গান গাইতে পারতেন। ভালবাসতেন এসরাজ বাজাতে। চামড়ার ওপর নকশা ফুটিয়ে তুলতে তাঁর জুড়ি মেলা ভার। দারু শিল্পে নজর কাড়েন। তাঁর মতো কাঠের আসবাবের ডিজাইন কেউ বড় একটা পারত না। বাগানে ফুলের সঙ্গে ফুল মিলিয়ে নিত্য নতুন আবিষ্কার। জ্যাম জেলির স্বাদ তাঁর মতো আর কারও হাতে খুলত না। নিজের তৈরি আতরের ব্র্যান্ড ছিল। নাম Arty Perfume
বাংলা আর ইংরেজি দুই ভাষাতেই সমান দক্ষতা। বাবার কথায় হাত দিয়েছিলেন অনুবাদের কাজেও। বই লিখেছিলেন। “প্রাণতত্ত্ব” এবং “অভিব্যক্তি”।
অমিতপ্রতিভার অধিকারী এই ভারত বিখ্যাত কৃষি বিজ্ঞানী। বিশ্বভারতী কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য। রথীন্দ্রনাথ_ঠাকুর। যাঁর অন্য পরিচয় ‘রবিপুত্র’। বিখ্যাত পিতার পুত্র হওয়া খুব সহজ কথা নয়। কিন্তু সেই চাপ তিনি সামলেছিলেন। নিভৃতচারী মানুষ। ভালবাসতেন আড়ালে থাকতে। বাবার আদর্শের বাস্তবায়ন ঘটাতে চেয়েছেন সারা জীবন।
বাবার কথাতেই জাপান যান। সেখান থেকে আমেরিকার ইলিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে। কৃষি বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করতে। ফিরে এসে শিলাইদহ আর শান্তিনিকেতন। রবীন্দ্রনাথের ইচ্ছেতেই শ্রীনিকেতনে কাজ শুরু করেছিলেন কৃষি ও কৃষকের উন্নতির জন্য। বাবার হাতে গড়া প্রতিষ্ঠানকে সুসংগঠিত করতে চেয়েছিলেন। দীর্ঘদিন সামলেছিলেন আশ্রমের গুরু দায়িত্ব। ১৯৫১-তে বিশ্বভারতী কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় হলে তিনি উপাচার্যের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সে খুব সহজ কাজ ছিল না।
ঠাকুর পরিবারের প্রথম বিধবা বিবাহ করেন তিনি। বাবা-মা’র ইচ্ছেকে মর্যাদা দিয়ে। অবন ঠাকুরের সম্পর্কে ভাগ্নী ছিলেন প্রতিমা দেবী। তাঁর চেয়ে পাঁচ বছরের ছোট। তাঁর সঙ্গেই বিবাহ অনুষ্ঠিত হয়। কন্যা নন্দিনী ওরফে পুপে। শেষ জীবনে বেছে নিয়েছিলেন নির্জনতাকে। দগ্ধ দিনের প্রাপ্তি- অপ্রাপ্তি রাঙামাটির সব টানকে পিছনে ফেলে নতুন করে ঘর গড়েছিলেন দেহরাদুনের পাহাড়ে। নাম দিয়েছলেন ‘মিতালি’। সেখানেই শেষ জীবন।
রবীন্দ্রনাথ ও মৃণালিনী দেবীর দ্বিতীয় পুত্র তিনি। জন্মেছিলেন ২৭ নভেম্বর। ১৮৮৮ সন। জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে। আজকের দিনে।