কলকাতার স্কটিশ চার্চে পালিত হল 'শতবর্ষে মৃণাল সেন’, ছিলেন বিখ্যাত অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী

কিংবদন্তি মৃণাল সেন, বাংলাদেশের একজন উদ্ভাবনী ছবি পরিচালক, সিনেমা শহর কলকাতা থেকে নিজের আদর্শ সিনেমা তৈরি করেছিলেন। তার সৃষ্টির ছবি সাধারণ মানুষের জীবনের গল্প নিয়ে আলোচনা করে এবং তার কাজের মাধ্যমে বাংলা সিনেমা বিশ্বে গর্বিত করে তৈরি করেছে। তাঁর সেই বিখ্যাত চলচ্চিত্রগুলি সামাজিক এবং রাজনৈতিক সমস্যাগুলির উপরেই হত। সেই কাজের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছেন তিনি। বলা হয়, শুধু পরিচালক নন, মৃণাল সেন আদতেই একজন স্টারমেকার। একের পর এক সেই নবাগতদের তুলে এনে প্রতিষ্ঠিত করেছেন তিনি। ২০১৮ সালে মৃণাল সেন এই জগত ছেড়ে চলে গেলেও, চলচ্চিত্র জগতে একটি অমূল্য সম্পদের রূপে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। বাঙালি তাঁকে আজও মনে রেখেছে তাঁর সৃষ্টির মধ্যে দিয়ে।

mith1

তরুণ মৃণাল পড়াশোনা করেছেন কলকাতার বিখ্যাত স্কটিশ চার্চ কলেজে। সেখানে তিনি পড়াশোনার পাশাপাশি রাজনীতি নিয়েও চর্চা করেছেন এবং পরবর্তীকালে কলেজের প্রয়োজনে তিনি তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।

এবার সেই কলেজেই পালিত হল মৃণাল সেনের জন্মশতবর্ষ। ১০ই সেপ্টেম্বর, রবিবার, স্কটিশ চার্চ কলেজ এবং কলেজের ফর্মার স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন মিলে আয়োজন করেছিল 'শতবর্ষে মৃণাল সেন’। সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কলেজের প্রাক্তনী এবং বিশিষ্ট অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী। মিঠুন ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বহু বিশিষ্ট লোক সহ কলেজের বহু প্রাক্তনী, যেমন শতরূপা সান্যাল, কাজী মাসুম আখতার, শিলাজিৎ মজুমদার, অনামিকা সাহা।

স্কটিশ চার্চ কলেজের অধ্যাপিকা শ্রেয়া সেনের কণ্ঠে 'ভারত আমার ভারতবর্ষ' মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। কলেজের অধ্যক্ষা ড. মধুমঞ্জরী মণ্ডল এই প্রসঙ্গে বলেন যে এই ভাবনাটা আসে সমরেশ মজুমদারের সঙ্গে কথা বলার পর। তিনি সমরেশ মজুমদারকে প্রয়াণের আগে বলেছিলেন কলেজ তাঁকে সম্মানিত করতে চায়। তবে, তিনি অভিমান করে আসেনি। তিনি বলেছিলেন, ‘যখন পাওয়ার কথা ছিল, তখন ডাকেনি কলেজ’। এই ঘটনা পর থেকেই অধ্যক্ষা ড. মধুমঞ্জরী মণ্ডল ঠিক করেন কলেজের স্বনামধন্য প্রাক্তনীদের নিয়ে পালন করা হবে বিশেষ দিন। তারপরেই তারা পরিকল্পনা করে 'শতবর্ষে মৃণাল সেন ' অনুষ্ঠানটি নিয়ে।

অনুষ্ঠানে কলেজের উপাধ্যক্ষ ড. সুপ্রতিম দাস মৃণাল সেনের চলচ্চিত্র ও তাঁর সৃষ্টি নিয়ে আলোচনা করেন। তারপর মিঠুন চক্রবর্তী তাঁর কলেজ জীবনের বহু স্মৃতিকথার উল্লেখ করেন এবং সেই সঙ্গে তার সমকালীন বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গেও কলেজ জীবনের সুখ দুঃখের কথা ভাগ করে নেন। সেখানে তিনি কীভাবে এক সাধারণ পড়ুয়া থেকে রাজনীতি, কলেজ ভোট এবং সেসব পেরিয়ে একদিন মৃণাল সেনের ছবির নায়ক হয়ে গিয়েছিলেন। সবটাই তিনি বলছিলেন। দুই বিশ্ব বিখ্যাত বাঙালির কাহিনীতে মগ্ন হয়ে গিয়েছিলেন দর্শকেরা। কলেজের প্রাক্তনীরা তাঁদের প্রিয় অভিনেতাকে সামনে পেয়ে বহু প্রশ্ন করেন। সেগুলির সব উত্তরই হাসিমুখেই দিয়েছিলেন মিঠুন। এই বিশেষ অনুষ্ঠানের মধ্যমণি ছিলেন তিনিই। তাঁকে ঘিরেই সবকিছু।

এই পুরো অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন কলেজের প্রাক্তনী, বিশিষ্ট চিত্র পরিচালক, লেখিকা শতরূপা সান্যাল। 'শতবর্ষে মৃণাল সেন'- অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল মৃণাল সেনের ছবির এক্সিবিশন। স্কটিশ চার্চ কলেজের প্রাক্তনী, আলোকচিত্রশিল্পী সুপ্রিয় নাগের সংগ্রহে থাকা মৃণাল সেনের ২০টি ছবি সকলের সামনে তুলে ধরেছেন। তিনি প্রায় তিন দশক ধরে এই ছবিগুলি তুলেছিলেন।এছাড়াও দেখানো হয় দেবযানী লাহা ঘোষের তথ্যচিত্র।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...