কাজের সময় থেকে শুরু করে অকাজের সময় সবকিছুতেই আমাদের একটা জিনিস কাছে চাই তা হলো হেডফোন। হেডফোন ছাড়া একটা গোটা দিন কাটাতেন যেন মানুষের কাছে বেশ কঠিন একটি কাজ। নিশ্চই আপনিও সারাদিনের মধ্যে বেশ খানিকটা সময় হেডফোনের ব্যবহার করেন? তাহলে এই আর্টিকলটি আপনার জন্যই। অতিরিক্ত সময় হেডফোন ব্যবহার করলে কি কি ক্ষতি হতে পারে আর কেনই বা চিকিৎসকেরা অতিরিক্ত সময় ধরে হেডফোন ব্যবহার করতে বারণ করেন চলুন তা জেনে নেওয়া যাক..........
আমরা অনেকেই পারিপার্শিক আওয়াজ এড়াতে হেডফোনের শরণাপন্ন হয়ে থাকি। রাস্তাঘাটে যানবাহনের অতিরিক্ত শব্দ থেকে শুরু করে অফিস টাইমে পাশে বসা সহকর্মীর কূটকচালি, সবটা থেকে বাঁচার জন্যই আজকাল হেডফোনের ব্যবহার এতটা বেড়েছে। শান্তমনে কাজ করার জন্যও অনেকে হেফোনের ব্যবহার করে থাকেন। অনেকক্ষেত্রে দেখা যায়, অনেক ছাত্রছাত্রীই পড়ার সময় বিশেষ করে অঙ্ক করার সময় হেডফোনের দ্বারস্থ হয়ে থাকে। এতে নাকি মনোসংযোগ ভালো হয়। হতেই পারে। এক একজনের এক একরকম অভ্যেস থাকে। কিন্তু দীর্ঘকালীন যেকোনো অভ্যেসই ক্ষতিকর প্রমাণিত হতে পারে। চলুন আজ জেনে নেওয়া যাক দীর্ঘদিন ধরে অতি উচ্চ স্তরের শব্দযুক্ত হেডফোনের ব্যবহারের ফলে কি কি ক্ষতি হতে পারে।
১) শ্রবনে সমস্যা- হেডফোন ব্যবহারের ফলে যেহেতু শব্দ সরাসরি কানে প্রবেশ করে তাই ৯০ ডেসিবেলের বেশি জোরে শব্দ যদি কানে সরাসরি প্রবেশ করে তাহলে শ্রবণের সমস্যা ধীরে হিরে দেখা দিতে পারে।এইভাবে যদি দিনের পর দিন চলতে থাকে তাহলে শ্রবণযক্তি চিরতরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। চিকিৎসকেরা এক্ষেত্রে জানাচ্ছেন, হেডফোন ব্যবহার যদি করতেই হয় তাহলে অল্প ভলিউমে গান শোনার অভ্যেস করা উচিৎ।তাছাড়া একটানা কানে হেডফোন লাগিয়ে রাখা উচিৎ নয়। কিছুক্ষন গান শোনার পর কিছুটা সময় বিশ্রাম নেওয়া উচিত।
২) কানের ইনফেকশন- আমরা অনেকেই হেডফোন আনতে ভুলে গেলে বন্ধুর হেডফোনটি অনায়াসেই ব্যবহার করি। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, নিজের হেডফোন যেমন অন্যের সাথে ভাগ করা উচিৎ নয় সেরকম অন্যের হেডফোন ব্যবহার করাও উচিৎ নয়। এরফলে অন্যের কানে যদি কোনো ইনফেকশন থেকে থাকে তা আপনারও হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।এছাড়াও অনেকেই আছেন যারা হেডফোনের বাডদুটি কখনো পরিষ্কার করার কথা ভাবেননা। তাদের হেডফোনের মধ্যে ব্যাকটেরিয়ার বাসা বাঁধার আশঙ্কা থেকে যায়। সেই ব্যাকটেরিয়াই আপনি যখন হেডফোনটি ব্যবহার করবেন তখন আপনার কানে চলে আসতে পারে।
৩) কানে বাতাস প্রবেসে বাধা- হেডফোন কোম্পানিগুলি হেডফোন তৈরীর সময় তাদের কাস্টমার যাতে বেস্ট সাউন্ড কোয়ালিটি পায় তার দিকে বেশি খেয়াল রেখেছেন। এর ফলে বাজার যে সব হেডফোন পাওয়া যায় তার বেশিরভাগই এয়ার টাইট। এরফলে কানে বাতাস একেবারেই প্রবেশ করতে পারে না। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, কানে বাতাস প্রবেশ করতে না পাড়ার ফলস্বরূপ কানের মধ্যে জমতে থাকে ঘাম। সেই সেই ঘাম থেকে ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা তৈরী হয়।
৪) ক্ষনিকের বধিরতা- গবেষণায় দেখা গেছে, দীর্ঘক্ষণ উচ্চ ভলিউমে গান শোনার ফলে কান থেকে হেডফোন খুলে ফেললেও কিছু সময়ের জন্য বধিরতা কাজ করে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, টানা ১৫ মিনিট যদি কেউ ১০০ ডেসিবেলের উপরের শব্দের আওয়াজ শোনেন তাহলে তার বধির হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।