এত দিন রাস্তাতেই কাটত জীবন। ‘হাট যা’ শুনেই কেটে যেত দিন, এটাই স্বাভাবিক একটি পথের কুকুরের জন্য| কেউ কেউ এসে গায়ে হাত বুলিয়ে আদর করে দিয়েও যেত মাঝে মাঝে; তবে সেই সংখ্যা খুবই নগন্য। আর রাত বাড়লেই বেপাড়ার কুকরদের সঙ্গে দল বেঁধে ঝামেলা তো নিত্য দিনের ঘটনা। এরকম করেই হয়তো দিন কেটে যেত আশার। কিন্তু ভাগ্য তার বদলে গেল যেদিন পাড়ার একদল শিশুর ঢিলের আঘাত থেকে বাঁচাতে এগিয়ে এল এক পুলিশ আধিকারিক। তাঁর হাত ধরেই তো পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ডগ স্কোয়াডে ইতিহাস গড়ল আশা- প্রথম পথ-কুকুর যে পুলিশে (স্নিফার ডগ স্কোয়াড) চাকরি পেল।
গত দেড় বছর ধরে ব্যারাকপুরে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের অ্যাকাডেমিতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে আশাকে। সেখানে সসন্মানে সমস্ত পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে সে। পরীক্ষায় পাশ করার পর পুলিশের পেডিগ্রি দলে মিলল চাকরি। এই দলে এত দিন শুধু ল্যাব্রাডর, জার্মান শেপার্ডের মতো বিদেশী কুকরদেরই ছিল একচেটিয়া রাজত্ব। এবার সেখানেই নাম লেখাল ভারতের প্রথম পথ- কুকর আশা; জানাল ব্যারাকপুর পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ অ্যাকাডেমির ইন্সপেক্টর জেনারেল দীপঙ্কর ভট্টাচার্য। জেনারেল ইন্সপেক্টর (ডগ ট্রেনার) কুকুর প্রশিক্ষক কে জয়রামন জানান
আশা খুব শীঘ্রই স্কোয়াডে যুক্ত হবে। অন্যান্য স্নিফারদের মতো সেও খুব ভালো বিষ্ফোরক চিহ্নিত করতে পারে। শুধু তাই নয়, আশা খুব দ্রুত দৌড়াতেও পারে এবং সব কাজ খুব দ্রুত সেরে ফেলতে পারে। আমাদের স্কোয়াডে এখন আশাই দ্রুততম পুলিশ কুকুর।
যে আশার হয়তো কলকাতার রাস্তাতেই জীবন কেটে যেতে, সেই এখন ডগ স্কোয়াড-এর দ্রুততম পুলিশ-কুকুর তাঁর এই উন্নতিতে যথেষ্ট উচ্ছ্বসিত পুলিশ আধিকারিকরা। পথ- কুকুরের এমন যাত্রা ইতিহাসে খুবই বিরল। নিঃসন্দেহে আশার নাম সেই ইতিহাসে উজ্জ্বল অক্ষরে লেখা থাকবে।