বাবা সামান্য ইলেকট্রিশিয়ান আর মা হোটেলে রুটি তৈরির কাজ করেন| তাদের ছেলে হয়ে আইপিএস অফিসার হলেন সাফিন হাসান| গরিব হলেও ছেলের পড়াশোনার প্রতি কখনো অবহেলা করেননি এই দম্পতি| তাদের বক্তব্য, তাদের সন্তানও তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের মর্যাদা দিয়েছে সম্পূর্ণভাবে| দেশের সর্বকনিষ্ঠ আইপিএস অফিসার হয়ে দেখিয়েছে সে| কনিষ্ঠতম অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপারিন্টেন্ডেন্ট পুলিশ(এএসপি) হয়ে আগামী ২৩ ডিসেম্বর রাজস্থানের জামনগর থানায় কাজে যোগ দেবেন সাফিন|
গুজরাটের পালানপুরে জন্মানো সাফিন চতবেলাতে একজন জেলাশাসককে দেখেন গ্রামবাসীদের সাথে কথা বলে সমস্যার সমাধান করতে দেখেন| সেখান থেকেই তিনি অনুপ্রানিত হন| তিনি জানান, সেই জেলাশাসক গ্রামবাসীদের সাথে খুব সহজভাবেই মিশে গেছিলেন এবং খুব যত্ন নিয়ে তাদের সমস্যার কথা শুনে সমাধান করার চেষ্টা করেছিলেন| তার বদলে গ্রামবাসীদের কাছ থেকে পেয়েছিলেন শ্রদ্ধা ও সম্মান| সেই জেলাশাসককে দেখেই সাফিনের ইচ্ছে জাগে সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করার| ন্যাশনাল ইনস্টিটিউশন অফ ইঞ্জিনিয়ারিং স্নাতক পাশ করার পরেই তিনি ইউপিএসসি পরীক্ষায় বসার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন|
শুধু পরিবার নয়| এই মেধাবী ছাত্রের পাশে দাঁড়িয়েছিল এক প্রতিবেশী পরিবারও| এরপরেই ইউপিএসসি পরীক্ষায় তিনি জায়গা পান ৫৭০ নম্বরে এবং মাত্র ২২ বছর বয়সে ভারতের কনিষ্ঠতম অফিসার হয়ে যান তিনি| ছেলের কৃতিত্বে স্বাভাবিকভাবেই খুশি তার পরিবার| জানা গেছে, সাফিনের বাবা মুস্তাফা হাসান এবং মা নাসিমা বানু একসময়ে কাজ করতেন সুরাটের হিরে ইউনিটে|এরফলে সংসারে পয়সার কোনো অভাব ছিল না| কিন্তু একসময়ে ভাগ্যের চাকা ঘুরতে শুরু করে তাদের| একসাথে কাজ চলে যায় দুজনেরই| সংসারে অর্থের এতটাই অভাব আসে যে খাবার জোগাড় করাটাও অত্যন্ত কষ্টকর হয়ে ওঠে| সেই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে ছেলের পড়াশোনা কিভাবে হবে তা নিয়ে চিন্তায় ছিল সাফিনের পরিবার| এরপরে অনেক জায়গায় ঘুরে ঘুরে শেষমেষ ইলেকট্রিশিয়ানের কাজ জোগাড় করেন সাফিনের বাবা| হোটেলে ও রেস্তোরায় রুটি বানানোর কাজ শুরু করেন সাফিনের মা| সেইসময় প্রতিবেশী পরিবার সাফিনের পাশে দাঁড়ায়| আইপিএস অফিসার সাফিন কিন্তু তাদের ভোলেননি| ইনস্টাগ্রামে তাদের ছবি পোস্ট করে সাফিন পরিচয় করিয়েছেন ‘যশোদা মা’ এবং ‘নন্দ বাবা’ হিসেবে|