রোনাল্ড রস, কলকাতার জন্য নোবেল নিয়ে আসা এক বিজ্ঞানী

খুব তো গর্ব করে বলেন কলকাতায় ৬টা নোবেল; দ্বিতীয়টি তো আনলেন রবি ঠাকুর! কিন্তু প্রথমটা আনলো কে? কে! তিনি কোন সাহিত্যিক নন, তিনি খাঁটি বিজ্ঞানের লোক! তৃতীয় বিশ্বের ল্যাবে বসে শত সীমাবদ্ধতায়ও ঘটালেন বিপ্লব। হয়ে গেলেন কালোত্তীর্ণ! স্যার রোনাল্ড রস, নাম তো শুনাহি হোগা!

স্যার রোনাল্ড রস ১৩ই মে ১৮৫৭ সালে কুমায়ুনের আলমোড়াতে জন্ম গ্রহণ করেন, যা বর্তমানে ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যে অবস্থিত। জাতিতে তিনি স্কটিশ অর্থাৎ ব্রিটিশ! তাঁর পিতা স্যার ক্যাম্পবেল ক্লে গ্র্যান্ট রস ছিলেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর একজন জেনারেল। মাতা মাতিলদা সার্লোট ছিলেন লন্ডনের আইন ব্যবসায়ী এডওয়ার্ড মেরিক এল্ডারটন-এর জ্যেষ্ঠ কন্যা। ছেলেবেলায় মাত্র আট বছর বয়সে পড়াশুনার জন্য রোনাল্ড রসকে জন্য ইংলান্ডে পাঠানো হয়। তিনি ছিলেন প্রাণীবিদ্যায় আগ্রহী এবং এর পাশাপাশি তাঁর নেশা বলতে ছিল ছন্দ, সঙ্গীত ও কাব্য চর্চা। তিনি শিল্পী হতে চেয়েছিলেন। তাঁর সে ইচ্ছা পূরণ হয়নি, পিতৃ ইচ্ছায় তিনি চিকিৎসক হিসেবে লন্ডনের সেন্ট বার্থলোম্যু'র হাসপাতালে যোগ দেন। যদিও তিনি তৃতীয় ইঙ্গবার্মা যুদ্ধ অংশগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে তিনি ভারতে ফিরে আসেন এবং ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল সার্ভিসে যোগ দেন।

১৮৯৭ সালের ২০শে আগস্ট তিনি আবিষ্কার করেন যে, অ্যানোফিলিস প্রজাতির মশার পাকস্থলীর প্রাচীরের অন্তর্গাত্রের কোশে এক বিশেষ ধরনের দানাদার কালচে রঞ্জক পদার্থ রয়েছে। কয়েক মাস পর তিনি খাঁচাবন্দি পাখির মাধ্যমে জীবাণুর জীবনচক্র বিশ্লেষণ করেন যে, রোগাক্রান্ত পাখির দেহ থেকে ম্যালেরিয়া সুস্থ পাখির দেহে সংক্রমিত হতে পারে। ফলে ম্যালেরিয়া যে জলবাহিত বা বায়ুবাহিত কোন রোগ নয় বরং এটা সংক্রামক ব্যাধি যা একজনের শরীর থেকে আরেকজনের শরীরে মশার মাধ্যমে সংক্রামিত হয়; সেই বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়।

যদিও এই বিষয়ে প্রথম দিকে বিভ্রান্তি ছিল কারণ, বাতিস্তা এবং তাঁর ইতালীয় সহকর্মীরাও মানব দেহে ম্যালেরিয়ার জীবাণু সংক্রমণ নিয়ে গবেষণা করেন; যার ফলে রস না বাতিস্তাকে আগে গবেষণা করেছেন এই নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। ১৯০২ সালে রোনাল্ড রস-এর নোবেল পুরষ্কার লাভের মাধ্যমে কার্যত এই বিতর্কের যবনিকা পতন ঘটে। তাঁর জীবনের বাকি সময়টুকুর অধিকাংশই অতিবাহিত হয় ম্যালেরিয়া শিক্ষা বিষয়ক বিভিন্ন জনস্বাস্থ্য ও সচেতনতা কর্মসূচিতে। তিনি বহু দেশে ম্যালেরিয়া প্রতিরোধ বিষয়ে কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন এবং সেই সঙ্গে সঙ্গে প্রতিনিধিত্বও দেন। এক সময়ে ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী মুখ ছিলেন তিনি এবং আমৃত্যু তিনি যোগ্য নেতৃত্ব দান করে গিয়েছেন। ১৯০১ সালে তিনি রয়্যাল সোসাইটির ফেলো নির্বাচিত হন এবং ১৯০৯ সালে তাঁকে রয়্যাল মেডেল প্রদান করা হয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি 'War Office'-এর ম্যালেরিয়া বিষয়ক পরামর্শক নিযুক্ত হন।

তিনি ম্যালেরিয়া বিষয়ক বহু প্রবন্ধ লিখেছেন তাঁর সমগ্র জীবনে যার  Mosquito Brigades and How to Organise Themএবং Prevention of Malaria ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। ১৯২৩ সালে তিনি তাঁর আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ Memoirs রচনা করেন। গণিত বিষয়েও তিনি বেশ কিছু নিবন্ধ লিখেছেন। এছাড়া নিখাদ সাহিত্য-এর মধ্যে তিনি বেশ কিছু নাটক, উপন্যাস এবং কবিতাও রচনা করেন।

তিনি ছিলেন মেধাবী এবং বহুমুখী প্রতিভা সম্পন্ন একজন একাধারে তিনি চিত্রশিল্পী, গণিতবিদ, সুরকার, কবি, ঔপন্যাসিক ও না নাট্যকার আবার অন্যদিকে চিকিৎসক যা কখনই তাঁর লক্ষ্য ছিল না। বাবার চাপে তাঁর চিকিৎসক হওয়া যা তাঁকে নিয়ে গেল গবেষণা ক্ষেত্রে। সম্ভবত প্রথম থেকেই তাঁর মনে ম্যালেরিয়া বা মশার প্রতি একটা আবেগী জায়গা ছিল। ছোটবেলায় দেখেছিলেন ভারতে কী ভয়ানক ম্যালেরিয়ার প্রকোপ! তাঁর বাবাও আক্রান্ত হয়ে ছিলেন ম্যালেরিয়ায়।

মাদ্রাজে তিনি কুইনাইন-এর মাধ্যমে ম্যালেরিয়ার চিকিৎসা সংক্রান্ত নানা বিষয়ে অনুসন্ধান করেছিলেন। ১৮৮৩-এ বেঙ্গালুরুতে তিনি থাকার জন্য যে বাংলোটি পেয়েছিলেন, তাতে মশার উপদ্রব ছিল প্রবল। এর কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেখলেন যে, তাঁর ঘরের জানলার পাশে রয়েছে এক প্রকান্ড জলাধার এবং ওখানে অগুনিত মশার লার্ভা দেখেই তিনি বুঝেছিলেন যে এটিই তাদের প্রজননস্থল। তিনি সেটিকে জলমুক্ত করার পরিকল্পনা করলেন এবং জলমুক্ত করতেই মশার দাপট কমে এল।পরিষ্কার জমা জলকে মুক্ত করে মশার প্রজননস্থলকে ধ্বংস করার পদ্ধতির তিনিই হলেন পথপ্রদর্শক।

সাত বছর ভারতে থাকার পরে, রোনাল্ড রস ১৮৮৮ সালে ফিরলেন লন্ডনে। এই সময়ের মধ্যেই তাঁর লেখা বেশ কয়েকটি উপন্যাস প্রকাশিত হয়েছে, যার মধ্যে 'দ্য চাইল্ড অব দ্য ওসেন', 'স্পিরিট অফ দ্য স্টর্ম', 'দ্য রেভেলস অব ওসেরা' ইত্যাদি উল্লেখ্য, এরপরই তিনি উপলব্ধি করলেন সাহিত্যিক রোনাল্ড রস সফল হচ্ছেন না। অতএব, প্রত্যাবর্তন! তিনি তাঁর ডাক্তারি পেশাতেই ফিরলেন। জনস্বাস্থ্য বিষয়ক ডিপ্লোমা করলেন, মাইক্রোস্কোপ ও ল্যাবরেটরিগত শিক্ষায় প্রশিক্ষিত হলেন। কিন্তু ভারতে ফিরেও তেমন সাফল্য পাচ্ছিলেন না। ১৮৯৪ সালে দ্বিতীয়বারের মতো ইংল্যান্ড গিয়ে তাঁর সঙ্গে  ফাইলেরিয়ার কারণ যে কিউলেক্স মশা তার আবিষ্কারক ও ট্রপিক্যাল ডিজিজ-এর স্থপতি স্যার প্যাট্রিক ম্যাসনের সাক্ষাৎ হয়। এই আলাপই তাঁর জীবন বদলে দেয়। এই ম্যানসনই তাঁকে ১৮৮০ সালে আলফনস লেভারান কর্তৃক আবিষ্কৃত মানবদেহে ম্যালেরিয়ার জীবাণুগুলির সঙ্গে পরিচয় করান। ১৮৭৮ সালে ম্যাসনের পর্যবেক্ষণেই প্রথম ধরা পড়ে যে, এক বিশেষ প্রকারের মশা মানবদেহে এক বিশেষ ধরনের জীবাণুর বাহক হিসেবে কাজ করতে পারে,যদিও তা সম্ভবনা স্তরেই ছিল!

যা পরবর্তীকালে স্যার রোনাল্ড রস, তাঁর ব্যক্তিগত গবেষণায়ও পূর্ব নির্ধারিত পর্যবেক্ষণ হিসেবে ব্যবহার করেন। পরের বছর তিনি ভারতে ফিরে আসেন এবং ম্যানসনের পরামর্শ অনুসারে গবেষণার কাজ শুরু করেন। ম্যানসনই ছিলেন রোনাল্ড রসের পথপ্রদর্শক ও শিক্ষাগুরু। ১৮৯৫-এর মার্চে ভারতে রোনাল্ড রস শুরু করলেন গবেষণা। গবেষক রসের জীবনের হতাশা, বারংবার ব্যর্থতায় ম্যানসন তাঁকে, অণুপ্রেরণা ও সাহস দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে নিয়মিত চিঠি বিনিময় চলত, ১৭৩টি চিঠির বিনিময় তাঁদের গুরু শিষ্য সম্পর্কের জীবন্ত প্রমাণ এবং এই যোগাযোগেরই ফসল ১৮৮৭ সালের যুগান্তকারী আবিষ্কার। এরপর ১৮৮৮ থেকে ১৮৮৯ সাল পর্যন্ত তিনি, লন্ডনে  ব্যাকটেরিয়াবিজ্ঞানে পড়াশোনা করেন। 

১৮৯৭-এর অগাস্ট, সেকেন্দ্রাবাদের বেগমপেট-এর হাসপাতালে গত দু'বছর ধরে নানান প্রতিকূলতার মধ্যে ম্যালেরিয়া নিয়ে গবেষণা করে যাচ্ছিলেন রোনাল্ড রস। মাইক্রোস্কোপে চোখ রেখেই বেশিরভাগ সময় চলে যেত তাঁর। যদিও ম্যালেরিয়ার কারণ যে 'ম্যালেরিয়া প্যারাসাইট' নামের পরজীবী, সেটি ১৮৮০ সালের ফরাসি বৈজ্ঞানিক আলফোনস ল্যাভেরানের আবিষ্কার থেকেই জানা গিয়েছিল। কিন্তু পরজীবী কীভাবে মানুষের দেহে সংক্রামিত হচ্ছে তখন অজানা ছিল। এই অজানা বিষয় নিয়েই গবেষণায় করেছিলেন রোনাল্ড রস।

সেকেন্দ্রাবাদে অগস্টে তখন অসহনীয় গরম। মশা ব্যবচ্ছেদ করে মাইক্রোস্কোপের নীচে প্রধানত তার পাকস্থলীর কোষে ম্যালেরিয়া পরজীবির সন্ধান করে চলেছেন তিনি। তিনি নিজেই তাঁর ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা সম্পর্কে বলেছিলেন, প্রথমে কাজ করতে তাঁর কোনো রকম অসুবিধেই হচ্ছিল না। কিন্তু বার বার ব্যর্থতা হতাশ করে ফেলছিল তাঁকে। হাসপাতালের ঘরটি ছিল, ছোট, অন্ধকারাছন্ন এবং গরম। কোনও মতে আলো আসতো এবং পাখা ব্যবহার করা যেত না। কারণ, পাখার হাওয়া ব্যবচ্ছেদ করা মশাগুলিকে উড়িয়ে দিতে পারে। আই ফ্লাই নামের ছোট ছোট মাছির ঝাঁক মহানন্দে তাঁর কানে, চোখের পাতায় এসে চরম জ্বালাতনও করত। কখনও কখনও দু'-একটা মশার কামড়ও খেতে হয়েছে। এমন অবস্থায় রোনাল্ড রসের কপাল ও হাতের ঘামে মরচে পড়ে গিয়েছে মাইক্রোস্কোপের স্ক্রুগুলিতে, শেষ অবশিষ্ট আইপিসটিতেও ধরেছে চিড়।

মশার কামড়েই যে ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ ঘটে, বুঝতে পেরেও রোনাল্ড রস প্রমাণ করতে বার বার ব্যর্থ হচ্ছিলেন। তার  কারণ, তাঁর সংগৃহীত মশাগুলি ম্যালেরিয়ার বাহক প্রজাতির ছিলই না। অবশেষে তিনি পেলেন বিশেষ এক মশাকে। তাঁকে রক্ত পরীক্ষার জন্য বা মশার কামড় খাওয়ার জন্য লোক জোগাড় করতে হত। এই কাজে তিনি সহকারীদের কিছু সাহায্য পেতেন, ১৬ই অগস্ট ওই বিশেষ মশাকে তিনি ব্যবহার করলেন হুসেন খাঁ নামে ম্যালেরিয়ায় সংক্রমিত এক রোগীর উপরে। অন্য সময়ে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে হুসেন খাঁ এক আনা পেলেও এবার পেলেন দশ আনা।

তারপর ২০শে অগস্ট সকাল। যা চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাসে এক উজ্জ্বল দিন হিসেবে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। সকাল সাতটায় রোনাল্ড রস হাসপাতালে গিয়ে রোগী দেখলেন, চিঠিপত্র পড়লেন, তারপরে শুরু করলেন তাঁর পরীক্ষাগারে কাজ। ওই দিন দুপুর একটায় মিলেছিল তাঁর বহু দিনের সাধনার ফল। সংক্রমিত মশার পাকস্থলীর দেওয়ালে পেলেন ম্যালেরিয়া পরজীবী। তিনিই প্রস্তাব করেছিলেন এই ২০শে অগস্ট হোক 'বিশ্ব মশা দিবস'।

এই যুগান্তরকারী আবিষ্কারের কিছু দিনের মধ্যেই, তাঁকে বদলি হতে হল রাজস্থানের মরুভূমি লাগোয়া গ্রামে, সেখানে ম্যালেরিয়া তখন এক বিরল অসুখ। সেখানে তিনি পাখির উপরে ম্যালেরিয়া নিয়ে গবেষণা শুরু করলেন। ম্যালেরিয়া রোগের জীবাণু প্লাসমোডিয়াম কীভাবে মশার শরীরে থেকে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে, তার সম্পূর্ণ জীবনচক্র। বহু দিন পর্যন্ত বিশ্বাস ছিল এটি বায়ু বাহিত রোগ কারণ ম্যালেরিয়া শব্দের অর্থ ছিল, খারাপ বা বাজে হাওয়া (mal = খারাপ, air = হাওয়া)। তিনিই প্রথম বুঝেছিলেন ম্যালেরিয়া রোগের কারণ হল এক ধরনের পরজীবী, পরবর্তীতে যার বৈজ্ঞানিক নাম হয় প্লাসমোডিয়াম। পরে একটি অ্যানোফিলিস মশার পেটে প্লাসমোডিয়ামের উপস্থিতি আবিষ্কার করে তিনি বুঝতে পারেন যে ম্যালেরিয়া রোগের জীবাণু পরজীবী, প্লাসমোডিয়াম হলেও সেটার বিস্তার ঘটে অ্যানোফিলিস মশার মাধ্য‌মে। অ্যানোফিলিস মশা ম্যালেরিয়া রোগীকে কামড়ালে রোগীর রক্তে মিশে থাকা প্লাসমোডিয়াম মশার শরীরে প্রবেশ করে ও বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয় এবং গ্যামেটোসাইটে পরিণত হয়ে মশার লালায় প্রবেশ করে অর্থাৎ পরজীবীর বংশবৃদ্ধি ঘটে। প্লাসমোডিয়ামের জীবন চক্র সম্পন্ন হয় !

ওই আক্রান্ত মশা কোনও সুস্থ মানুষকে কামড়ালে তার শরীরে প্লাসমোডিয়ামের গ্যামেটোসাইট প্রবেশ করে এবং সুস্থ মানুষটিকে ম্যালেরিয়া রোগাক্রান্ত করে। রোলান্ড রস-এর এই যুগান্তকারী আবিষ্কারের আঁতুড়ঘর হল আমাদের কলকাতা। তিনি ১৮৯৮ সালের ২৯শে জানুয়ারি কলকাতায় এসেছিলেন। কলকাতার পিজি হাসপাতাল আজকের শেঠ সুখলাল করোনানি হাসপাতাল ছিল তাঁর গবেষণার পীঠস্থান। তিনি পাখির উপরে গবেষণা করে দেখেছিলেন যে, মশার পাকস্থলীতে ম্যালেরিয়া পরজীবী পরিণত হয়ে জমা হয় মশার লালাগ্রন্থিতে। তারপরে কামড়ের সঙ্গে সঙ্গেই সংক্রামিত করছে সেই পরজীবী। ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ অর্থাৎ বিস্তার পদ্ধতি আবিষ্কারের জন্য ১৯০২ সালে তিনি পেলেন নোবেল পুরস্কার। শুধু ব্রিটেনেরই নন, কলকাতা তথা ভারতের প্রথম নোবেল পুরস্কার প্রাপক হলেন স্যার রোনাল্ড রস। এই অনবদ্য গবেষণার জন্য তাঁর সহ-গবেষক পাণিহাটির কিশোরীমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়কে ব্রিটেনের সম্রাট এডওয়ার্ড স্বর্ণপদকে ভূষিত করেন। তাঁর ও তাঁর কাজের প্রতি সম্মানে পিজি হাসপাতালে এক স্মারক স্তম্ভ স্থাপিত হয় ১৯২৭ সালে, এটির আবরণ উন্মোচন করেছিলেন রোনাল্ড রস নিজ হাতেই।

তাঁর এই আবিষ্কারের উপর ভিত্তি করেই, অ্যানোফিলিস মশার বংশবিস্তার প্রতিরোধের দ্বারা ম্যালেরিয়া রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। যা বিপুল পরিমানে সফল হয় এবং বলাইবাহুল্য এর জন্যই বিশ্বজুড়ে বহু কোটি মানুষের প্রাণরক্ষা পেয়েছে এবং আজ ম্যালেরিয়া যে খুব মারাত্মক নয়, সে কৃতিত্বও অনেকাংশে রোনাল্ড রসের প্রাপ্য।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...