ট্রেনের বিভিন্ন রকম পরিবর্তন হচ্ছে। নতুন ধরণের কোচ আসার সঙ্গে সঙ্গে নতুন ধরণের ট্রেনও উপহার পাচ্ছি আমরা। তা সে বুলেট ট্রেনই বলুন, ইঞ্জিনবিহীন ট্রেনই বলুন অথবা পাহাড়ি অঞ্চলের ভিস্তা ডোম কোচের ট্রেন। তেমনি বাস পরিবহনেও এসেছে বেশ কিছু পরিবর্তন। কলকাতায় চালু হয়েছে নতুন বেশ কিছু বাস, চালু হয়েছে নতুন বেশ কয়েকটি এসি বাস তথা ইলেকট্রিক বাস। কলকাতার পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলাতেও বাস পরিষেবার উন্নতি ঘটানো হয়েছে। যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দের ব্যাপারটি মাথায় রেখে দক্ষিণবঙ্গ পরিবহণ সংস্থা রাজ্যের বেশ কয়েকটি শহরে বাস টার্মিনাস তৈরী করেছে ও করছে। অন্যান্য পরিকাঠামোকেও ঢেলে সাজানো হচ্ছে। এইভাবে বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে দক্ষিণবঙ্গ পরিবহণ সংস্থা যাত্রী সংখ্যাও বাড়াতে সক্ষম হয়েছে। তাই এই আর্থিক বছরে তাদের আয় দাঁড়িয়েছে রেকর্ড সংখ্যায়।
গত বছরের তুলনায় এবার অতিরিক্ত ৩৪ কোটি টাকা আয় বেড়েছে ওই সংস্থার। ২০১৭-১৮ আর্থিক বর্ষে দক্ষিণবঙ্গ পরিবহন সংস্থার আয় ছিল ১৩৭ কোটি টাকা। ২০১৮-১৯ আর্থিক বর্ষে সেই আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭১ কোটি টাকা। সংস্থার এমডি গোডেল কিরণ কুমার জানান, যাত্রী সংখ্যা আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। সব মিলিয়ে সংস্থার প্রায় ৯০০ টি বাস রয়েছে। যদিও সব বাস রুটে চলেনা। কিছু রিজার্ভে রাখতে হয়। চলতি বছরে বেশ কিছু সিএনজি বাস চালু করা হয়েছে। এগুলি গ্যাসের মাধ্যমে চলে। আগামী দিনে আরও বেশি সংখ্যক বাস সিএনজি গ্যাসে চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিবহন দফতর। বলাই বাহুল্য, এগুলি পরিবেশ বান্ধব। দুর্গাপুর ও আসানসোলে সিএনজি গ্যাসের পাম্পের সংখ্যা বাড়ানোর জন্যও পরিবহন সংস্থা উদ্যোগ নিয়েছে।
ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া এবং বীরভূম জেলায় বেশ কিছু নতুন রুট তৈরী হয়েছে। সেই নতুন রুটগুলিতে যাত্রীসংখ্যা ভালোই হচ্ছে। আগের তুলনায় বাস পরিষেবা যথেষ্ট ভালো হয়েছে বলেই জানালেন বাসের যাত্রীরা। নির্ধারিত সময়ে বাস ছাড়ে এবং গন্তব্যে পৌঁছয়। কখনও নির্ধারিত সময়ের আগেও গন্তব্যে পৌঁছনো যায় বলে জানাচ্ছেন যাত্রীরা, প্রায় কোনো বাসই বাতিল হয়না। যাতায়াতও আগের তুলনায় অনেক আরামদায়ক হয়ে গেছে। তাই সাধারণ কামরার ট্রেনের চেয়ে বাসের ভাড়া বেশি হলেও এখন অনেকেই বসে যাতায়াত করতে চাইছেন। সিএনজি চালিত বাসগুলি পরিবেশ বান্ধব হওয়ায় এবং উন্নত পরিকাঠামোর জন্য যাতায়াতের সময় ঝাঁকুনি কম হয়। বেশ কিছু রুটে এসি বাস ও চলছে। যদিও বাসের ভাড়া বাড়ানো হয়েছে, তবুও যাত্রীদের কোনো ক্ষোভ নেই। কারন যেহেতু উন্নত পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে, তাই একটু বেশি ভাড়া হওয়া সত্ত্বেও যাত্রীরা অসন্তোষ প্রকাশ করছেন না। পরিবহন সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, আরও কয়েকটি নতুন রুটে বাস চালানো হবে। এছাড়া রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে যাত্রীদের সুবিধার জন্য বেশ কয়েকটি বাস টার্মিনাসও তৈরী হবে। আসানসোলের কালাপাহাড়িতে বাস টার্মিনাস তৈরির কাজ শেষের পর্যায়। দুর্গাপুরে ইন্টারস্টেট টার্মিনাস তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তার জমি চিহ্নিত করা এবং ডিপিআর তৈরির কাজ চলছে। বীরভূমের রামপুরহাটেও বাস টার্মিনাস তৈরী করবে পরিবহন সংস্থা। এর মাধ্যমেই বোঝা যাচ্ছে, শুধু আয় বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়েই ভাবছেনা দক্ষিণবঙ্গ পরিবহন সংস্থা। যাত্রীদের যাতে আরও ভালো পরিষেবা দেওয়া যায়, সেদিকেও নজর রাখছে সংস্থা। তাই স্বাভাবিকভাবেই যাত্রীরা খুশি হয়ে বাস যাত্রাকেই বেছে নিচ্ছে।