সারা জীবন ধরে রোজগার যেমন করেছেন, তেমনি সুন্দর একটি শখ লালিত করে তা বাস্তবায়নও করেছেন এক দম্পতি। এই দম্পতি পেশায় চা বিক্রেতা। কিন্তু জীবনের স্রোতে নেমে ভুলে যাননি ছোটবেলার স্বপ্ন । বরং সেই স্বপ্নকে উপলক্ষ্য করে শুধু চা বিক্রি করেই যা উপার্জন হয়, তা নিয়ে বেড়িয়ে পড়েন বিশ্ব ভ্রমণে। বিজয়ন-মোহনার ভ্রমণ ডায়েরি এখন সোশাল মিডিয়ায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলেছে।
বিজয়ন দম্পতি যাদের সাথে ভ্রমণ করে থাকেন তারা প্রত্যেকেই ধনকুবের। অর্থ বিনিময় কেন্দ্রে যখন তারা ৫০০ ডলার ভাঙাতে দেন সেখানে বিজয়ন দেন মাত্র ৫ থেকে ১০ ডলার। অর্থ জমিয়ে কেবল চা-এর দোকানে বসে থাকাটা বিজয়নদের কাছে অর্থহীন। প্রসঙ্গত, ১৯৬৩ সাল থেকে চা বিক্রি করে চলেছেন এই দম্পতি। চা-এর দোকানে রোজ ভিড় করেন বহু মানুষ। অর্থ সঞ্চয়ের জন্য বিজয়ন-মোহনার এই দোকানে নেই কোন কর্মচারী, তাই সবটাই সামলাতে হয় নিজেদের। প্রতিদিন দুজনে ৩০০ টাকা করে জমিয়ে রাখেন ভ্রমণ খাতে। বছরের শেষে যা টাকা জমে তার সাথে ব্যাঙ্ক থেকে কিছু লোন নিয়ে বেড়িয়ে পড়েন ঘুরতে। পরের তিন বছর ধরে সেই লোন শোধ করেন আর আবার টাকা জমানো শুরু করেণ পরবর্তী ভ্রমণের জন্য। প্রসঙ্গত, বিজয়ন যখন ছোট ছিলেন ,তখন বাবার হাত ধরে ঘুরে বেড়িয়েছেন দেশের নানা মন্দির আর তীর্থ স্থানে। সেই স্মৃতি বড় হয়ে তাকে স্বপ্ন দেখিয়েছে বিদেশ ভ্রমণের ইচ্ছেকে। দুবাই, সিঙ্গাপুর, আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, সুইৎজারল্যান্ড, আমেরিকা, পেরু এসব দেশ ইতিমধ্যেই ভ্রমণ করে ফেলেছেন বিজয়ন ও তাঁর স্ত্রী মোহনা। ভ্রমণ পিপাষু বিজয়নকে তার এই ইচ্ছার কথা জিজ্ঞাসা করলে, তিনি জানান, নানা সংষ্কৃতির সংস্পর্শে এলে মন পাল্টে যায়, এটাই প্রাপ্তি। চায়ের প্রতি ভালবাসা আর উচ্চ দৃষ্টিভঙ্গির জীবনবোধ এই দম্পতির মূল পুঁজি। সত্তরোর্ধ এই দম্পতি নিজেদের মনের খোরাক পান এই রকম ভ্রমণের মাধ্যমে।