সপ্তদশ শতাব্দীর তৈরি গোপন সুড়ঙ্গপথ পাওয়া গেল ব্রিটিশ পার্লামেন্ট হাউস অফ কমন্স-এর নিচে। ৩৬০ বছরের পুরোনো এই গোপন সুড়ঙ্গপথটি আবিষ্কৃত হল। ঐতিহাসিকরা হাউস অফ কমন্স-এর সংস্কার করার সময় এটি আবিষ্কার করেন। ১৬৬০ সালে রাজা দ্বিতীয় চার্লসের অভিষেকের জন্য এই বিশেষ পথটি তৈরি হয়েছিল, যাতে অতিথি আপ্যায়নে সুবিধে হয়। সুড়ঙ্গ পথটির বিষয়ে বলতে গিয়ে ঐতিহাসিক লিজ হ্যালাম স্মিথ জানান, এখানে ওয়েস্টমিনিস্টার হলের পেছনে প্রবেশ পথের নকশা খুঁজে পাওয়া গেছে। পরবর্তীতে সেখানে সাড়ে ১১ ফুটের একটি কাঠের দরজা পাওয়া যায়। দুটো দরজার মধ্যে ছিল ছোট্ট একটি ঘর। সেখান থেকে সরাসরি রানীর দরবারে যাওয়া যেত।
বোমার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত অংশগুলি মেরামতির জন্য ১৯৫০ সালে এই পথটি খোলা হয়েছিল। কিন্তু মেরামতি হয়ে যাওয়ার পর আবার তা সিল করে দেওয়া হয় এবং সাধারণ মানুষের গোচরে আসা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় খবরটি যথারীতি চাপা পড়ে যায়। পার্লামেন্টের আর্কিটেকচার এবং হেরিটেজ টিমের ঐতিহাসিক পরামর্শদাতা লিজ হ্যালাম স্মিথ জানান, এটা যথেষ্ট বিস্ময়ের যে এতদিন পর এই সুড়ঙ্গপথ আবিষ্কৃত হল এবং ওয়েস্টমিনিস্টারে আমাদের জন্য হয়ত আরও অনেককিছু সিক্রেট অপেক্ষা করে আছে। ওয়েস্টমিনিস্টার হলের একদিকে একটি চিহ্ন রয়েছে, যা দেখে বোঝা যায়, সেখানে একসময় রাস্তা ছিল, কিন্তু সে সম্বন্ধে এখনও পরিষ্কার নয়। অন্য দিকে গোটা এলাকা জুড়ে রয়েছে কাঠের প্যানেল।
ডঃ হ্যালাম স্মিথ এই সুড়ঙ্গটি আবিষ্কার করেন। পার্লামেন্টের ভেতরে কাঠের প্যানেলের যে অংশ রয়েছে, তার মধ্যেই কোথাও সুড়ঙ্গ পথের ঠিকানা পাওয়া যাবে, তা তিনি জানতে পেরেছিলেন সুইনডনের ঐতিহাসিক ব্রিটিশ আর্কাইভে অবস্থিত প্রায় ১০,০০০ বিভিন্ন রকম তথ্যের মাধ্যমে। হ্যালাম খুব খুঁটিয়ে পর্যবেক্ষন করেছিলেন কাঠের প্যানেলগুলি। তার মধ্যে একটি ছোট্ট গর্তের মধ্যে থেকেই সেই দরজা খোলার সন্ধান পেয়ে যান। তাঁরা ভেতরে বহুদিনের পুরোনো গ্রাফিতি খুঁজে পেয়েছেন। এছাড়াও আরও আশ্চর্যের বিষয় হলো ওই টিম ভেতরে একটি প্যাসেজে আলো জ্বলতে দেখেন। সম্ভবত ১৯৫০ সালে সংস্কারের সময় থেকেই ওই বাল্বটি জ্বলছে। সমস্ত কিছু দেখে তাঁরা নিশ্চিত সেখান থেকে আরও কিছু বিস্ময়কর তথ্য পাওয়া যাবে।