এই তীব্র গরমে মিড ডে মিলে পড়ুয়াদের জন্য রয়েছে স্কুলের গাছের আম দিয়ে ডাল, উচ্ছে ও ফল

স্কুলের গাছে অনেক আম হয়েছিল। কিন্তু সেই আমগুলো কি করা যায়? প্রথমেই মাথায় আসেনি। তবে, পরে এই তীব্র গরমে সেই আমগুলো বেশ কাজে দিয়েছে নারায়ণদাস বাঙুর মেমোরিয়াল মাল্টিপারপাস স্কুলে। এমনটাই জানাচ্ছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।

জানা গিয়েছে স্কুল পড়ুয়াদের জন্য মিড-ডে মিলে প্রায় রোজই ডাল করা হয়। ফলে, এই গরমে, স্কুলের সেই গাছের কাঁচা আমগুলি মিশিয়ে ডাল বানাচ্ছেন মিড-ডে মিলের রাঁধুনিরা। ফলে, এখন পড়ুয়াদের দেওয়া হচ্ছে কাঁচা আম দেওয়া টকডাল, আলু ও ডিম সেদ্ধ দিয়ে ভাত।

স্কুল কর্তৃপক্ষদের থেকে শোনা যাচ্ছে যে এই খাবার বেশ পছন্দ হয়েছে সমস্ত পড়ুয়াদের। আর সেই জন্য একটু বেশিই খেয়ে ফেলছে তারা।

এই বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় বড়ুয়া জানিয়েছেন যে তাঁরা ভেবেছেন এই তীব্র দাবদাহে মিড-ডে মিলে যতটা সম্ভব সহজপাচ্য খাবার দেওয়া হবে। তিনি আরও জানিয়েছেন যে এই ধরণের হাঁসফাঁস করা গরমে অনেক পড়ুয়াই খেতে চাইছে না। আর এ বার স্কুলের আম গাছে প্রচুর আম হয়েছে। তাই পড়ুয়াদের জন্য সেই আম দিয়েই আমডাল করা হয়েছে।

ওই স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়া দীপ্তিনীল রায়, চতুর্থ শ্রেণির শেখ আতিফ আলিরা জানিয়েছে যে তাদের অন্য ডালের থেকে আমডাল খেতে বেশি ভাল লাগে। তাই স্কুলের মিড-ডে মিলে এখন যে খাবার পাচ্ছে, তা বেজায় পছন্দ হচ্ছে তাদের।

Mid Day Meals For Students

অন্যদিকে, সন্তোষপুর ঋষি অরবিন্দ বালিকা বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষিকা সর্বাণী সেন জানিয়েছেন যে মিড-ডে মিলে স্কুলের বাগানের ফলনও বেশ কাজে আসছে তাঁদের। স্কুলের গাছের পাতিলেবু থেকে উচ্ছে, বেদানা, এখন সবকিছুই পাতে পড়ছে পড়ুয়াদের। তিনি বলেছেন যে ডালে পাতিলেবু দিয়ে খেলে গরমে ভাল লাগে। এছাড়া তাঁদের স্কুলে বেদানা গাছেও ভাল ফলন হয়েছে এইবার। তাই মিড-ডে মিলে বেদানার চাটনি করার পরিকল্পনা করেছে। এছাড়া বাগানের উচ্ছে দিয়ে করা হবে তেতোর ডাল।

তিনি আরও জানিয়েছেন যে শিক্ষা দফতর থেকে সাপ্তাহিক মিড-ডে মিলের মেনু ঠিক করা থাকে। তবে এই প্রবল গরমে তাঁরা যতটা সম্ভব হালকা খাবার দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে পড়ুয়াদের জন্য। 

তবে, শহরে অনেক স্কুলেই নিজশ্ব রান্নাঘর নেই। সেই জন্য স্বনির্ভর গোষ্ঠী শিক্ষা দফতরের নির্দেশ মতো মিড-ডে মিলের খাবার তৈরি করে এবং সেই খাবারই একাধিক স্কুলকে পাঠানো হয়।

মিত্র ইনস্টিটিউশনের ভবানীপুর শাখা, যোধপুর পার্ক বয়েজ স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন যে তাঁরা ওই গোষ্ঠীর কর্মীদের বলছেন যে যতটা সম্ভব কম তেল-মশলা দিয়ে রান্না করতে। এছাড়া আম বা উচ্ছে দিয়ে ডালের মতো পদ করতে বলা হয়েছে।

সাধারণত প্রতি শনিবার মিড-ডি মিলে খিচুড়ি দেওয়া হয় পড়ুয়াদের। তবে এই গরমে সেই খিচুড়ির বদলে অন্য কোনও সহজপাচ্য পদ রান্নার কথাও বলবেন তাঁরা।

অন্যদিকে, জনস্বাস্থ্য বিষয়ক চিকিৎসক অনির্বাণ দলুই জানিয়েছেন যে আমডাল সহজপাচ্য খাবার হলেও কাঁচা আম ডালে দিয়ে রান্না করলে আমের মধ্যে থাকা ভিটামিন সি-র গুণাগুণ নষ্ট হয়ে যায়। তার থেকে কাঁচা খাওয়া অথবা ভাত-ডালের মধ্যে লেবুর রস দিয়ে খেলে, সেটায় ভিটামিন সি-র গুণাগুণ বজায় থাকে। তবে এই গরমে দেখতে হবে যেন কোনও ভাবে রান্না নষ্ট না হয়ে যায়। মিড-ডে মিল রান্না করে তা যতটা তাড়াতাড়ি সম্ভব গরম গরম পরিবেশন করতে হবে এবং খাবার হতে হবে সহজপাচ্য। এছাড়া খিচুড়ি খেলেও বেশি মশলা দিলে চলবে না। ফলে, কম তেল-মশলার খিচুড়ি পড়ুয়াদের দেওয়াই যেতে পারে।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...