পূর্ব ভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন হল হাওড়া স্টেশন। সারা দেশের সঙ্গে যোগসূত্র স্থাপনের ক্ষেত্রে এই স্টেশনের ভূমিকা অনেকখানি। রেলের সুরক্ষা বলের কর্মীরা স্টেশনের সম্পত্তি ও যাত্রীদের নিরাপত্তার প্রাথমিক দায়িত্বে রয়েছেন। যাত্রীদের নিরাপত্তা দিতে সব সময়েই দিন বদলের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নতুন নতুন ব্যবস্থা গ্রহণ করে আরপিএফ। নাশকতামূলক ঘটনা এড়ানোর জন্য বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে আবার। হাওড়া স্টেশন দিয়ে যাতায়াত করা লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রত্যেকদিন পরীক্ষা করা সম্ভব নয়। তাতে সমস্যা বাড়বে এবং অনেক সময় নষ্ট হবে। প্রচুর নিত্যদিনের যাত্রীও যাতায়াত করেন এই স্টেশন দিয়ে।
কমপক্ষে যাত্রীদের সঙ্গে থাকা ব্যাগ যাতে সবকটি পরীক্ষা করা যায় তার জন্য বসছে দুটি স্ক্যানার। আগামী দিনে আরও ছ'টি স্ক্যানার বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এ ছাড়াও যাত্রীদের স্টেশনে পৌঁছতে বা নিয়ে যেতে যে সমস্ত গাড়ি আসে, সেগুলো স্টেশনের নিউ কমপ্লেক্স বা ওল্ড কমপ্লেক্সের দু'টি ক্যাব রোডে রাখার ব্যবস্থা হয়েছে। প্রচুর গাড়ি এই ক্যাব রোড দু'টির দু'পাশ দিয়ে দাঁড়ায়। সেখানে গাড়িগুলোর জিনিস রাখার ডিকি পরীক্ষা করা হয়। এতদিন এগুলো আন্ডার কার ইন্সপেকশন মিরর দিয়ে পরীক্ষা করে দেখা হত, গাড়ির নিচে সন্দেহজনক কিছু আছে কি না। আগামী দিনে হাওড়া স্টেশনের পুরোনো ও নতুন কমপ্লেক্সের ক্যাব রোড দু'টিতেই বসছে 'আন্ডার ভেহিকেল স্ক্যানার' মেশিন। গাড়ি নির্দিষ্ট জায়গায় এসে দাঁড়ালেই গাড়ির নিচের ছবি তোলার পাশাপাশি অস্বাভাবিক কোনোকিছুর অস্তিত্ব জানিয়ে দেবে এই বিশেষ যন্ত্রটি। এ ছাড়াও রেজিস্ট্রেশন নম্বর প্লেটের ছবি এবং চালকের ছবিও জমা হয়ে যাবে সার্ভারে। এতদিন এই ব্যবস্থা ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে হত, এখন তার থেকে অনেক উন্নত পদ্ধতিতে কাজ করা হবে। এতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার হবে, সে বিষয়ে আশাবাদী আরপিএফ-এর সিনিয়র ডিভিশনাল সিকিউরিটি কমান্ড্যান্ট রজনীশ কুমার ত্রিপাঠি। হাওড়া আরপিএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, রাস্তার নিচে বসানো থাকবে মেশিনটি, কোনো গাড়ি তার ওপরে এসে দাঁড়ালেই সেই গাড়ির নিচের অংশ স্ক্যান করে নেবে এই মেশিন। আগামী দিনে আরও সিসি ক্যামেরা লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে। যার সাহায্যের জন্য গড়ে তোলা হচ্ছে ইন্টিগ্রেটেড সিকিউরিটি সিস্টেম। এভাবেই হাওড়া স্টেশনকে নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে দেওয়া হচ্ছে, যাতে যত বেশি সম্ভব নাশকতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায়।