কেকে। কলকাতা। কান্না।
এই তিন শব্দ মিশে গিয়েছে মে মাসের শেষ দিনটার গায়ে। ক্যালেন্ডারের পাতায় ৩১ মে এলেই একই রকম আবেগ ভর করে এই শহরের মনে।
আজকের দিনেই গান গাইতে গাইতে দুনিয়াকে ‘আলবিদা’ জানিয়েছিলেন কেকে, কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ। দ্য কিং অফ মেলোডি।
২০২২ সালের ৩১ মে নজরুল মঞ্চে উল্টোডাঙার গুরুদাস মহাবিদ্যালয়ের গানের অনুষ্ঠান করছিলেন তিনি। হঠাৎই আকস্মিক অসুস্থটায় থেমে যায় তাঁর গান। হাওয়ার বেগে ছড়িয়ে পড়ে খবর- ‘কেকে আর নেই’।প্ৰিয় গায়কের এমন অবিশ্বাস্য মৃত্যুতে শোকে ডুবে গিয়েছিল কলকাতা। মুহ্যমান গোটা দেশ। যেন বিশ্বাসই হয় না এমনটা ঘটতে পারে!বয়স মাত্র ৫৩!
কেকে’র ক্ষত কলকাতা ভুলতে পারিনি। তাঁর গানে গানে তাঁকে খুঁজে ফেরে শ্রোতারা। তিন দশক ধরে গানের দুনিয়ায় মেলোডি কিং ছিলেন তিনি। বিদায় নিয়েছিলেন রাজার মতোই। সন্ধ্যের সফর হোক কিংবা বৃষ্টি ভেজা দিনে প্লে লিস্টে তিনি থাকবেনই। শ্রোতাদের বিচারে কেকে’র সেরা গানের লিস্ট রইল এই নিবন্ধে
আশিয়ানা (ইকবাল)- ইকবাল ছবির এই গান সেলিম মার্চেন্টের গলাতেও শোনা যায়। কিন্তু কেকের গলার মেলোডি বিশেষ মন ছুঁয়েছিল শ্রোতাদের।
ইঁয়ারো (পল)- ইঁয়ারো দোস্তি… বড়ে হি হাসিন হ্যায় এই গান আর কেকে এক হয়ে গিয়েছেন। স্কুল, কলেজ, ফেস্ট হোক বা বন্ধুত্বের স্মৃতি কেকের এই গান ছাড়া সব রিইউনিয়ন অসম্পূর্ণ থেকে যায়।
তড়াপ তড়াপ ( হাম দিল দে চুকে সনম)- সঞ্জয় লীলা বনসালীর ‘হাম দিল দে চুকে সনম’ ছবিতে সলমন খানের লিপে প্ল্যেব্যাক করেছিলেন কেকে। বিরহের এই গানে মন জিতে নিয়েছিলেন তামাম দেশবাসীর।
তু আশিকি হ্যায় (ঝঙ্কার বিটস)- ‘টু হ্যায় আশমা, ম্যায় তেরি ইয়ে জমিন’ নব্বই দশকের সিগনেচার সং।
সচ ক্যায় রাহা হু ( রেহনা হ্যায় তেরি দিল মে)- দিয়া মির্জা আর আর মাধবন অভিনীত ‘রেহনা হ্যায় তেরি দিল মে’ ছবির সবচেয়ে জনপ্রিয় গান সচ ক্যায় রাহা হু। আজও পাগল করে শ্রোতাদের। সিনেমার বয়স বেড়েছে কিন্তু একই আছে গানের আবেদন।
তুহি মেরি সব হ্যায় ( গ্যাংস্টার)- কঙ্গনা রানাওয়াত, ইমরান হাসমি জুটির ‘গ্যাংস্টার’ ছবির অন্যতম জনপ্রিয় গান। গান যেমন হিট করেছিল ‘ভার্সেটাইল আর্টিস্ট’ হিসেবে কেকে’র পায়ের তলার জমি শক্ত হয় এই গান দিয়েই।
আঁখো মে তেরি (ওম শান্তি ওম)- ‘ওম শান্তি ওম’ ছবির গান দীপিকা ও শাহরুখ জুটির অলটাইম বেস্ট হিট লিস্টে একেবারে ওপরের দিকে থাকবে। জাভেদ আখতারের কথায় কেকের গলায় লাভ অ্যাট ফার্স্ট সাইট প্রেমের আবেগ বোঝাতে এ গান চির নতুন।
তু জো মিলা (বজরঙ্গী ভাইজান)- তু জো মিলা চিরকালীন বন্ধুত্বের গান বলে। এই বন্ধুত্ব বয়স মানে না। কিন্তু বন্ধু বা ঠিক মানুষের হাত ধরলে লক্ষ্য যতই কঠিনই হোক তা পূরণ করা সম্ভব হবে।
আভি আভি (জিসম ২)– ২০১২ সালে মুক্তি পাওয়া জিসম-২ ছবির এই গানে দেখা গিয়েছিল সানি লিওন, রণদীপ হুডা, অরুণোদয় সিংকে।
প্যার কে পল (পল)- ‘পল’ অ্যালবামের এই গান কে ভুলতে পেরেছে! এ গানই ছিল শেষ স্টেজ পারফরমেন্সে তাঁর গাওয়া শেষ গান!
প্রয়াত হওয়ার কিছু দিন আগেই একটি গান রেকর্ড করেছিলেন কেকে। সেটাই তাঁর শেষ রেকর্ড করা গান। সেই গানই এ বার মুক্তি পেতে চলেছে। অনিল কপূর অভিনীত ছবি ‘সাভি’-তে শেষ গান গেয়েছিলেন কেকে।
২৬ বছরের কেরিয়ারে অজস্র গানে, অসম্ভব ভালবাসায় জেগে আছেন কেকে। হৃদয়ের কথা এমন উজাড় করে আবেগে তাঁর মতো করে কে আর গাইতে পেরেছে!