দিনকয়েক আগে বাজারে খুচরো পয়সার বেশ অভাব দেখা দিয়েছিল। অটোতে, বাসে, রিক্সায় কেউ খুচরো দিতে চাইত না। যাত্রীকেই যথাযথ খুচরো দিয়ে তবে নামতে হত। অনেকের মনেই তখন প্রশ্ন জাগতে শুরু করে খুচরো গুলো যাচ্ছে কোথায়? আর স্বাভাবিকভাবেই এই প্রশ্নে হাবুডুবু খাচ্ছিলেন গোয়েন্দারাও। এরই মাঝে জল্পনার নিষ্পত্তি ঘটিয়ে সামনে আসে আসল সত্য ও তথ্য। কলকাতা ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে ওয়ান শাটার বন্দুক তৈরিতে ব্যবহার করা হচ্ছিল খুচরো পয়সা। কারণ ভাল মানের ধাতু দিয়ে তৈরি করা হয় পয়সা। তাই ব্যবহারের পর পিস্তলে জং ধরে না। এই ঘটনাকে ভিত্তি করে ‘খুচরো পয়সার জন্য’ নামের একটি উপন্যাস লেখেন রূপক সাহা। আর সেই উপন্যাসকে কেন্দ্র করে এবার ছবি বানাচ্ছেন রাজর্ষি দে। ছবির নাম ‘রাইফেল’। ‘রাইফেল’ মূলত অ্যাকশন থ্রিলার। টানটান উত্তেজনায় ভরপুর এই ছবি- আগেভাগেই জানিয়ে রেখেছেন পরিচালক মহাশয়।
ছবিতে অস্ত্র ব্যবসায়ী হীরা সাউয়ের ভূমিকায় ধরা দেবেন রুদ্রনীল ঘোষ। সবে মাত্র ‘বিবাহ অভিযান’ এবং ‘ভিঞ্চি দা’র প্রশংসা হজম করলেন তিনি। আর তারপরই এখানে একেবারে অন্য ইমেজে ধরা দেবেন তিনি। সরু গোঁফ, আঙুল ভর্তি আংটি, গলায় মোটা সোনার চেন! যাকে এককথায় বলা যেতে পারে ধনকুবের। এক কর্নেলের ভূমিকায় দেখা যাবে কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়কে। চমকের শেষ এখানেই নয়। আই পি এস অফিসারের ভূমিকায় দেখা যাবে তাঁকে।
এই প্রথম এমন এক চরিত্রে তিনি। তবে, ওয়েব সিরিজেও গোয়েন্দা মিতিন মাসির চরিত্রে ধরা দিতে চলেছেন তিনি পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের হাত ধরে। প্রসঙ্গত, রাজর্ষি দে’র সঙ্গে পর পর তিনটি ছবিতে কাজ করে ফেললেন অর্পিতা। ‘শুভ নববর্ষ’, ‘পূর্ব, পশ্চিম, দক্ষিণ (উত্তর আসবেই)’-এর পর এবার ‘রাইফেল’। অর্পিতা চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন- “এই প্রথম কোনও পুলিশ অফিসারের চরিত্রে অভিনয় করছি। রেফারেন্স হিসেবে বেছে নিয়েছি ‘মরদানি’ এবং ওয়েব সিরিজ ‘দিল্লি ক্রাইম’।”
কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের চরিত্রটি এখানে বেশ রহস্যময়। সেই চরিত্রের ঝাঁঝ সম্বন্ধে কিছুই খোলসা করেননি তিনি। নিজে সফল পরিচালক বলে রাজর্ষি দে’র কাজে ‘খবরদারি’ করবেন না- তা পূর্ব, পশ্চিম, দক্ষিণ (উত্তর আসবেই)-এর শুভ মহরতের সময়েই জানিয়েছিলেন তিনি।
ছবিতে পূজারিণী ঘোষকেও দেখা যাবে আর এক আই পি এস অফিসারের ভূমিকায়। এখানে তাঁর চরিত্রের নাম শিখা ঘোষ। ‘রাইফেল’-এ এক মহিলা ক্রিকেট দল রয়েছে। সেই দল ছবির গল্পের এক অন্যতম দিক। ছবিতে আরও যাঁরা অভিনয় করছেন তাঁরা হলেন প্রিয়াঙ্কা রতি রায়, তনিকা বসু, অনন্যা বসু।
মূল উপন্যাসের বাইরে গিয়েও বহু রিসার্চ ওয়ার্ক করতে হচ্ছে পরিচালককে। বাংলায় নারীকেন্দ্রিক পুলিশের ছবি তৈরি হচ্ছে শুনে পুলিশ মহল ‘রাইফেল’ তৈরিতে অনেক সাহায্য করছেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন পরিচালক। পাশাপাশি বেশ কিছু এক্সক্লুসিভ লোকেশনে শুটিং করারও অনুমতি পাওয়া গিয়েছে এই ছবির জন্য। ব্যারাকপুর, চুঁচুড়া, সিঙ্গুর, উস্তি-তে হবে ছবির শুটিং। ‘অভীগ্ন ফিল্মস’-এর প্রযোজনায় আসছে ‘রাইফেল’। চলতি বছরের শেষে মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।