কথায় আছে, গিরগিটি রঙ বদলায়, কিন্তু আপনি কি জানেন... এক প্রকারের শুঁয়োপোকাও এটা করতে পারে?
মরিচা রঙের একরকম শুঁয়োপোকা যার পতঙ্গটির ইংরাজীতে নাম ‘পেপার্ড মথ’| এই প্রজাতির শুঁয়োপোকা খাদ্য-গাছের থেকে রঙ ধারণ করতে সক্ষম, অর্থাৎ এরা দেহের রঙ বদলে খাদ্য-গাছের রঙে পরিবর্তন করতে পারে| তবে এই পরিবর্তন অত্যন্ত ধীরগতিতে সম্পন্ন হয়| তবে কিভাবে এই শুঁয়োপোকা পরিবেশের রঙ বুঝতে পারে? কিভাবেই বা রঙ বদল করে?
সূত্রের খবর, এই সম্বন্ধে জানতে বিজ্ঞানীরা ৩টি ভিন্ন পদ্ধতিতে ‘পেপার্ড মথ’-এর শুঁয়োপোকা পর্যবেক্ষণ করেন:
প্রথমত, গবেষকরা কিছু অ্যাক্রাইলিক পেইন্টেড চোখ বিশিষ্ট ‘পেপার্ড মথ’ প্রজাতির শুঁয়োপোকা নিয়ে পর্যবেক্ষণ করে দেখলেন সেগুলি পটভূমির রঙের সাথে নিজের রঙ বদলাতে পারে, অর্থাৎ শুঁয়োপোকা যেই ডালপালা বা লতাপাতায় বসে সেই রঙ ধারণ করতে পারছে|
ব্লাইন্ড ফোল্ডেড শুঁয়োপোকাগুলিকে সাদা, কালো, ব্রাউন এবং সবুজ লতাপাতায় ছেড়ে পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেল, ওই ব্লাইন্ড ফোল্ডেড শুঁয়োপোকাগুলি চোখ ঢাকা অবস্থাতেও ব্যাকগ্রাউন্ড-এর রঙ ধারণ করতে সক্ষম, অর্থাৎ রঙ বদলানোর জন্য চোখ দিয়ে রঙ দেখার প্রয়োজন পড়ছে না|
তারপর, দ্বিতীয় পর্যবেক্ষণে, ব্লাইন্ড ফোল্ডেড শুঁয়োপোকাগুলি আলাদা আলাদা লতাপাতা দিয়ে চলাচল করলেও, যেখানে ধারাবাহিকভাবে অর্থাৎ বেশিক্ষণ ধরে শুঁয়োপোকাটি বিশ্রাম করে সেই জায়গার রঙ ধারণ করতে পারে|
তৃতীয়ত, অন্তিম পদ্ধতিতে গবেষকরা পরীক্ষা করে দেখলেন, শুঁয়োপোকার শরীরের কোন অংশটি দৃষ্টির সঙ্গে যুক্ত...কারণ শুঁয়োপোকা যে শুধু মাথার অভিমুখেই তাকিয়ে বাইরের রঙ দেখতে পারে তা নয়| দেহের অন্য যে কোনও অংশ অর্থাৎ ত্বকের মাধ্যমেও তার পটভূমির রঙ বুঝতে পারে|
এই পর্যবেক্ষণের একজন লেখক, এমি ইএকক জানিয়েছেন, এটি তাঁর কাছে পুরোপুরি বিস্ময়কর যে ব্লাইন্ড ফোল্ডেড শুঁয়োপোকাগুলি ব্যাকগ্রাউন্ড-এর রঙের সঙ্গে মিলিয়ে নিজের রঙ বদলাতে পারে| তিনি যখন এটি বলেন তাঁর সুপারভাইজার ইলিক স্যাচেরি-কে, সে নিজের চোখে না দেখা অবধি বিশ্বাস করতে পারেননি|
সত্যিইতো অবিশ্বাস্য একটি ব্যাপার, ছোট থেকে দেখা, গিরগিটি রঙ বদলায়| বড় হয়ে জানা কিছু বিশিষ্ট মাছ রঙ বদলায়| এখন বিজ্ঞানের পর্যবেক্ষণে শুঁয়োপোকার কথাও জানা গেল, সঙ্গে এটাও অবাক করার মতো বিষয় যে চোখ দিয়ে না দেখেও ব্যাকগ্রাউন্ড-এর রঙ ধারণ করতে সক্ষম ‘পেপার্ড মথ’ প্রজাতির শুঁয়োপোকারা|