভাবে উপস্থাপিত করা হয়েছিল । মোহিনী আট্টম, কথাকলি, ওড়িশি এবং কত্থক ঘরানার মিশেলে।
শ্যামার ভূমিকায় গার্গী নিয়োগী। ব্জ্রসেন এবং উত্তীয়-এর ভূমিকায় সৌরভ রায় এবং সৌরভ চট্টোপাধ্যায়।
যুবক বজ্রসেনের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয় রাজনর্তকী শ্যামা। তীব্র প্রেম অনুভব করে তার প্রতি। অন্য দিকে শ্যামার প্রতি অনাবিল মুগ্ধতায় কাতর এক তরুণ। নাম তার উত্তীয়। কিন্তু শ্যামা উত্তীয়’র প্রতি কোনও টান অনুভব করে না। তার কামনার পুরুষ বজ্রসেনকে বাঁচাবার বেপরোয়া প্রয়াসে তরুণ উত্তীয়কে ঠেলে দেয় মৃত্যুর মুখে। বজ্রসেনকে চুরির অপবাদ থেকে বাঁচাতে শ্যামা উত্তীয়কে পাঠায় কোটালের কাছে। কোটাল উত্তীয়কে হত্যা করে বজ্রসেনকে মুক্তি দেয়।
শ্যামা বজ্রসেনের প্রেম পূর্নতার পথে পৌঁছবার মুখেই বজ্রসেন জানতে পারে তার কারামুক্তির কাহিনী। নৈতিকতার দ্বন্দ্বে ব্জ্রসেন শ্যামাকে পরিত্যাগ করে।
অনুতাপ, বিরহ, শুভ- অশুভ দ্বন্দ্ব-এর পরিচ্ছন্ন পরিবেশনার সাক্ষী থাকল দর্শকরা। মঞ্চভাবনা, আলো, পোশাক পরিকল্পনা বাড়তি আলাদা করে চোখ টেনে নেয়। যন্ত্রাণুষঙ্গ এবং আবহ সমগ্র অনুষ্ঠানটিতে আলাদা মাত্রা যোগ করেছিল।
অন্য ধারার এই নিবেদন বহুদিন মনে থাকবে দর্শকদের।
অনুষ্ঠানটির গর্বিত ডিজিটাল পার্টনার ছিল জিয়োবাংলা।