একটা সময় তাঁকেও সহ্য করতে হয়েছিল বঞ্চনা। তাই তিনি ভালোই অনুভব করতে পারেন বঞ্চনার যন্ত্রনা। সব সময় চেষ্টা করেন অবহেলিত মানুষের সেবা করার। মানবসেবায় অবদানের জন্য ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে বিশ্ব অর্থনীতি ফোরাম সম্মেলনে তাঁকে ‘ক্রিস্টাল অ্যাওয়ার্ড’ দেওয়া হয়। তিনি 'বলি-কিং' শাহরুখ খান। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এবার অ্যাসিড আক্রান্তদের জন্য প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিলেন তিনি।
২০১৭ সালের এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রের সানফ্রান্সিসকো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের বক্তৃতায় শাহরুখ খান বলেন, ‘আমি আমৃত্যু অ্যাসিডে আক্রান্তদের পাশে থাকব। ওঁদের সাহায্য করব। শুধু তা-ই নয়, আমার মৃত্যুর পর মেয়ে সুহানা যাতে ওই দায়িত্ব পালন করে, সে ব্যবস্থাও করে যাব।’ যেমন কথা তেমনই কাজ করে দেখিয়েছেন তিনি।
'মীর ফাউন্ডেশন' নামে একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান গড়েছেন শাহরুখ। ২০১৭ সাল থেকেই প্রতিষ্ঠানটি কাজ করছে। অ্যাসিড হামলার শিকার এবং যেকোনো কারণে পুড়ে যাওয়া মহিলাদের নিয়ে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি। আহত সেইসব মহিলার প্রয়োজনীয় সব চিকিৎসা, আইনি সহায়তা, কারিগরি শিক্ষা প্রদান, পুনর্বাসন ও উদ্দীপ্ত করার জন্য নানা পরামর্শ দেওয়া হয় সেখানে। অ্যাসিডে আক্রান্ত ব্যক্তিদের পাশে দাঁড়ানো এবং তাঁদের স্বাবলম্বী করে জীবনের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনাই প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য।
এ প্রসঙ্গে শাহরুখ জানিয়েছেন, তাঁর বাবার নাম মীর তাজ মোহাম্মদ খান। এই দাতব্য প্রতিষ্ঠানের নাম দিয়েছেন তাঁর বাবার নামেই, ‘মীর ফাউন্ডেশন’। 'ফাদার্স ডে' উপলক্ষে রবিবার সকালে প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইট উদ্বোধন করে তিনি টুইটারে লেখেন, "প্রতিষ্ঠানটি আমার বাবার নামে। অ্যাসিডে আক্রান্ত মহিলাদের সাহায্যের জন্য এই ওয়েবসাইট কাজ করবে। ওয়েবসাইটটির উদ্বোধনের জন্য আজকের 'ফাদার্স ডে'র চেয়ে ভালো দিন আর কী হতে পারত!"
মীর ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইটেও তিনি লিখেছেন, ‘আমাকে সফল হওয়ার অনেক সুযোগ দিয়েছেন আপনারা। আর এবার আমি তা করতে চাই আপনাদের জন্য। মহিলাদের জন্য এমন পরিবেশ তৈরি করতে চাই, যেখানে তাঁরা নিজেদের মতো করে জীবনটাকে সাজাতে পারবেন। আমি মহিলাদের সেই ক্ষমতা দিতে চাই, যাতে তাঁরা নিশ্চিন্তে বাঁচতে পারেন, সুন্দর স্বপ্ন দেখতে পারেন।’
তিনি আরও লেখেন, ‘এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা তাঁদের সহযোগিতা করব, যাঁদের সঙ্গে এই সমাজ খারাপ ব্যবহার করেছে, তাঁদেরকে ফিরিয়ে দিয়েছে। আমাদের যাত্রা শুরু হলো। আমরা আরও শক্তিশালী হব। আমার এই পথচলা অব্যাহত থাকবে।’
২৮ মার্চ অ্যাসিডে আক্রান্ত মেয়েদের সঙ্গে সারা বিকেল কাটান তিনি। এই লড়াকু মহিলাদের কাছ দেখে দেখেছেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছেন, ছবি তুলেছেন, নানা বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন। এরপর তাঁর টুইটার অ্যাকাউন্টে সবার উদ্দেশে দিয়েছেন এক বিশেষ বার্তা। লিখেছেন, ‘সবাইকে অনুরোধ, ঈশ্বরের কাছে আমার এই বোনদের জন্য প্রার্থনা করুন।’