পর্যটকদের পছন্দের সাতটি জনপ্রিয় অভয়ারণ্য

অরণ্যেই রয়েছে প্রকৃতির হৃদস্পন্দন। রোদ ঝলমলে দিনে গাছের ডালে বসে থাকা অজানা পাখি হোক বা গাছের আড়ালে লুকিয়ে থাকা রয়েল বেঙ্গল টাইগার। অরণ্য মানেই জীবনের কাছাকাছি। ঋতুতে ঋতুতে বদলে যায় জঙ্গলের গন্ধ। রহস্য-রোমাঞ্চ-অ্যাডভেঞ্চারে ভয় মেশানো ভালোবাসা। দেশে এমনই কিছু অরণ্য রয়েছে যেখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সারা বিশ্বের পর্যটকদের আকৃষ্ট করে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি রোমাঞ্চের অনুভূতি এনে দেবে এই অরণ্য।

দেশের সাতটি জনপ্রিয় অরণ্যের তালিকা তুলে ধরা হল এই নিবন্ধে।


গির অরণ্য, গুজরাট: এশিয়াটিক সিংহের জন্য বিখ্যাত এই অরণ্য। সারা পৃথিবীর মধ্যে একমাত্র অরণ্য যেখানে আজও এশিয়াটিক সিংহের দেখা মেলে। এছাড়াও শৈলশিরা, মালভূমি এবং উপত্যকা বেশষ্ঠিত বিভিন্ন ‌প্রজাতির পাখির, চিতাবাঘ, ল্যাঙ্গুর, শেয়াল, সিভেট এবং আরও অনেক প্রাণী দেখা যায় এখানে। এখানে আসা সঠিক সময় হল নভেম্বর থেকে মার্চ মাস।

RF_gir

আনামালাই টাইগার রিজার্ভ, ভালপারাই: তামিলনাড়ুর ভালপারাই হিল স্টেশনের পাদদেশে অবস্থিত ঘন পাতায় ঘেরা আনামালাই টাইগার রিজার্ভ। আনামালাই টাইগার রিজার্ভ বাঘের জন্য বিখ্যাত। আনামালাই রিজার্ভের পূর্বে পারম্বিকুলম টাইগার রিজার্ভ এবং দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে চিন্নার বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য এবং ইরাভিকুলাম জাতীয় উদ্যান রয়েছে। তবে এই অরণ্যে বাঘ ছাড়াও এশিয়াটিক হাতি, ইঁদুর হরিণ, সিংহ-লেজযুক্ত ম্যাকাকের মতো বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী দেখা মিলবে। এখানে আসার সঠিক সময় হল ডিসেম্বর থেকে জুন।

হরিশাল বন, মহারাষ্ট্র:  মহারাষ্ট্রের মেলঘাট হল একটি ইকো-ট্যুরিজম স্পট, যেখানে প্রাকৃতিক উদ্ভিদ এবং বিভিন্ন বন্য প্রাণী রয়েছে। এখানে মেলাঘাট টাইগার রিজার্ভ আছে। এই বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য বিড়াল, ভাল্লুক, হরিণ ইত্যাদির জনসংখ্যায় সমৃদ্ধ। পর্যটক ত্রিপদভাইজরে লিখেছেন, "সত্যিই সুন্দর জঙ্গল। প্রচুর গাছ রয়েছে এখানে।" এখানে আসার সঠিক সময় হল ডিসেম্বর থেকে জুন।

কাবিনী, কর্ণাটক:  কাবিনী নদীর তীরে অবস্থিত এই অভয়ারণ্য। এখানে অসংখ্য জঙ্গল ট্রেক এবং সাফারি রয়েছে। বন্যপ্রাণী দেখার জন্য জায়গাগুলিতে যাওয়া যেতে পারে সেগুলি হল নাগারহোল জাতীয় উদ্যান, এলিফ্যান্ট সাফারি, কাবিনি ড্যাম ইত্যাদি। নভেম্বর থেকে জানুয়ারি মাসে এখানে আসা যেতে পারে।

RF_Kabini

পেঞ্চ জাতীয় উদ্যান, মধ্যপ্রদেশ: পেঞ্চ নদীর নাম থেকেই এই অভয়ারণ্যের নামকরণ হয়েছে। এই জাতীয় উদ্যানটি পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের অধীনে পড়ে। এখানকার জঙ্গলে সেগুন গাছ ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের গাছপালা দেখতে পাওয়া যায়। তবে এই অরণ্যের মূল আকর্ষণ হল বাঘ। এখানে আসার সঠিক নভেম্বর থেকে মার্চ।

RF_pench
সুন্দরবন, পশ্চিমবঙ্গ: বাংলার সুন্দরবন অভয়ারণ্যটি জনপ্রিয় রয়েল বেঙ্গল টাইগারের জন্যে। এপার বাংলা ও ওপার বাংলায় এই অভয়ারণ্যের বিস্তার রয়েছে। বাঘ দেখার পাশাপাশি, এখানে মোহনা কুমির এবং গঙ্গা নদীর ডলফিনের মতো বিপন্ন প্রজাতির দেখা মিলবে। সুন্দরবন ম্যানগ্রোভ বন বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম এবং চারপাশের দর্শনীয় স্থানে নিজেকে নিমজ্জিত করা সত্যিই একটি অনন্য অভিজ্ঞতা। এখানে আসার সঠিক সময় অক্টোবর থেকে মার্চ।

RF_Sunderban

টিপেশ্বর বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, মহারাষ্ট্র: অভয়ারণ্যটি কেবল তার বন্যপ্রাণীর জন্যই নয়, ইতিহাসের জন্যও প্রশংসিত। প্রায় এক শতাব্দী আগে লাভা এবং বেসাল্টের বিস্ফোরণ ঘটেছিল তার থেকেই এই অভয়ারণ্যটি গঠিত হয়েছিল। এই অভয়ারণ্যটি 'পূর্ব মহারাষ্ট্রের সবুজ মরূদ্যান' নামেও পরিচিত, এখানে বহু চন্দন গাছ ও বাঘ দেখতে পাওয়া যায়। বিভিন্ন বন্যপ্রাণী থাকা সত্ত্বেও অভয়ারণ্যের আশেপাশের গ্রামগুলিতে বহু মানুষ থাকেন। এখানে আসার সঠিক সময় হল অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি।

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...