সরকারি জমিতে উদ্বাস্তু কলোনির মালিকানা

দেশভাগের ফলে প্রচুর মানুষ ভিটেমাটি খুইয়েছিলেন। নিজেদের জায়গা ছেড়ে চলে আসতে হয়েছিল একদম অচেনা অজানা এক জায়গায়। কলকাতায় বহু মানুষ এরকমভাবে চলে এসেছিলেন এবং উদ্বাস্তু হয়ে পরবর্তীতে থেকে গেছেন। বিভিন্ন কলোনি তৈরী করে তারা বসবাস  করছেন এখানে, কিন্তু তাদের নিজেদের জমির স্বত্ত্ব নেই। উদ্বাস্তুদের সুবিধার্থে কিছু ব্যবস্থা নেবেন মুখ্যমন্ত্রী-এমনটা শোনা যাচ্ছিল কিছুদিন আগে থেকেই। বুধবার অর্থাৎ ৯জানুয়ারি রানাঘাটের ছাতিমতলায় নদীয়া জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের প্রধান সচিব মনোজ পন্থের কাছে মুখ্যমন্ত্রী জানতে চান, সরকারি জমিতে কত উদ্বাস্তু কলোনী রয়েছে, তার কোনো সমীক্ষা করা হয়েছে কি না। তার পরেই তাঁর উল্লেখযোগ্য ঘোষণায় সকলেই আপ্লুত হয়ে ওঠেন। তা হল- সমস্ত উদ্বাস্তু কলোনিগুলিকে চিহ্নিত করে সেগুলির বৈধতা দেবে প্রশাসন। তিনি যে উদ্বাস্তুদের জন্য যথেষ্ট আন্তরিক, তা তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন।

     রেল সহ কেন্দ্রীয় যে সমস্ত সংস্থার জমিতে উদ্বাস্তু কলোনি গড়ে উঠেছে, সেখানকার জমির স্বত্বও বাসিন্দাদের দেওয়ার দাবি জানিয়ে ইতিমধ্যেই দিল্লিকে চিঠি পাঠিয়েছে রাজ্য। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ৮০-৮৫টি বিধানসভা কেন্দ্রে এই উদ্বাস্তুরা বাস করেন। সংখ্যা প্রায় দু'কোটি। রাজ্য সরকারের স্বীকৃত উদ্বাস্তু কলোনি রয়েছে ২২২৩টি। এছাড়াও কেন্দ্রের অধীনস্থ রেল, বন্দর কর্তৃপক্ষ সহ বিভিন্ন দফতরের জমিতে আরও ১৭০০ এরকম উদ্বাস্তু কলোনি রয়েছে। বিভিন্ন দফতরের অধীনে থাকা জমিতে যে সব কলোনি আছে, তা ভূমি দফতরের আওতায় হস্তান্তরিত করে বিলি করতে হবে। এদিনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্য দফতরের 'জীবন শক্তি' নামের একটি আপের উদ্বোধন করেন। এই আপের মাধ্যমে ব্লাড ব্যাংকে থাকা মজুত রক্তের তথ্য পাওয়া যাবে। বলাই যায়, এই ব্যবস্থার মাধ্যমে রাজ্য সরকার প্রচুর উদ্বাস্তুদের মন জয় করে নিলেন এবং অবশ্যই তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই সুনিশ্চিত করে দিলেন।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...