দুরন্ত স্মৃতিধর এক মানুষ । ছোট্টবেলা থেকেই। বন্ধু সহকর্মীরা তাঁর মনে রাখার ক্ষমতা দেখে চমকে যেতেন। যাকে বলে একেবারে ‘ফটোগ্রাফিক মেমরি’। লম্বা লম্বা ডায়লগ বলে যেতেন। একবারও না হোঁচট খেয়েই। তখন ফিল্মস্টকের দাম বেজায় বেশি। বারবার টেক ক্যানসেল করা মানে পরিচালক-প্রযোজকদের বিপদে ফেলা। কিন্তু তাঁর শট ওয়ানটেক ওকে! শুধু সিনেমার সেট নয়, ক্লাসরুমের পড়াশোনাতেও মনে রাখায় ‘চ্যাম্পিয়ন’।
কে তিনি?
দীঘল চোখ, তীক্ষ্ণ নাসা। মদালসা সুন্দরী। দেখলেই মনে হবে পারস্য থেকে ভুলপথে আরবের তীরে পথ ভোলা কোনও রানী। সামনে এলেই আগুনে সৌন্দর্যে ঝলসে যায় চোখ। কে বলবে জুনাগড়ের ছোট্ট শহর থেকে ‘স্ট্রাগল’ করে বেড়ে ওঠা এক মেয়ে!
বলিউড নায়িকাদের মধ্যে তিনিই প্রথম উঠে এসেছিলেন টাইম ম্যাগাজিনের কভার গার্ল হয়ে। হিন্দি ছবির দুনিয়ায় এক চিরকালীন ‘সেনসেশন’। অসময়ের কুয়াশায় হারিয়ে যাওয়া এক তারার নাম পরভিন বাবি। তার জন্য দুটো শব্দ ভীষণ ব্যবহার করা হত। বোল্ড’ আর ‘বিউটিফুল’। কিন্তু মাত্র এই দুটি শব্দে তাঁর সম্পর্কে সবটা বলা হয়ে যায় না।
তাঁকে বলা হত ‘হাংরি স্পঞ্জ’। যে কোনও বিষয়ে প্রচন্ড জানার ইচ্ছে। অদম্য কৌতুহলের জন্য বন্ধুমহলে এমন লবজ চালু ছিল তাঁর জন্য। এই খিদেই তাঁকে ছোট্ট শহর থেকে করে তুলেছিল গ্ল্যামার দুনিয়ার সেরা সুন্দরী। চারপাশে যাই দেখতেন তাই থেকেই শেখার চেষ্টা করতেন। সে কথা হোক বা দৃশ্য। সব থেকেই নিংড়ে নিতেন জানা।
বলিউডের গ্ল্যামার আর বোহেমিয়ান মনের অন্তরালে থাকত অচেনা থেকে গিয়েছেন এই পরভিন। অসুখ হয়ে দাঁড়িয়েছিল অবসাদ। বিষাদ তাঁকে ফুরিয়ে দিয়েছিল। ২০০৫ সালের ২০ জানুয়ারী দূরতম পথে রওনা হয়েছিলেন পরভিন। ভারতীয় সিনেমায় এক আলোকিত নক্ষত্র হয়েই থেকে যাবেন চিরকাল।