“…..সবেমাত্র পাঁচ বৎসর বয়স হইতে আমাকে স্ত্রীলোকেদের হইতেও পর্দা করিতে হইত। ছাই কিছুই বুঝিতাম না যে, কেন কাহারও সম্মুখে যাইতে নাই; অথচ পর্দা করিতে হইত। ........ মেয়েমানুষের অবাধ গতি- অথচ তাহাদের দেখিতে না দেখিতে লুকাইতে হইবে। পাড়ার স্ত্রীলোকেরা হঠাৎ বেড়াইতে আসিত; অমনি বাড়ির কোনো লোক চক্ষুর ইশারা করিত, আমি যেন প্রাণভয়ে যত্রতত্র কখনও রান্নাঘরের ঝাঁপের অন্তরালে, কখনও কোনো চাকরানির গোল করিয়া জড়াইয়া রাখা পাটির অভ্যন্তরে, কখনও তক্তাপোষের নীচে লুকাইতাম”।
সেকালে রক্ষণশীল মুসলমান পরিবারে পুরুষ তো দূরস্থান, পরিবারের বাইরের মেয়েরাও অবিবাহিতা মেয়েদের মুখ দেখতে পারত না। এই দুর্বিষহ ঘটনার বর্ণনা আছে রোকেয়ার ' অবরোধবাসিনী’তে।
পর্দাপ্রথার আর এক কাহিনি শোনা যাক। এও রোকেয়ার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা। “আমার পঞ্চম বর্ষ বয়সে কলিকাতা থাকাকালীন আমার দ্বিতীয়া ভ্রাতৃবধূর খালার বাড়ি- বেহার হইতে দুইজন চাকরানি তাঁহাকে দেখিতে আসিয়াছিল।…. তাহারা সমস্ত বাড়িময় ঘুরিয়া বেড়াইত, আর আমি প্রাণভয়ে পলায়মান হরিণ শিশুর মতো প্রাণ হাতে লইয়া যত্র-তত্র কপালের অন্তরালে কিংবা টেবিলের নীচে পলাইয়া বেড়াইতাম। ত্রিতলে একটা নির্জন চিল-কোঠা ছিল; অতি প্রত্যুষে আমাকে খেলাই(আয়া) কোলে করিয়া সেইখানে রাখিয়া আসিত; প্রায় সমস্ত দিন সেইখানে অনাহারে কাটাইতাম।
বেহারের চাকরানিদ্বয় সমস্ত বাড়ি তন্নতন্ন করিয়া খুঁজিবার পর অবশেষে সেই চিলেকোঠারও সন্ধান পাইল। আমার সমবয়সি এক ভগিনী-পুত্র, হালু দৌড়াইয়া গিয়া আমাকে এই বিপদের সংবাদ দিল। ভাগ্যে সেখানে একটা ছাপরখাট ছিল; আমি সেই ছাপরখাটের নীচে গিয়া নিঃশ্বাস বন্ধ করিয়া রহিলাম- ভয় পাছে আমার নিঃশ্বাসের সাড়া পাইয়া সেই হৃদয়হীনা স্ত্রীলোকেরা খাটের নীচে উঁকি মারিয়া দেখে! সেখানে কতকগুলি বাক্স, পেটারা, মোড়া ইত্যাদি ছিল। বেচারা হালু, তাহার ৬ বৎসর বয়সের ক্ষুদ্র শক্তি লইয়া সেইগুলি টানিয়া টানিয়া আমার চারিধারে দিয়া আমাকে ঘিরিয়া রাখিল। আমার খাওয়ার খোঁজখবরও কেহ নিয়মমতো লইত না। মাঝে মাঝে হালু খেলিতে খেলিতে চিল-কোঠায় গিয়া উপস্থিত হইলে, তাহাকেই ক্ষুধাতৃষ্ণার কথা বলিতাম। সে কখনও এক গ্লাস পানি, কখনও খানিকটা 'বিন্নি’(খই বিশেষ) আনিয়া দিত।…………. প্রায় চারিদিন আমাকে ওই অবস্থায় থাকিতে হইয়াছিল”।
“মুসলমান নারীদের কল্যাণের জন্য আপনি যে অক্লান্ত সাধনা করিতেছেন, বিধাতা করুন তাহা জয়যুক্ত হোক”।
১৮৮০ সালে বর্তমান বাংলাদেশের রংপুর জেলা শহরের দক্ষিণে মিঠাপুকুর থানার পায়রাবন্দ গ্রামে এক জমিদার বংশের রোকেয়ার জন্ম হয়। তাঁর পিতা জহিবুদ্দিন মোহাম্মদ আবু আলি হায়দার সাবেরের প্রথমা স্ত্রীর চতুর্থ সন্তান ছিলেন রোকেয়া। তাঁর পরিবার ছিল অত্যন্ত বিত্তশালী।
“আমাদের এই অরণ্যবেষ্টিত বাড়ির তুলনা কোথায়? সাড়ে তিনশত বিঘা লাখেরাজ জমির মাঝখানে কেবল আমাদের এই সুবৃহৎ বাড়ি”।
এই রক্ষণশীল পরিমন্ডলে রোকেয়ার বাংলা পড়া শুরু হয়েছিল দিদি করিমুন্নিসার আগ্রহে। পরে দাদা ইব্রাহিম সাবেরের উৎসাহে ও সহায়তায় তিনি ইংরেজি পড়তে শেখেন। সেকালে সম্ভ্রান্ত মুসলমান পরিবারে উর্দু ও ফারসি পড়ার চল থাকলেও বাংলা ছিল ব্রাত্য।
রোকেয়ার দুই দাদা ইব্রাহিম ও খলিলুর কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে পড়াশোনা করতেন। কিন্তু মেয়েদের শিক্ষা নিয়ে আবু আলি সাবেরের কোনও আগ্রহ ছিল না। রক্ষণশীল পরিবারে ছিল পর্দাপ্রথার কড়াকড়ি। মেয়েদের পড়াশোনা বলতে ছিল কোরান পাঠ। তাও বেশির ভাগ না বুঝে আওড়ানো মাত্র।
১৮৯৬ খ্রিস্টাব্দে ভাগলপুর নিবাসী ৩৮ বছরের সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে ষোলো বছরের রোকেয়ার বিবাহ হয়। বিপত্নীক ও এক কন্যার পিতা সাখাওয়াত রোকেয়ার বিদ্যার্জনের বিশেষ সহায়ক ছিলেন। রোকেয়া কখনও বিদ্যালয়ে শিক্ষাগ্রহণ করার সুযোগ পাননি। “কেবল জ্যেষ্ঠ ভ্রাতার কল্যাণে যৎসামান্য লেখাপড়া শিখিয়াছি”। অথচ তিনিই কিনা মেয়েদের স্কুলের জন্য জীবন উৎসর্গ করে দিয়েছিলেন।
দাদা ইব্রাহিম সাবেরের আগ্রহাতিশয্যেই সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে রোকেয়ার বিবাহ হয়। সাখাওয়াতের শিক্ষিত ও পরিমার্জিত মনন রোকেয়াকে সতত উৎসাহিত করেছিল। তাঁর কাছে রোকেয়ার ইংরেজি শিক্ষা পরিণত রূপ পায়। সাখাওয়াত হোসেন ১৮৭৮ সালে হুগলি মহসিন কলেজ থেকে বিএ পাস করে বিলেতে গিয়ে কৃষিবিদ্যায় উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন।
যদিও নিজের জীবনকথা বলতে গিয়ে রোকেয়ার কন্ঠে আক্ষেপ ঝরে পড়েছে, “শৈশবে বাপের আদর পাইনি, বিবাহিত জীবনে কেবল স্বামীর রোগের সেবা করেছি।….পথ্য রেঁধেছি, ডাক্তারকে চিঠি লিখেছি। দু’বার মা হয়েছিলাম- তাদেরও প্রাণভরে কোলে নিতে পারিনি। একজন ৫ মাস বয়সে, অপরটি ৪ মাস বয়সে চলে গেছে”।
ব্যক্তিগত জীবনের এই যন্ত্রণা বুকে চেপে নিজেকে নারীশিক্ষার কাজে সমর্পিত করেছিলেন রোকেয়া। তাঁর চিন্তাধারার বিস্ময়কর নিজস্বতা ধরা আছে তাঁর লেখালেখিতে।১৯০২ খ্রিস্টাব্দ থেকে নানা পত্রিকায় রোকেয়ার প্রবন্ধ প্রকাশিত হতে থাকে। পিপাসা, অলংকার না Badge of Slavery, নিরীহ বাঙ্গালী, বোরকা, আমাদের অবনতি ইত্যাদি প্রবন্ধ নিয়ে প্রকাশিত ‘মতিচুর' ( প্রথম খন্ড)- এর সমালোচনা করতে গিয়ে দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার লিখেছিলেন, “…..সমাজের মঙ্গল উদ্দেশ্যে তিনি যে সকল ক্ষতচিহ্ন দেখাইয়া সমাজ সংস্কারে সকলকে আহ্বান করিয়াছেন, সে সমস্তের উপযুক্ত সংস্কার হউক”।
রোকেয়া তাঁর লেখালেখির শুরু থেকেই সমালোচকের তীক্ষ্ম দৃষ্টি, যুক্তিবাদী মন ও তীব্র ভাষা নিয়ে আবির্ভূত হয়েছিলেন। সেই সময়ের মুসলমান সমাজের নারীশিক্ষা ও নারীজাতির অমর্যাদা ও অবহেলা বিষয়ে রোকেয়ার লেখনী গর্জে উঠেছিল- “……….যদিও ইসলাম ধর্ম কন্যাদের শারীরিক হত্যা নিবারণ করিয়াছে তথাপি মুসলমানগণ অম্লানবদনে কন্যাদের মন, মস্তিষ্ক এবং বুদ্ধিবৃত্তি অবাধে বধ করিতেছেন”। অনায়াসে লিখেছিলেন তেজস্বিনী- “মুসলমানদের যাবতীয় দৈন্য দুর্দশার একমাত্র কারণ স্ত্রী শিক্ষার ঔদাস্য”।
স্ত্রী শিক্ষার অভাবের পাশাপাশি মুসলমান সমাজে ছিল ইংরেজি শিক্ষার প্রতি বিমুখতা। সেই পরিবেশে রোকেয়া স্পষ্ট ভাষায় ' স্ত্রীশিক্ষার’ সমস্যার কথা তুলে ধরেছিলেন। “.... সামান্য শিক্ষাপ্রাপ্তা মহিলা দোষ না করিলেও সমাজ কোনো কল্পিত দোষ শতগুণ বাড়াইয়া সে বেচারীর ঐ ‘শিক্ষার’ ঘাড়ে চাপাইয়া দেয় এবং শত কন্ঠে সমস্বরে বলিতে থাকে ' স্ত্রীশিক্ষাকে নমস্কার’।” মেয়েদের উন্নতির জন্য তাই তাদেরই এগিয়ে আসতে হবে বলে রোকেয়া বিশ্বাস করতেন। "…..আমাদের অবস্থা আমরা চিন্তা না করিলে আর কেহ আমাদের জন্য ভাবিবে না”।
রোকেয়া বলেছিলেন, মেয়েদের আত্মবিশ্বাসী হয়ে বিশ্বাস করতে হবে যে নারীজাতি 'গোলামজাতি’ নয়। পুরুষের সমান হবার জন্য নারীদের সব রকম চেষ্টা করতে হবে। কী অপরিসীম সাহসে তিনি উচ্চারণ করেছিলেন, “যে পরিশ্রম আমরা স্বামীর গৃহকার্যে ব্যয় করি, সেই পরিশ্রম দ্বারা কি স্বাধীন ব্যবসায় করিতে পারিব না”? মনে করিয়ে দিয়েছেন, “আমরা আমাদের বুদ্ধিবৃত্তির অনুশীলন করি না বলিয়া তাহার হীনতেজ হইয়াছে।…..এখন একবার জ্ঞানচর্চা করিয়া দেখি ত এ অনুর্বর মস্তিষ্ক (dull head) সুতীক্ষ্ণ হয় কি না”।
শুধু কথায় নয়, রোকেয়া বিশ্বাস করতেন কাজে। তাই মেয়েদেরই তিনি অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে আহ্বান করেছেন-“জাগিয়া উঠা সহজ নহে জানি; সমাজ মহা গোলযোগ বানাবে জানি, ভারতবাসী মুসলমান আমাদের জন্য ‘কৎল’ এর( অর্থাৎ প্রাণদন্ডের) বিধান দিবেন এবং হিন্দু চিতানল বা তুষানলের ব্যবস্থা দিবেন জানি। (এবং ভগিনীদেরও জাগিবার ইচ্ছা নাই জানি) কিন্তু সমাজের কল্যাণের নিমিত্ত জাগিতে হইবেই”। এই জেগে ওঠার হাতিয়ার হিসেবেই শিক্ষাকে দেখেছেন রোকেয়া। মনে করিয়ে দিয়েছেন, রসুল মকবুল(অর্থাৎ পয়গাম্বর সাহেব) "....আদেশ করিয়াছেন যে, শিক্ষা লাভ করা সমস্ত নর-নারীর অবশ্য কর্তব্য"। কিন্তু মুসলমান সমাজ তা পালন করেনি।
এই চিন্তা থেকেই জন্ম হয় সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুলের। দীর্ঘ রোগভোগের পর ১৯০৯ সালের মে মাসের ৩ তারিখে কলকাতায় মৃত্যু হল সাখাওয়াত হোসেনের। ভাগলপুরে হল শেষকৃত্য। রোকেয়ার বয়স তখন মাত্র উনত্রিশ। নারীশিক্ষার প্রতি রোকেয়ার সুগভীর আগ্রহ থাকায় সাখাওয়াত তাঁকে মেয়েদের জন্য একটি স্কুল করতে বলেছিলেন। এই কাজের জন্য তিনি দশ হাজার টাকাও রেখে গিয়েছিলেন। স্বামীর মৃত্যুর কয়েক মাস পরে রোকেয়া ভাগলপুরে পাঁচ জন ছাত্রী নিয়ে একটি স্কুল শুরু করলেন। কিন্তু পারিবারিক অশান্তির জন্য তাঁকে ভাগলপুর ত্যাগ করে চলে আসতে হল কলকাতায়।
১৯১১ সালের ১৬ ই মার্চ আট জন ছাত্রী নিয়ে কলকাতায় শুরু হল সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুলের পথচলা। স্থান- ১৩ নম্বর ওয়ালিউল্লাহ লেন। ক্রমশ বাড়তে লাগল ছাত্রীসংখ্যা। স্কুলের বাড়িও বদলে বদলে গেল। যে রোকেয়া বাংলা ভাষাকে নিজের ভাষা মনে করতেন তাঁর স্কুলেও প্রথম দিকে শিক্ষার মাধ্যম ছিল উর্দু। স্কুলে পড়ার জন্য কোনো বেতন লাগত না। স্কুলে আসা- যাওয়ার জন্য যে গাড়ির বন্দোবস্ত ছিল তার জন্যও ভাড়া লাগত না। বেথুন স্কুলে হিন্দু ছাড়া কারোর প্রবেশাধিকার ছিল না। কিন্তু সাখাওয়াত মেমোরিয়ালের দরজা রোকেয়া সব ধর্মের জন্য খোলা রেখেছিলেন। কত যে বাধাবিপত্তি এসেছিল আজ তা কল্পনাও করা যায় না।
“এখনও আমার সম্মুখে আমাদের স্কুলের কয়েকটি ছাত্রীর অভিভাবকের পত্র মজুত আছে-যাহাতে তাঁহারা লিখিয়াছেন যে, তাঁহাদের মেয়েদের যেন সামান্য উর্দু ও কোরান শরীফ পাঠ ছাড়া আর কিছু – বিশেষত ইংরেজি শিক্ষা দেওয়া না হয়”। এমন কি ছাত্রীদের স্বাস্থ্যপরীক্ষার পর বাড়িতে চিঠি গেলে বিরক্ত অভিভাবকদের অনেকে চিঠি দিয়েছিলেন, “আঁখ কমজোর, দাঁত কমজোর………ইয়ে সব বোলনে সে হমারি লড়কি কো শাদি ক্যায়সে হোগা”? এসবকে তুচ্ছ করতে পেরেছিলেন রোকেয়া।
নিজে বাড়ি বাড়ি ঘুরে ছাত্রী সংগ্রহ করতেন, সেখানে অভিভাবকদের প্রথম প্রশ্ন থাকত “পর্দা পালন করা হয় কি না”? রক্ষণশীলদের বাধা ছিল সর্বতোভাবে। এমন কি এরকমও বলা হয়েছিল, “যুবতী বিধবা স্কুল স্থাপন করিয়া নিজের রূপ ও যৌবনের বিজ্ঞাপন প্রচার করিতেছেন”। এসব বিরোধিতা সত্ত্বেও ১৯১৫ সালে উচ্চ প্রাথমিক এবং ১৯২৭ সালে উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয়ে পরিণত হল সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল। ১৯৩১ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষায় তিনজন ছাত্রী উত্তীর্ণ হল। সব প্রতিবন্ধকতাকে অগ্রাহ্য করে ১৯২৭ সাল থেকে বাংলা পড়ানো শুরু করেছিলেন রোকেয়া। আজীবন এই স্কুলের সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন তিনি। কিন্তু সামান্যতম বেতনও নেননি কখনও।
শুধু স্কুল গড়ে তোলা নয়, মেয়েদের স্বাবলম্বী করে তোলার দিকে নজর ছিল তাঁর। তাই ১৯১৬ সালে গড়ে তুললেন ' আঞ্জুমান খাওয়াতীনে ইসলাম’ নামে নারী কল্যাণ সমিতি। মেয়েদের কথাই শুধু ভেবেছেন তিনি এমন নয়। দেশের অগণিত দরিদ্র মানুষ এবং স্বাধীনতাসংগ্রামীদের কথাও তিনি হৃদয় দিয়ে ভাবতেন।‘চাষার দুক্ষু’, ' এন্ডিশিল্প’ ইত্যাদি প্রবন্ধে, ' নিরূপম বীর’ কবিতায় রোকেয়ার সংবেদনশীলতা প্রকাশিত হয়েছে। 'সওগাত' পত্রিকা প্রকাশে তিনি প্রবল উৎসাহিত ছিলেন কিন্তু মহিলা সংখ্যায় নিজের ছবি দিতে রাজি হননি। তাহলে তাঁর স্কুলে সমস্যা হতে পারে যে!
আজও যে দেশে উচ্চশিক্ষিতা নারীকে পরিবারের দোহাই দিয়ে গৃহবন্দি করে রাখা হয়, সে দেশে একশো বছরেরও বেশি আগে যে রমণী উচ্চকিত কন্ঠে বলেছিলেন, “কন্যাগুলিকে সুশিক্ষিতা করিয়া কার্যক্ষেত্রে ছাড়িয়া দাও, নিজের অন্নবস্ত্র উপার্জন করুক” তিনি যে সময়ের থেকে অনেক এগিয়ে ছিলেন তা অনুভব করা যায়। পিতৃতান্ত্রিকতাকে ধিক্কার দিয়ে তিনি বলতে পেরেছিলেন, “তোমাদের ‘ঘর করা' ছাড়া আমাদের আরও পথ আছে”।