দুরের গ্রহে এবার অতি সহজেই পাঠানো যাবে বার্তা

 

কি ভাবছেন? কোনো নতুন সিনেমা আসছে? না, হৃত্বিক রোশনের কোনো নতুন সিনেমা নিয়ে কথা হচ্ছে না| ‘কোই মিল গয়া’ সিনেমারও আর কোনো সিকুয়েল আসছে না| এবারে যা হচ্ছে তা একেবারে বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতেই হচ্ছে| সম্প্রতি জানা গেছে, যেভাবে সারা বিশ্বের যেকোনো জায়গার মধ্যে বার্তা পাঠানো খুব সহজ হয়ে গেছে, সেরকমই এবার ব্রহ্মান্ডের বাকি অংশের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করাও খুব সহজ হতে চলেছে|

ইসরোর বিজ্ঞানীগণ হঠাতই সামনে এনেছেন এক বিস্ফোরক তথ্য| তারা জানিয়েছেন, ইসরোর পরীক্ষাগারে রয়েছে একটি বোতাম যা টিপলে পৃথিবী থেকে ৪ আলোকবর্ষ দুরে থাকা একটি নক্ষত্রমন্ডলে অ্যালার্ম বাজতে শুরু করবে| ‘আলফা সেনটাওরি’ নামক এই নক্ষত্রমন্ডলটিতে বার্তা পৌঁছাতে আগে যেখানে সময় লাগতো ৪ বছরেরও বেশি সেখানে এখন চোখের নিমেষেই চলে যাবে সেই সংকেত|

ডেনমার্কের টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক সম্প্রতি জানিয়েছেন, একটি গ্রহে থাকা কম্পিউটারের মধ্যে থাকা চিপ এবং অন্য গ্রহে থাকা কম্পিউটারের চিপের মধ্যে খুব সহজেই এখন যোগাযোগ স্থাপন করা যাবে| এরফলে লক্ষ কোটি আলোকবর্ষ দুরে থাকা ভিনগ্রহও অত্যন্ত কাছে বলে মনে হবে|

ভিনগ্রহ বা ব্রহ্মান্ডের বাকি অংশের সাথে যোগাযোগ করার জন্য বিজ্ঞানীদের প্রয়োজন শুধুমাত্র দুটি সিলিকন চিপ এবং ‘ফোটন’ কণা| আমরা সকলেই জানি, আলোক কণার আরেক নাম ফোটন কণা| একটি ১০ মিটার দীর্ঘ সংযোগকারী তারের মাধ্যমে একটি সিলিকন চিপ থেকে বার্তা অন্য একটি সিলিকন চিপে পাঠানো খুবই সহজ হয়েছে| বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, এর আগে কখনো এত কম সময়ে বার্তা পাঠানো যাবে এই কথা ভাবা যায়নি| এই গবেষণায় অংশগ্রহন করেছে ব্রিস্টল ইউনিভার্সিটিও| এই ইউনিভার্সিটির একজন গবেষক জানিয়েছেন, তাদের এই পরীক্ষায় একটি কম্পিউটার চিপ থেকে ৯১ শতাংশ দুরে থাকা অন্য একটি কম্পিউটারে থাকা চিপের সাথে যোগাযোগ তৈরী করা গেছে| বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই পরীক্ষা সম্পূর্ণভাবে সফল হলে এর ফলে কোয়ান্টাম কম্পিউটিং আরও সহজ ও দ্রুততর হয়ে যাবে|

এলাহাবাদের হরিশ্চন্দ্র রিসার্চ ইনস্টিটিউট-এর পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক উজ্জ্বল সেন জানিয়েছেন, এর আগে যেহেতু এত দুরে থাকা কোনো কম্পিউটারের চিপের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করা যায়নি তাই স্বাভাবিকভাবেই এই আবিষ্কার যুগান্তকারী| দ্বিতীয়ত, এত কম সময়ে এত বেশি বার্তা এর আগে পাঠানো সম্ভব হয়নি| যদিও বা এর আগে বার্তা পাঠানো যেত তাহলে সেই খবরের মাত্র ২ থেকে ৩ শতাংশ খবর অন্য কম্পিউটারে যেত| প্রসঙ্গত, এই ঘটনাটিকেই বিশ্ববরেন্য বিজ্ঞানী আইনস্টাইন ‘স্পুকি অ্যাকশন’ বা ‘ভুতুড়ে কান্ডকারখানা’ বলে ব্যক্ত করেছিলেন|বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এটি আসলে কোনো ভুতুড়েকান্ডকারখানা নয়| বিজ্ঞানের ভাষায় একে ‘কোয়ান্টাম টেলিপোর্টেশন’ বলে| এরফলে খুব সহজেই ভিনগ্রহে যাওয়ার রাস্তাও ধীরে ধীরে উন্মুক্ত হবে বিজ্ঞানীদের কাছে|             

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...