কাঁটা থাকলেও গোলাপের কদর কিন্তু কখনও কমবেনা। এই ফুলে যেমন সৌন্দর্য রয়েছে, তেমনি রয়েছে ভালোবাসার আকুতি, আবার এর মাধ্যমেই শান্তির বার্তাও পৌঁছে দেওয়া যায়। গোলাপ ছাড়া ভালোবাসার প্রকাশ যেন অসম্পূর্ণই থেকে যায়। পৃথিবীতে প্রায় সাড়ে পাঁচশো প্রজাতির গোলাপ রয়েছে। আপনারা কি জানেন, এই গোলাপের ইংরেজি আভিধানিক নাম ছাড়াও দেশীয় কিছু অবাক করে দেওয়া নাম রয়েছে? দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী সাদা গোলাপ ভালোবাসতেন, সেই সূত্রে সাদা গোলাপের নাম হয়েছে নেহেরু গোলাপ। তাছাড়াও নেতাজি থেকে জ্যোতি বসু হয়ে হালের নরেন্দ্র মোদী, মমতা ব্যানার্জির নামেও গোলাপ দেদার বিকোচ্ছে কলকাতার বাজারে। সেই গোলাপ আবার চলে যাচ্ছে বাইরেও।
মজার ব্যাপার হল, কিভাবে এর নামকরণ হয়ে থাকে তা জানেন না চাষিরাও। আওয়ার ফ্রিডম, ডাবল ডিলাইট, মোনাকো, হেডলাইনার প্রভৃতি নামের গোলাপের চাহিদা এবারে সর্বোচ্চ রয়েছে। এছাড়াও নেতাজি, মোদী, মমতা নামের গোলাপের চাহিদাও প্রচুর। নেতাজি গোলাপ ছাড়াও উপরোক্ত ইংরিজি নামের গোলাপগুলি ১৫০-২০০ টাকায় এক-একটি বিক্রি হচ্ছে।
রাজারহাট ব্লকের শিখরপুর, ঝালগাছি, নয়াবাদ এলাকায় দু'শোরও বেশি চাষি কয়েক'শ রকমের গোলাপ চাষ করে আসছেন বেশ কয়েক বছর ধরে। আসানসোল, ঝাড়খন্ড, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, শিলিগুড়ি থেকে প্রচুর পাইকারি ব্যবসায়ী এখান থেকে গোলাপ কিনে নিয়ে যান। তারপর তা বিদেশে চলে যায়। নেপাল, বাংলাদেশ, ভুটান থেকেও বহু ব্যবসায়ী সরাসরি এখানে আসেন গোলাপ কিনে নিয়ে যেতে। শীতের মরশুমে গোলাপ ছাড়াও অন্যান্য ফুল চাষও হয়, তবে গোলাপের চাহিদাই বেশি। এবছর গ্রিন টিনা বলে একটি সবুজ গোলাপের চাহিদা খুব বেশি, এটিকেই মমতা গোলাপ বলা হচ্ছে। আবার কেউ কেউ সাদা ওপর নীলচে রঙের আভাযুক্ত ‘ব্লু ফর ইউ’ গোলাপকেও এই নামে বিক্রি করে থাকেন। পাশাপাশি টাটা সেন্টিনারি, ব্ল্যাক লেডি, ইয়েলো রোজ, আবরা-কা-ডাবরা, ফ্রেম বয়, মানস, ডাচ রোজ, ক্যালকাটা ৩০০, তাজমহল প্রভৃতি গোলাপ প্রতি বছরের মতই বিক্রি হচ্ছে। এগুলির দাম ২০-৬০ টাকা। এভাবেই কিন্তু গোলাপ আমাদের রোজের জীবনযাপনে তো বটেই উৎসবের মরশুমেও অপরিহার্য জায়গা করে নিয়েছে। আর এই নামবিশিষ্ট গোলাপ যেন গোলাপের দুনিয়ায় নতুন সংযোজন, যা সকলেই লুফে নিয়েছে।