হাই জাম্পে রাজ্যস্তরের প্রতিযোগীতায় দ্বিতীয় স্থান অর্জন করল দিনমজুরের মেয়ে শম্পা

বেশ কিছু দিন থেকেই সমাজের প্রান্তিক স্তরের পরিবার থেকে বেশ কিছু প্রতিভাবান ছেলে-মেয়ে উঠে আসছে। তারা বিশেষ করে খেলাধুলার জগতে বেশ ভালো ফল করছে। সাম্প্রতিক কালের স্বপ্না বর্মনের কথাই ধরা যাক। অলিম্পিয়াডে সোনা এনে দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছেন তিনি। তাই নিম্নস্তর থেকেই যখন কোনো প্রতিভা নজরে আসে, তখনই যদি তাকে যথাযথ সুযোগ করে দেওয়া যায়, তাহলে খেলাধুলোর জগতে রাজ্যের যথেষ্ট ভালো ফল আশা করাই যায়। এই রকমই আর এক জন সম্ভাবনাময় প্রতিভার নাম উঠে এল গোঘাটের নকুন্ডা গ্রামের শম্পার হাত ধরে। দিনমজুর মায়ের মেয়ে শম্পা হাই  জাম্পে রাজ্যস্তরে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে। তার সাফল্যে গর্বিত গোঘাটের নকুন্ডা এলাকা। গর্বিত তার স্কুলও। নকুন্ডা কাত্যায়নী হাইস্কুলের কলাবিভাগের ছাত্রী শম্পা ছোটবেলা থেকেই খেলাধুলোয় পারদর্শী। স্কুলে ভর্তির পর সে বিভিন্ন খেলার প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়ে পারদর্শিতার পরিচয় দিয়েছে। বহু বছর আগে থেকেই সে রাজ্য ও  জাতীয় স্তরের খেলায় অংশ নেয়। চলতি বছর নভেম্বর মাসে সে কল্যাণীর মাঠে অনুষ্ঠিত ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে। কিন্তু তার ভবিষ্যৎ নিয়ে স্কুলের শিক্ষকরা চিন্তিত। স্কুলের প্রধান শিক্ষক রামমোহন ভট্টাচার্য্য জানান, শম্পার খেলাধুলা করার মত আর্থিক পরিকাঠামো নেই। ভালো করে খেতে ও পড়তেও পায়না। স্কুলের তরফ থেকে সাহায্য করা হচ্ছে, কিন্তু একেবারে স্থায়ী সমাধান হলে ভালো হয়। অল্পের জন্য ও প্রথম হতে পারেনি। শম্পার বাবা অনেকদিন থেকেই পঙ্গু হয়েছিলেন। ওর মা রিনা সিং স্বামী ও মেয়ের জন্য রাত-দিন পরিশ্রম করে চলেছেন। কখনও ১০০ দিনের কাজ, কখনও স্থানীয় স্কুলে মিড্ ডে মিলের রাঁধুনি আবার কখনও অন্যের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করে দিন কাটান তিনি। ঝিতেবেড়ার দু-কামরার বাড়িতে মা-মেয়ের দিন কাটে।

     এই রকম আর্থিক অবস্থার মধ্যে দিন কাটিয়েও শম্পা ভাল খেলছে, সেটা যথেষ্ট আশাপ্রদ। ভাত-মুড়ি খেয়েই গ্রামের মাঠে প্র্যাকটিস করে শম্পা। জাতীয় স্তরে খেলেই স্থান অর্জন করে আপাতত লক্ষ্য শম্পার। বড় হয়ে মায়ের কষ্ট দূর করতে চায় সে।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...