নক্ষত্রকন্যা কল্পনা

“মহাকাশ থেকে পৃথিবীকে প্রথম দেখার অনুভূতি ঠিক ম্যাজিকের মতো। খুব ছোট্ট দেখায় কিন্তু অসম্ভব শক্তিশালী। আমাকে ভীষণভাবে প্রভাবিত করে।সেই অনুভূতি থেকে কিছুতেই বেরতে পারিনা। এতটুকু একটা গ্রহ, অজস্র জীবনের বাঁধনে বাঁধা। কী প্রাণবন্ত! কী পবিত্র”

মহাকাশ থেকে পৃথিবী দেখার সময় ঠিক কী মনে হত তা এভাবেই বলছিলেন তিনি। এক স্বপ্নাচারী মানবী। যাঁর স্বপ্নে-জাগরণে ছিল মহাকাশ।

স্বপ্ন আকাশ ছোঁয়ার। দূর থেকে দূরে উড়ে যাওয়ার। মাটি থেকে অনেকটা উপরে। আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্নই করে তুলেছিল তাঁকে অনন্যা। শুধু নিজে স্বপ্ন দেখেননি। স্বপ্ন দেখতে শিখিয়েছিলেন গোটা পৃথিবীকে। তাই সাধারণ হয়েও তিনি নক্ষত্র মানবী। কল্পনা চাওলাভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রথম মহিলা মহাকাশচারী

 

Kalpana1

 

জীবন শুরু হয়েছিল হরিয়ানার কার্নালে। ছোটবেলা থেকে অসাধারণ মেধাবী। সবেতেই তুখোড়। ক্লাসে ‘টপার’। এছাড়া ক্যারাটে, সাইক্লিং এমনকি সাহিত্যতেও আগ্রহ কম নয়। ছুঁয়ে দিলেই সেরা। অ্যারোনটিক্যাল এঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে বিদেশে পাড়ি। ধাপে ধাপে নাসা। নিজের স্বপ্নের অনেকটা কাছাকাছি।

১৯৯৭ সালে প্রথম মহাকাশ অভিযান। মিশন বিশেষজ্ঞ এবং রোবোটিক আর্ম অপারেটর হিসাবে ১৯৯৭ সালে স্পেস শাটল কলম্বিয়াতে যাত্রা করেছিলেন। ৩৭২ ঘন্টা সৌর সীমানায় কাটিয়েছিলেন। সফল পরিভ্রমণের পর ফিরে আসেন পৃথিবীর মাটিতে।

স্পেস শাটল কলম্বিয়া-ফ্লাইট পোস্টের কাজ শেষ হওয়ার পর, কল্পনা চাওলাকে মহাকাশচারী কার্যালয়ে প্রযুক্তিগত পদে স্থান দেওয়া হয়েছিল স্পেস স্টেশনে কাজের জন্য। ২০০৩-এ ফের যাত্রা। এবার সঙ্গী আরও সাত মহাকাশচারী।এবার সফল অভিযান।

 

Kalpana2

কিন্তু পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করেই ভেঙে পড়ল মহাকাশযান। কল্পনা আর তাঁর ছয় সঙ্গী মুহূর্তে শেষ। মহাকাশযানের ধংসাবশেষ ও যাত্রীদের দেহাবশেষ পাওয়া গিয়েছিল টেক্সাসে

হাজার চোখে এঁকে দেওয়া উড়ানের স্বপ্নগুলো আজও অমলিন...অনেক কল্পনার দৃষ্টিতে... কল্পনা চাওলাকে ভুলতে পারেনি ভারত। ভুলতে পারিনি বিশ্ববাসী। এয়রোস্পেস সংস্থা নর্থরোপ গ্রুমেন কর্পোরেশন তাদের সিগনেস স্পেসক্রাফ্ট-এর নাম রেখেছে কল্পনার নামানুসারে।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...