উত্তরবঙ্গ এমনিতেই সুন্দর। কাঞ্চনজঙ্ঘা আর পাইনের জঙ্গল। পাহাড়ের গা থেকে ছিটকে আসা রঙের ফোঁটা। পাহাড়ি ফুল। খেলনা বাড়ির মত বাড়ি। কখনও মেঘ কখনও কুয়াশায় ঢাকা পাহাড়ি রাস্তা। উত্তরের পাহাড়ের শীত, শরৎ, বসন্ত, বর্ষা সবই টানে।
তবে পাহাড়ের চড়াই, ধারালো বাঁক আর একটানা জার্নি অনেক টুরিস্টকেই সমস্যায় ফেলে। এবার বোধহয় সেই সমস্যা মিটতে চলেছে।
গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিট্রেশন রোপওয়ে চালু করার পরিকল্পনা করেছে। রোহিনি থেকে গিদ্দাপাহাড় পর্যন্ত। রোপওয়ে লাইন কার্শিয়াং শহরের ওপর দিয়ে যাবে। সব কিছু পরিকল্পনা মত এগোলে এবছর দুর্গাপুজোর মরসুমেই রোপওয়ের কাজ সম্পূর্ণ হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
নতুন রোপওয়ে তৈরির কাজ পুরোদমে চলছে।
জিটিএ বোর্ড অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটরস-এর চেয়ারম্যান অনিল থাপা জানিয়েছেন, রোপওয়ের কাজ শেষ হলে আশা করা যায় দার্জিলিং পার্বত্য অঞ্চলের পর্যটন একেবারেই আলাদা চেহারা নেবে। পর্যটক হার অনেকটাই বাড়বে।
রোপওয়ে সার্ভিস প্রাইভেট লিমিটেডের দায়িত্বে এই প্রজেক্টের কাজ চলছে বলে জানা গিয়েছে। মনো-কেবল গন্ডোলা চলবে। ২০ মিনিটে ২.৫ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করবে। গিদ্দি পাহাড় আর রোহিনির দূরত্ব ২,৩২০ কিলোমিটার। গন্ডোলাতে আপাতত ৬ জন করে প্যাসেঞ্জার নেওয়া যাবে। প্রতি ঘণ্টায় ৮০০ জন করে পর্যটক বহনের লক্ষমাত্রা স্থির করা হবে।
প্রজেক্টের জন্য ১৬ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। গিদ্দি পাহাড় থেকে রোহিনি রুটে ১৬ টি টাওয়ার তৈরি করা হয়েছে। ৮০ শতাংশ কাজ সম্পূর্ণ।
পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, পাহাড়ে আরও দুটো রোপওয়ে রুট এর পরিকল্পনা করা হয়েছে। জিটিএর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে কাজ হবে।
একটি রুট দার্জিলিং এর বাতাসিয়া লুপ থেকে রক গার্ডেন। অন্যটি কালিম্পং এর ডেলো থেকে রেল। মিরিকের থিরবু টি এস্টেটও রোপওয়ের ভাবনা আছে।
আধিকারিদের মতে, বার্ড আই ভিউতে ল্যান্ডস্কেপ দেখার জন্য পাহাড়ে পর্যটকদের কাছে রোপওয়ে সবসময়ই আলাদা আর্কষণ।
কার্শিয়াং এর রোপওয়ে নিয়ে স্থানীয় ট্যুর গাইড, ট্যুরিজম এজেন্টরাও আশাবাদী। তাঁরা জানিয়েছেন, কার্শিয়াং বেশ কিছু টুরিস্ট স্পট, হোমস্টে আছে। রোপওয়ে চালু হলে সেখানেও টুরিস্ট আসতে শুরু করবে।
দার্জিলিং এ রোপওয়ে অবশ্য নতুন নয়। ভারতের প্রথম কেবল কার সার্ভিস এখানেই শুরু হয়। ১৯৬৮ সালে। রঙ্গিত ভ্যালির ওপর। ২০০৩ সালে দুর্ঘটনার জন্য এই সার্ভিস বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় ৮ বছর বন্ধ থাকার পর ২০১২ সালে আবার নতুন করে চালু করা হয়। এখন টাকভির থেকে সিঙ্গামারি পর্যন্ত এই রোপওয়েটি চালু রয়েছে।