বুধবার সকালে খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে কলকাতা শহরে নেমে আসে শোকার ছায়া। প্রয়াত হলেন বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. সুব্রত গোস্বামী।
দীর্ঘদিন ধরে ভুগছিলেন জটিল মোটর নিউরন ডিজিজ-এ। চিকিৎসা চলছিল। আজ হার মানলেন সেই যুদ্ধে। বুধবার সকালে তিনি পরলোক গমন করেন।
দেশে ব্যথার চিকিৎসার অন্যতম পথিকৃৎ তিনি। কলকাতা মেডিকেল কলেজের ছাত্র ছিলেন। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পেন মেনেজমেন্টে পিএইচডি করেছিলেন তিনি।
শিয়ালদা ইএসএআই হাসপাতালের পেন ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা-প্রধান, ইএসআইয়ের উপ-অধিকর্তা পদে ছিলেন। ২০১৩ সালে তাঁর তত্ত্বাবধানেই শিয়ালদা ইএসআই হাসপাতালে গড়ে তোলা হয় ইনস্টিটিউট অব পেন ম্যানেজমেন্ট। তখন এই চিকিৎসক সংখ্যাও খুব বেশি ছিল না।
চিকিৎসা ক্ষেত্রে অবদানের জন্য আন্তর্জাতিক মঞ্চে পুরস্কৃত হয়েছিলেন গত নভেম্বরে। কোমর ও পায়ের অসহ্য যন্ত্রণা উপশমের গাইডলাইন তৈরি করেছিলেন। শ্রমজীবী স্বাস্থ্য উদ্যোগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন।
প্রাথমিক স্তরের অ-বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিজে প্রশিক্ষণ দিয়ে তৈরি করেছিলেন। তাঁর কাজে পাশে ছিলেন এসএসকেএম হাসপাতালের স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ বিমানকান্তি রায়, অস্থিশল্য চিকিৎসক আনন্দকিশোর পাল, প্রশান্ত রায় কর্মকার-সহ প্রায় কুড়িজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে। ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন ফর স্টাডিজ অফ পেন' আইএএসপি থেকে পুরস্কৃত হয়েছিলেন।
ব্যথা শুধুমাত্র রোগের উপসর্গ নয়। ব্যথার সঠিক নিরাময় প্রয়োজন। ক্যানসারের যন্ত্রণা থেকে শুরু করে হাড় কিংবা স্নায়ু সংক্রান্ত কোনও ব্যথা, পেন ম্যানেজমেন্টের ভূমিকা এখন সব ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ। ন ম্যানেজমেন্ট চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যথা নিরাময়ের পাশাপাশি ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও কমাতেও সাহায্য করে। কলকাতায় পেন ম্যানেজমেন্টের বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তুলতে তিনি পুরোধা ছিলেন।
শুধুমাত্র বিশিষ্ট চিকিৎসক হিসেবেই নয়, ভাল মানুষ হিসেবেও সব মহলে জনপ্রিয়। চিকিৎসাক্ষেত্রে স্বীকৃতির পুরস্কারের অর্থ চিকিৎসার উন্নতিতে ব্যয় করেছিলেন। ডা. সুব্রত গোস্বামীর শোকের ছায়া রাজ্যের চিকিৎসকমহলে।